আসসালামু আলাইকুম! কেমন আছেন আপনারা? আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করবো “সার্ভার” নিয়ে। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট – এই শব্দগুলো শুনলেই আমাদের মনে একটা জটিল ধারণা তৈরি হয়, তাই না? কিন্তু চিন্তা নেই, আজকে আমরা খুব সহজ ভাষায় সার্ভার কী, তা জানার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
সার্ভার (Server) কাকে বলে? একদম জলের মতো সোজা করে বুঝিয়ে দিচ্ছি!
সার্ভার হলো একটা শক্তিশালী কম্পিউটার, যেটা সবসময় চালু থাকে এবং অন্যদেরকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। ধরুন, আপনার কম্পিউটারে একটা ওয়েবসাইট দেখতে চান। আপনার কম্পিউটার তখন সার্ভারের কাছে সেই ওয়েবসাইটের জন্য অনুরোধ পাঠায়। সার্ভার তখন ওয়েবসাইটটির ডেটা আপনার কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেয়, আর আপনি সেটা দেখতে পান। সার্ভার অনেকটা ওয়েটারের মতো, যে আপনার চাহিদা অনুযায়ী খাবার (ডেটা) সরবরাহ করে।
সার্ভার কিভাবে কাজ করে?
সার্ভার কিভাবে কাজ করে, সেটা বুঝতে হলে এর ভেতরের কিছু বিষয় জানতে হবে। চলুন, ধাপে ধাপে দেখা যাক:
ক্লায়েন্ট-সার্ভার মডেল (Client-Server Model)
সার্ভারের মূল কাজ হল ক্লায়েন্টদের বিভিন্ন অনুরোধ (request) পূরণ করা। এই মডেলটিকে ক্লায়েন্ট-সার্ভার মডেল বলা হয়। এখানে, ক্লায়েন্ট হল আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল, আর সার্ভার হল সেই শক্তিশালী কম্পিউটার যা আপনাকে ডেটা সরবরাহ করছে।
অনুরোধ পাঠানো (Sending Request)
যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে যান, আপনার ব্রাউজার (যেমন Chrome, Firefox) সার্ভারের কাছে একটি অনুরোধ পাঠায়। এই অনুরোধে বলা থাকে আপনি কী দেখতে চান।
সার্ভারের প্রতিক্রিয়া (Server’s Response)
সার্ভার সেই অনুরোধটি গ্রহণ করে, প্রয়োজনীয় ডেটা খুঁজে বের করে এবং আপনার ব্রাউজারে পাঠিয়ে দেয়। আপনার ব্রাউজার তখন সেই ডেটা ব্যবহার করে ওয়েবসাইটটি প্রদর্শন করে।
সার্ভারের মূল উপাদান (Key Components of a Server)
- হার্ডওয়্যার (Hardware): সার্ভার চালানোর জন্য শক্তিশালী হার্ডওয়্যার দরকার। এর মধ্যে আছে দ্রুতগতির প্রসেসর, প্রচুর র্যাম (RAM) এবং ডেটা সংরক্ষণের জন্য বিশাল স্টোরেজ।
- অপারেটিং সিস্টেম (Operating System): সার্ভারের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম থাকে, যেমন Windows Server, Linux, ইত্যাদি। এই অপারেটিং সিস্টেম সার্ভারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- সফটওয়্যার (Software): সার্ভারে বিশেষ কিছু সফটওয়্যার ইনস্টল করা থাকে, যা ক্লায়েন্টদের অনুরোধ গ্রহণ ও ডেটা সরবরাহ করতে সাহায্য করে। যেমন, Apache, Nginx ইত্যাদি ওয়েব সার্ভার সফটওয়্যার।
সার্ভারের প্রকারভেদ (Types of Servers)
সার্ভার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, তাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সার্ভারের প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:
ওয়েব সার্ভার (Web Server)
ওয়েব সার্ভার হলো সবচেয়ে পরিচিত সার্ভার। এর কাজ হলো ওয়েবসাইট এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হোস্ট করা। যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তখন আপনার ব্রাউজার ওয়েব সার্ভারের কাছে সেই ওয়েবসাইটের ফাইলগুলোর জন্য অনুরোধ পাঠায়। সার্ভার সেই ফাইলগুলো আপনার ব্রাউজারে পাঠিয়ে দেয়, যার ফলে আপনি ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।
ডাটাবেস সার্ভার (Database Server)
ডাটাবেস সার্ভার ডেটা সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হয়। ওয়েবসাইটে লগইন করা, নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করা, অথবা কোনো তথ্য খোঁজার সময় ডাটাবেস সার্ভারের প্রয়োজন হয়। এই সার্ভার MySQL, Oracle, বা Microsoft SQL Server-এর মতো ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS) ব্যবহার করে ডেটা সংরক্ষণ করে।
ফাইল সার্ভার (File Server)
