রান্নাঘর আমাদের সকলেরই খুব প্রিয় একটা জায়গা – যেখানে তৈরি হয় মজার মজার সব খাবার। দিনের পর দিন একই ধরনের খাবার খেতে কার ভালো লাগে বলুন তো? তাই একটু ভিন্নতা আনতে, অথবা হঠাৎ করে কিছু স্পেশাল খেতে ইচ্ছে করলে আমরা সাধারণত রেস্টুরেন্টের দিকেই ছুটি। কিন্তু সবসময় বাইরে গিয়ে খাওয়া কি সম্ভব? পকেটের ওপরও তো একটা চাপ পড়ে, তাই না?
তাহলে উপায়? উপায় হলো, ঘরেই তৈরি করে নেয়া রেস্টুরেন্ট স্টাইলের কিছু স্পেশাল ডিশ! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। আজকের ব্লগ পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিছু অসাধারণ ঘরোয়া রান্নার রেসিপি (Ghoroa Rannar Recipe), যা আপনার রান্নাঘরের স্বাদকে পাল্টে দেবে এবং আপনার পরিবারকে দেবে নতুন এক culinary অভিজ্ঞতা।
ঘরোয়া রান্নার জাদু: সহজ রেসিপি, দারুণ স্বাদ!
আমরা বাঙালিরা ভোজনরসিক। আর আমাদের খাদ্য তালিকায় একটু ভিন্নতা না থাকলে কি চলে? তাই আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি এমন কিছু রেসিপি, যা তৈরি করা যেমন সহজ, তেমনি স্বাদেও অতুলনীয়। এই রেসিপিগুলো আপনার রান্নাঘরের দৈনন্দিন মেনুকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
ডিমের কিছু সহজ কিন্তু স্পেশাল রেসিপি
ডিম আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ডিম দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করা যায় নানান ধরনের সুস্বাদু খাবার।
ডিমের কোরমা:
ডিমের কোরমা একটি ক্লাসিক মুঘলাই ডিশ, যা সাধারণত পোলাও বা পরোটার সাথে পরিবেশন করা হয়।
উপকরণ:
- ডিম – ৬টি (সেদ্ধ করে খোসা ছাড়ানো)
- পেঁয়াজ কুচি – ১ কাপ
- আদা বাটা – ১ চামচ
- রসুন বাটা – ১ চামচ
- পেঁয়াজ বাটা – ২ চামচ
- টক দই – ২ চামচ
- কাজুবাদাম বাটা – ১ চামচ
- পোস্ত বাটা – ১ চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- মরিচ গুঁড়ো – ১/২ চামচ (স্বাদমতো)
- গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- কেওড়া জল – ১ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- তেল – পরিমাণমতো
- ধনে পাতা – সামান্য (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
- প্রথমে ডিমগুলো সেদ্ধ করে সামান্য হলুদ ও নুন দিয়ে ভেজে তুলে নিন।
- এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- আদা, রসুন ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
- টক দই, হলুদ, মরিচ এবং নুন দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মসলা কষাতে থাকুন।
- কাজুবাদাম ও পোস্ত বাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প জল দিন।
- মসলা ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে ডিমগুলো দিয়ে দিন এবং হালকা আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন, যাতে ডিমের মধ্যে মসলা ঢোকে।
- গরম মশলা গুঁড়ো এবং কেওড়া জল দিয়ে মিশিয়ে ৫ মিনিটের জন্য ঢেকে দিন।
- ধনে পাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ডিমের কোরমা।
ডিমের শাহী টোস্ট:
ডিমের শাহী টোস্ট একটি মুখরোচক ও আকর্ষণীয় ব্রেকফাস্ট রেসিপি।
উপকরণ:
- ডিম – ২টি
- পাউরুটি – ৪টি
- দুধ – ১/২ কাপ
- চিনি – ২ চামচ
- এলাচ গুঁড়ো – ১/৪ চামচ
- জাফরান – সামান্য (দুধে ভেজানো)
- ঘি/মাখন – ভাজার জন্য
- বাদাম কুচি – সাজানোর জন্য
- কিসমিস – সাজানোর জন্য
প্রস্তুত প্রণালী:
- ডিম, দুধ, চিনি, এলাচ গুঁড়ো এবং জাফরান একসাথে মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন।
- পাউরুটিগুলো ডিমের মধ্যে ডুবিয়ে দিন, যাতে পাউরুটি ডিমের মিশ্রণ ভালোভাবে শুষে নেয়।
- প্যানে ঘি বা মাখন গরম করে ডিমের মধ্যে ভেজানো পাউরুটিগুলো সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- ভাজা হয়ে গেলে উপরে বাদাম কুচি ও কিসমিস দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ডিমের শাহী টোস্ট।
মাংসের কিছু জিভে জল আনা রেসিপি
মাংস পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই মাংস দিয়ে তৈরি কয়েকটি অসাধারণ রেসিপি এখানে দেওয়া হলো:
চিকেন টিক্কা মাসালা:
চিকেন টিক্কা মাসালা একটি জনপ্রিয় ভারতীয় ডিশ, যা বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
উপকরণ:
- চিকেন – ৫০০ গ্রাম (ছোট টুকরা করা)
- টক দই – ১/২ কাপ
- আদা বাটা – ১ চামচ
- রসুন বাটা – ১ চামচ
- পেঁয়াজ বাটা – ২ চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- মরিচ গুঁড়ো – ১ চামচ (স্বাদমতো)
- ধনে গুঁড়ো – ১ চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১ চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- কাসুরি মেথি – ১ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- তেল – পরিমাণমতো
- ফ্রেশ ক্রিম – ২ চামচ (সাজানোর জন্য)
- ধনে পাতা – সামান্য (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
- চিকেনের টুকরাগুলোর সাথে টক দই, আদা, রসুন, হলুদ, মরিচ, ধনে, জিরা, গরম মশলা এবং নুন মিশিয়ে ম্যারিনেট করে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা অথবা সারারাত ফ্রিজে রেখে দিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে ম্যারিনেট করা চিকেনগুলো সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- ভাজা চিকেনগুলো তুলে একটি পাত্রে সরিয়ে রাখুন।
- এবার কড়াইয়ে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে হালকা সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- কাসুরি মেথি দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে সামান্য জল দিয়ে মসলা কষাতে থাকুন।
- ভাজা চিকেনগুলো মসলার সাথে মিশিয়ে অল্প আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন, যাতে মসলা ভালোভাবে চিকেনের সাথে মিশে যায়।
- ফ্রেশ ক্রিম এবং ধনে পাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন সুস্বাদু চিকেন টিক্কা মাসালা।
বিফ রেজালা:
বিফ রেজালা একটি ক্লাসিক মুঘলাই ডিশ, যা সাধারণত পোলাও বা পরোটার সাথে পরিবেশন করা হয়।
উপকরণ:
- বিফ (গরুর মাংস) – ৫০০ গ্রাম (ছোট টুকরা করা)
- পেঁয়াজ কুচি – ১ কাপ
- আদা বাটা – ১ চামচ
- রসুন বাটা – ১ চামচ
- পেঁয়াজ বাটা – ২ চামচ
- টক দই – ২ চামচ
- কাজুবাদাম বাটা – ১ চামচ
- পোস্ত বাটা – ১ চামচ
- সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- কেওড়া জল – ১ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- তেল – পরিমাণমতো
- ধনে পাতা – সামান্য (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
- প্রথমে মাংসের টুকরাগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- আদা, রসুন ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
- টক দই, সাদা গোলমরিচ এবং নুন দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মসলা কষাতে থাকুন।
- কাজুবাদাম ও পোস্ত বাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প জল দিন।
- মসলা ভালোভাবে কষানো হয়ে গেলে মাংসের টুকরাগুলো দিয়ে দিন এবং হালকা আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন, যাতে মাংসের মধ্যে মসলা ঢোকে।
- গরম মশলা গুঁড়ো এবং কেওড়া জল দিয়ে মিশিয়ে ২০-২৫ মিনিটের জন্য ঢেকে দিন, যতক্ষণ না মাংস নরম হয়ে যায়।
- ধনে পাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন বিফ রেজালা।
মাছের কিছু অসাধারণ রেসিপি
মাছ আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি অপরিহার্য অংশ। মাছ দিয়ে তৈরি কিছু মজাদার রেসিপি নিচে দেওয়া হলো:
ইলিশ ভাপা:
ইলিশ ভাপা একটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার, যা ইলিশ মাছের স্বাদকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।
উপকরণ:
- ইলিশ মাছ – ৬ টুকরা
- সর্ষের তেল – ৪ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ বাটা – ২ টেবিল চামচ
- সর্ষে বাটা – ২ টেবিল চামচ
- কাঁচা লঙ্কা – ৪-৫টি (স্বাদমতো)
- হলুদ গুঁড়ো – ১ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- কালো জিরা – ১/২ চামচ
প্রস্তুত প্রণালী:
- ইলিশ মাছের টুকরাগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন।
- একটি পাত্রে সর্ষের তেল, পেঁয়াজ বাটা, সর্ষে বাটা, কাঁচা লঙ্কা, হলুদ গুঁড়ো এবং নুন মিশিয়ে একটি মসলার পেস্ট তৈরি করুন।
- মাছের টুকরাগুলো মসলার পেস্ট দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন, যাতে প্রতিটি টুকরার মধ্যে মসলা ঢোকে।
- একটি টিফিন বাটিতে মাছের টুকরাগুলো সাজিয়ে উপরে কালো জিরা ছড়িয়ে দিন।
- টিফিন বাটির মুখ বন্ধ করে একটি বড় পাত্রে জল গরম করে তার মধ্যে টিফিন বাটিটি বসিয়ে ভাপে দিন।
- প্রায় ২০-২৫ মিনিট ভাপে রাখার পর চুলা থেকে নামিয়ে কিছুক্ষণ ঠান্ডা হতে দিন।
- গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন সুস্বাদু ইলিশ ভাপা।
কাতলা মাছের দোপেঁয়াজা:
কাতলা মাছের দোপেঁয়াজা একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় মাছের পদ।
উপকরণ:
- কাতলা মাছ – ৬ টুকরা
- পেঁয়াজ কুচি – ২ কাপ
- আদা বাটা – ১ চামচ
- রসুন বাটা – ১ চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১ চামচ
- মরিচ গুঁড়ো – ১ চামচ (স্বাদমতো)
- ধনে গুঁড়ো – ১ চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- সর্ষের তেল – পরিমাণমতো
- কাঁচা লঙ্কা – ২-৩টি (ফালি করা)
- ধনে পাতা – সামান্য (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
- মাছের টুকরাগুলো ধুয়ে সামান্য নুন ও হলুদ মাখিয়ে হালকা ভেজে নিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- আদা, রসুন বাটা, হলুদ, মরিচ, ধনে ও জিরা গুঁড়ো দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
- সামান্য জল দিয়ে মসলা ভালোভাবে কষিয়ে মাছের টুকরাগুলো দিয়ে দিন।
- কাঁচা লঙ্কা ফালি করে দিন এবং নুন দিয়ে হালকা আঁচে রান্না করুন।
- মাছ নরম হয়ে এলে এবং মসলা ভালোভাবে মিশে গেলে ধনে পাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন কাতলা মাছের দোপেঁয়াজা।
সহজ কিছু স্ন্যাকস রেসিপি
বিকেলে চায়ের সাথে মুখরোচক কিছু স্ন্যাকস হলে মন্দ হয় না। তাই আপনাদের জন্য রইলো কিছু সহজ স্ন্যাকস রেসিপি:
আলু চপ:
আলু চপ একটি জনপ্রিয় এবং মুখরোচক খাবার যা প্রায় সবাই পছন্দ করে।
উপকরণ:
- আলু – ৫০০ গ্রাম (সেদ্ধ করা)
- পেঁয়াজ কুচি – ১/২ কাপ
- কাঁচা লঙ্কা – ২-৩টি (কুচি করা)
- আদা বাটা – ১/২ চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- ধনে পাতা – ২ টেবিল চামচ (কুচি করা)
- নুন – স্বাদমতো
- বেসন – ১ কাপ
- চালের গুঁড়ো – ২ টেবিল চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- মরিচ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- বেকিং সোডা – ১/৪ চামচ
- তেল – ভাজার জন্য
প্রস্তুত প্রণালী:
- সেদ্ধ আলুগুলো ভালোভাবে মেখে নিন।
- আলুর সাথে পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা, আদা, জিরা, ধনে পাতা এবং নুন মিশিয়ে ভালো করে মেখে পুর তৈরি করুন।
- বেসন, চালের গুঁড়ো, হলুদ, মরিচ এবং বেকিং সোডা মিশিয়ে জল দিয়ে ঘন ব্যাটার তৈরি করুন।
- আলুর পুর থেকে ছোট ছোট চপের আকার দিন।
- চপগুলো বেসনের ব্যাটারে ডুবিয়ে গরম তেলে সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার আলু চপ।
পেঁয়াজু:
পেঁয়াজু একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সহজে তৈরি করা যায় এমন একটি স্ন্যাকস।
উপকরণ:
- পেঁয়াজ কুচি – ২ কাপ
- বেসন – ১/২ কাপ
- ডালের গুঁড়ো – ২ টেবিল চামচ
- কাঁচা লঙ্কা – ২-৩টি (কুচি করা)
- আদা বাটা – ১/২ চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- ধনে পাতা – ২ টেবিল চামচ (কুচি করা)
- নুন – স্বাদমতো
- হলুদ গুঁড়ো – ১/৪ চামচ
- তেল – ভাজার জন্য
প্রস্তুত প্রণালী:
- পেঁয়াজ কুচির সাথে বেসন, ডালের গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা, আদা, জিরা, ধনে পাতা, নুন ও হলুদ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন।
- মিশ্রণটি থেকে ছোট ছোট বড়ার আকারে তৈরি করুন।
- গরম তেলে পেঁয়াজুগুলো সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- গরম গরম পরিবেশন করুন মুখরোচক পেঁয়াজু।
কিছু স্বাস্থ্যকর রেসিপি
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। এখানে কিছু স্বাস্থ্যকর রেসিপি দেওয়া হলো:
সবজির খিচুড়ি:
সবজির খিচুড়ি একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার।
উপকরণ:
- চাল – ১ কাপ
- ডাল (মুগ/মসুর) – ১/২ কাপ
- পেঁয়াজ কুচি – ১/২ কাপ
- সবজি (গাজর, আলু, ফুলকপি, মটর) – ১ কাপ (ছোট টুকরা করা)
- আদা বাটা – ১ চামচ
- রসুন বাটা – ১ চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- তেল – ১ টেবিল চামচ
- গরম জল – ৪ কাপ
- ধনে পাতা – সামান্য (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
- চাল ও ডাল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে সবজিগুলো দিয়ে দিন।
- হলুদ, জিরা ও নুন দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে চাল ও ডাল দিয়ে দিন।
- গরম জল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ঢেকে দিন এবং মাঝারি আঁচে রান্না করুন।
- খিচুড়ি ঘন হয়ে এলে এবং চাল ও ডাল সেদ্ধ হয়ে গেলে ধনে পাতা দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন স্বাস্থ্যকর সবজির খিচুড়ি।
ডাল পালং শাক:
ডাল পালং শাক একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার, যা সহজেই তৈরি করা যায়।
উপকরণ:
- ডাল (মুগ/মসুর) – ১ কাপ
- পালং শাক – ২৫০ গ্রাম (কুচি করা)
- পেঁয়াজ কুচি – ১/২ কাপ
- রসুন কুচি – ১ চামচ
- সর্ষের তেল – ১ টেবিল চামচ
- শুকনো লঙ্কা – ২টি
- পাঁচ ফোড়ন – ১/২ চামচ
- নুন – স্বাদমতো
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
প্রস্তুত প্রণালী:
- ডাল ভালোভাবে ধুয়ে প্রেসার কুকারে সামান্য নুন ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।
- কড়াইয়ে তেল গরম করে শুকনো লঙ্কা ও পাঁচ ফোড়ন দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।
- পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে সোনালী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- পালং শাক দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- সেদ্ধ করা ডাল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং নুন দিয়ে স্বাদমতো করুন।
- কিছুক্ষণ রান্না করার পর গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন পুষ্টিকর ডাল পালং শাক।
ঘরোয়া রান্নার রেসিপি নিয়ে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ):
রান্না নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে, তাই না? এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য কী কী বিষয় মনে রাখা উচিত?
স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। যেমন:
- কম তেল ব্যবহার করা
- ফ্রেশ সবজি ব্যবহার করা
- কম মশলা ব্যবহার করা
- ভাজা খাবারের চেয়ে সেদ্ধ বা ভাপে রান্না করা খাবার বেশি খাওয়া
তাড়াতাড়ি রান্না করার কিছু টিপস আছে?
অবশ্যই! তাড়াতাড়ি রান্না করার জন্য কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো:
- রান্নার আগে সব উপকরণ গুছিয়ে নিন
- প্রেসার কুকার ব্যবহার করুন
- আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন, যেমন পেঁয়াজ কুচি বা আদা-রসুন বাটা তৈরি করে রাখা
বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যকর রেসিপি কী হতে পারে?
বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যকর রেসিপি হতে পারে সবজির খিচুড়ি, ডিমের পুডিং বা সুজি। এগুলোতে প্রচুর পুষ্টি থাকে এবং বাচ্চারা সহজেই খেতে পারে।
রেসিপিগুলো কি সহজে তৈরি করা যায়?
হ্যাঁ, এই রেসিপিগুলো খুব সহজেই তৈরি করা যায়। আমি চেষ্টা করেছি এমন রেসিপি দিতে, যা আপনারা ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে সহজেই বানাতে পারবেন।
রেসিপিগুলোর স্বাদ কেমন?
আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি, এই রেসিপিগুলো স্বাদে অতুলনীয়। একবার তৈরি করে দেখুন, আপনার পরিবারের সবাই পছন্দ করবে।
উপসংহার
তাহলে আজ এই পর্যন্তই। আশা করি, এই ঘরোয়া রান্নার রেসিপি (Ghoroa Rannar Recipe) গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আপনারা অবশ্যই এগুলো চেষ্টা করবেন। রান্নার সময় নিজের ক্রিয়েটিভিটি যোগ করতে ভুলবেন না। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আর নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করে পরিবারের সাথে উপভোগ করুন। হ্যাপি কুকিং!