ফাইল সার্ভার নেটওয়ার্কের মধ্যে ফাইল সংরক্ষণ এবং শেয়ার করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ফাইল আদান-প্রদান এবং ব্যাকআপ রাখার সুবিধা দেয়।
মেইল সার্ভার (Mail Server)
মেইল সার্ভার ইমেইল পাঠানো এবং গ্রহণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আপনি যখন কাউকে ইমেইল পাঠান, তখন সেটি মেইল সার্ভারের মাধ্যমে প্রাপকের কাছে পৌঁছায়। Gmail, Yahoo Mail-এর মতো ইমেইল সার্ভিসগুলো মেইল সার্ভার ব্যবহার করে।
গেম সার্ভার (Game Server)
গেম সার্ভার অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেম হোস্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি গেমের ডেটা প্রসেস করে এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে গেমিং অভিজ্ঞতা মসৃণ রাখে।
অ্যাপ্লিকেশন সার্ভার (Application Server)
অ্যাপ্লিকেশন সার্ভার ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন চালানোর জন্য প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। এটি ওয়েব সার্ভার এবং ডাটাবেস সার্ভারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে অ্যাপ্লিকেশনকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
সার্ভার কেন প্রয়োজন? (Why Do We need server?)
সার্ভারের প্রয়োজনীয়তা অনেক। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
- কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা (Centralized Management): সার্ভার ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে কেন্দ্রীভূতভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এর ফলে সবকিছু এক জায়গায় থাকে এবং সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- নিরাপত্তা (Security): সার্ভার ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সার্ভারে ফায়ারওয়াল এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কারণে অননুমোদিত ব্যবহারকারীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- সহজলভ্যতা (Accessibility): সার্ভার ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে যে কোনো সময়, যে কোনো স্থান থেকে অ্যাক্সেস করার সুবিধা দেয়।
- কর্মক্ষমতা (Performance): সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইটগুলোর কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শক্তিশালী হার্ডওয়্যার ও অপটিমাইজড সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে সার্ভার দ্রুত ডেটা সরবরাহ করতে পারে।
- ব্যাকআপ এবং পুনরুদ্ধার (Backup and Recovery): সার্ভার ডেটার ব্যাকআপ রাখতে এবং প্রয়োজনে তা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
ছোট ব্যবসার জন্য সার্ভার (Servers for Small Businesses)
ছোট ব্যবসার জন্য সার্ভার বিশেষভাবে দরকারি। এটি ফাইল শেয়ারিং, প্রিন্টার শেয়ারিং এবং সেন্ট্রালাইজড ডেটা স্টোরেজের সুবিধা দেয়। ছোট সার্ভারগুলো সাধারণত কম খরচে পাওয়া যায় এবং এগুলো ব্যবহার করাও সহজ।
বড় ব্যবসার জন্য সার্ভার (Servers for larger Business)
বড় ব্যবসার জন্য ডেটা নিরাপত্তা এবং কর্মক্ষমতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বড় সার্ভারগুলো বেশি ডেটা ধারণ করতে পারে এবং একই সময়ে অনেক ব্যবহারকারীকে সাপোর্ট করতে পারে। এছাড়াও, এদের উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে যা ব্যবসায়ের ডেটা সুরক্ষিত রাখে।
সার্ভার কিভাবে কাজ করে তার একটি বাস্তব উদাহরণ
ধরুন, আপনি আপনার স্মার্টফোন থেকে ফেসবুকে লগইন করতে চান। যখন আপনি ফেসবুকে আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করেন, তখন আপনার ফোন একটি অনুরোধ (request) পাঠায় ফেসবুকের সার্ভারের কাছে। ফেসবুকের সার্ভার তখন আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড ডাটাবেজের সাথে মিলিয়ে দেখে। যদি সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে সার্ভার আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য আপনার ফোনে পাঠিয়ে দেয়, এবং আপনি ফেসবুকে লগইন করতে পারেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যায়, এবং এর পেছনে কাজ করে সার্ভার।
ওয়েবসাইট দেখার সময় সার্ভার কিভাবে কাজ করে?
১. ব্রাউজার থেকে সার্ভারে রিকোয়েস্ট: আপনি যখন আপনার ওয়েব ব্রাউজারে (যেমন Chrome, Safari) একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখেন (যেমন, www.example.com), তখন আপনার ব্রাউজার সেই ওয়েবসাইটের সার্ভারের কাছে একটি রিকোয়েস্ট পাঠায়। এই রিকোয়েস্টে বলা হয়, আপনি কী দেখতে চান।
২. সার্ভারের রেসপন্স: সার্ভার সেই রিকোয়েস্টটি পায় এবং ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো (যেমন HTML, CSS, JavaScript, ছবি, ভিডিও) খুঁজে বের করে। তারপর সার্ভার সেই ফাইলগুলো আপনার ব্রাউজারে ফেরত পাঠায়।
৩. ব্রাউজারের ডিসপ্লে: আপনার ব্রাউজার সেই ফাইলগুলো পাওয়ার পর সেগুলোকে সাজিয়েগুছিয়ে ওয়েবসাইটে দেখায়। আপনি তখন সুন্দরভাবে ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের সার্ভার: প্রকারভেদ ও কাজ
সার্ভার নানা ধরনের হয়ে থাকে, নিচে কয়েকটি প্রধান সার্ভারের উদাহরণ দেওয়া হলো:
১. ওয়েব সার্ভার: ওয়েব সার্ভারের কাজ হলো ওয়েবসাইট হোস্ট করা এবং ওয়েবপেজগুলো ব্রাউজারে দেখানো।
২. ডাটাবেস সার্ভার: ডাটাবেস সার্ভার ডেটা সংরক্ষণ করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ডেটা সরবরাহ করে।
৩. ফাইল সার্ভার: ফাইল সার্ভার নেটওয়ার্কের মধ্যে ফাইল শেয়ারিং এবং স্টোরেজের সুবিধা দেয়।
৪. মেইল সার্ভার: মেইল সার্ভার ইমেইল পাঠানো এবং গ্রহণ করার কাজ করে।
৫. গেম সার্ভার: গেম সার্ভার অনলাইন গেম খেলার জন্য মাল্টিপ্লেয়ার এনভারনমেন্ট তৈরি করে।
সার্ভার কেনার আগে কি কি বিষয় জানা দরকার?
সার্ভার কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যাতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সার্ভারটি নির্বাচন করতে পারেন। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হলো:
আপনার প্রয়োজন (Your Needs)
প্রথমেই আপনার ব্যবসার বা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কী ধরনের সার্ভার প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক কেমন, কত ডেটা স্টোর করতে হবে, কী ধরনের অ্যাপ্লিকেশন চালাতে চান – এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করুন।
হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন (Hardware Specification)
সার্ভারের প্রসেসর, র্যাম, স্টোরেজ এবং নেটওয়ার্কিং ক্ষমতা কেমন হওয়া উচিত, তা আপনার চাহিদার ওপর নির্ভর করে। যদি আপনার অ্যাপ্লিকেশন বেশি রিসোর্স ব্যবহার করে, তাহলে শক্তিশালী প্রসেসর এবং বেশি র্যাম প্রয়োজন হবে।
অপারেটিং সিস্টেম (Operating System)
সার্ভারের জন্য কোন অপারেটিং সিস্টেম (যেমন Windows Server, Linux) সবচেয়ে উপযোগী, তা নির্বাচন করতে হবে। আপনার অ্যাপ্লিকেশন এবং সফটওয়্যারগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে অপারেটিং সিস্টেম পছন্দ করা উচিত।
স্কেলেবিলিটি (Scalability)
ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসার পরিধি বাড়লে সার্ভারের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। তাই এমন সার্ভার নির্বাচন করুন, যা সহজে আপগ্রেড করা যায়।
নিরাপত্তা (Security)
সার্ভারের নিরাপত্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফায়ারওয়াল, অ্যান্টিভাইরাস, এবং নিয়মিত নিরাপত্তা আপডেট নিশ্চিত করতে হবে।
দাম (Price)
বিভিন্ন সার্ভারের দাম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আপনার বাজেট অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো কনফিগারেশনের সার্ভারটি বেছে নিতে হবে।
ভেন্ডর এবং সাপোর্ট (Vendor and Support)
যে কোম্পানির কাছ থেকে সার্ভার কিনছেন, তাদের সাপোর্ট কেমন তা জেনে নিন। ভালো কাস্টমার সাপোর্ট পেলে যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়।
বিভিন্ন সার্ভার অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে তুলনা
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কিছু জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমের তুলনা নিচে দেওয়া হলো:
অপারেটিং সিস্টেম | সুবিধা | অসুবিধা | ব্যবহারকারী |
---|---|---|---|
Windows Server | ব্যবহার করা সহজ, মাইক্রোসফটের অন্যান্য পণ্যের সাথে ভালো সামঞ্জস্য | লাইসেন্সিং খরচ বেশি | ছোট ও মাঝারি ব্যবসা |
Linux (যেমন Ubuntu, CentOS) | ওপেন সোর্স, বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, কাস্টমাইজেশন করা যায় | কমান্ড লাইন ইন্টারফেস ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে | বড় ব্যবসা এবং ডেভেলপার |
macOS Server | সহজে সেটআপ করা যায়, Apple ডিভাইসগুলোর সাথে ভালো ইন্টিগ্রেশন | উইন্ডোজ বা লিনাক্সের মতো নমনীয় নয় | ছোট ব্যবসা এবং Apple ব্যবহারকারী |
নিজের সার্ভার বানানোর সুবিধা ও অসুবিধা
বর্তমানে অনেকেই নিজের সার্ভার তৈরি করতে আগ্রহী। এক্ষেত্রে কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হলো:
সুবিধা
- নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা যায়।
- হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার নিজের পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচন করা যায়।
- দীর্ঘমেয়াদে খরচ কম হতে পারে।
অসুবিধা
- টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকতে হয়।
- সেটআপ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন।
- প্রাথমিক খরচ বেশি হতে পারে।
সার্ভার ভার্চুয়ালাইজেশন কি?
সার্ভার ভার্চুয়ালাইজেশন হলো একটি প্রযুক্তি, যেখানে একটি ফিজিক্যাল সার্ভারকে একাধিক ভার্চুয়াল সার্ভারে ভাগ করা যায়। এর ফলে হার্ডওয়্যারের ব্যবহার বাড়ে এবং খরচ কমে।
ভার্চুয়ালাইজেশনের সুবিধা
- খরচ কম: কম হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে বেশি কাজ করা যায়।
- সহজ ব্যবস্থাপনা: ভার্চুয়াল মেশিনগুলো সহজে পরিচালনা করা যায়।
- বেশি নিরাপত্তা: প্রতিটি ভার্চুয়াল মেশিন আলাদাভাবে সুরক্ষিত থাকে।
- দ্রুত পুনরুদ্ধার: কোনো কারণে সার্ভার ডাউন হয়ে গেলে দ্রুত রিস্টোর করা যায়।
কয়েকটি সাধারণ সার্ভার ভুল ধারণা (Server related common Myths)
আমাদের সমাজে সার্ভার নিয়ে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। নিচে কয়েকটি সাধারণ ভুল ধারণা এবং তার সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
- “সার্ভার শুধু বড় কোম্পানির জন্য”: এটি ভুল ধারণা। ছোট ব্যবসার জন্যও সার্ভার প্রয়োজন হতে পারে।
- “সার্ভার কেনা অনেক বেশি খরচ”: বর্তমানে ক্লাউড সার্ভিসের কারণে কম খরচে সার্ভার ব্যবহার করা সম্ভব।
- “সার্ভার খুবই জটিল”: এখনকার সার্ভারগুলো ব্যবহার করা আগের চেয়ে অনেক সহজ।
সার্ভার এর ভবিষ্যৎ
সার্ভারের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ক্লাউড কম্পিউটিং, এজ কম্পিউটিং, এবং সার্ভারলেস কম্পিউটিংয়ের মতো নতুন প্রযুক্তি সার্ভারকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করে তুলছে। তাই, সার্ভার টেকনোলজি ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শেষ কথা :
আশা করি, আজকের আলোচনা থেকে সার্ভার সম্পর্কে আপনাদের ধারণা স্পষ্ট হয়েছে। যদি এখনও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ!
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন (FAQ):
১. সার্ভার কি সবসময় চালু রাখতে হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, সার্ভারকে সবসময় চালু রাখতে হয়। কারণ এটি অন্যদেরকে সবসময় সেবা প্রদান করে। যদি সার্ভার বন্ধ থাকে, তাহলে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্সেস করা যাবে না।
২. সার্ভারের দাম কেমন?
উত্তর: সার্ভারের দাম বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন – সার্ভারের ধরণ, কনফিগারেশন, এবং আপনি কোথায় থেকে কিনছেন। ছোট সার্ভারের দাম কম হতে পারে, কিন্তু বড় সার্ভারের দাম অনেক বেশি হতে পারে।
৩. VPS সার্ভার কি?
উত্তর: VPS (Virtual Private Server) হলো একটি ভার্চুয়ালাইজড সার্ভার। এটি একটি ফিজিক্যাল সার্ভারের অংশ, যা একাধিক ভার্চুয়াল সার্ভারে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি VPS এর নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম এবং রিসোর্স থাকে।
৪. ডেডিকেটেড সার্ভার কি?
উত্তর: ডেডিকেটেড সার্ভার মানে হলো একটি ফিজিক্যাল সার্ভার, যা শুধুমাত্র একজন ব্যবহারকারীর জন্য উৎসর্গীকৃত। এর মানে হলো আপনি পুরো সার্ভারের রিসোর্স ব্যবহার করতে পারবেন।
৫. ক্লাউড সার্ভার কি?
উত্তর: ক্লাউড সার্ভার হলো একটি ভার্চুয়াল সার্ভার, যা ক্লাউড কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এটি ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী রিসোর্স সরবরাহ করে এবং ব্যবহারকারী শুধুমাত্র ব্যবহৃত রিসোর্সের জন্য অর্থ প্রদান করে।
৬. শেয়ার্ড হোস্টিং কি সার্ভার?
উত্তর: শেয়ার্ড হোস্টিং হলো একটি সার্ভার যেখানে অনেক ওয়েবসাইট একসাথে হোস্ট করা হয়। এটি ছোট ওয়েবসাইট বা ব্যক্তিগত ব্লগগুলোর জন্য উপযুক্ত, যেখানে কম রিসোর্সের প্রয়োজন হয়।
৭. সার্ভার হ্যাক হওয়া থেকে কিভাবে বাঁচানো যায়?
উত্তর: কয়েকটি উপায় অবলম্বন করে সার্ভারকে হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচানো যায়:
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
- নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করুন।
- ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন।
- নিরাপত্তা নিরীক্ষণ করুন।
৮. বাংলাদেশে ভালো সার্ভার কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর: বাংলাদেশে অনেক ভালো সার্ভার প্রোভাইডার রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় প্রোভাইডার হলো:
- হোস্টনেম (HostName)
- এক্সন হোস্ট (ExonHost)
- অজুরিটা (Ajurita)
- এটিএমলবিডি (ATMLBD)
আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এদের থেকে যে কোনো একটি বেছে নিতে পারেন।
আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি “সার্ভার কাকে বলে” বিষয়ে আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছে। যদি আরও কিছু জানার থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ!