Bongo Tuner
  • হোম
  • বাংলা
    • নির্মিতি
      • রচনা
        • ভাবসম্প্রসারণ
  • English
    • Composition
    • Paragraph
  • HSC
  • গদ্য ও পদ্য
  • ছেলেদের নামের অর্থ
  • মেয়েদের নামের অর্থ
No Result
View All Result
  • হোম
  • বাংলা
    • নির্মিতি
      • রচনা
        • ভাবসম্প্রসারণ
  • English
    • Composition
    • Paragraph
  • HSC
  • গদ্য ও পদ্য
  • ছেলেদের নামের অর্থ
  • মেয়েদের নামের অর্থ
No Result
View All Result
Bongo Tuner
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

বিচূর্ণীভবন কাকে বলে? উদাহরণ ও প্রকারভেদ জানুন!

Mushfiqur Rahman by Mushfiqur Rahman
February 23, 2025
in Education
0
বিচূর্ণীভবন কাকে বলে? উদাহরণ ও প্রকারভেদ জানুন!

বিচূর্ণীভবন কাকে বলে? উদাহরণ ও প্রকারভেদ জানুন!

0
SHARES
5
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter
ADVERTISEMENT
Get Latest Updates

শুরু করা যাক! আপনি কি জানেন, আমাদের এই পৃথিবীটা প্রতিনিয়ত ভাঙছে আর গড়ছে? হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন! পাহাড়-পর্বত, পাথর—সবকিছুরই পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বিচূর্ণীভবন। আজ আমরা বিচূর্ণীভবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা আপনাকে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াটি বুঝতে সাহায্য করবে।

Table of Contents

Toggle
  • বিচূর্ণীভবন: প্রকৃতির ভাঙাগড়ার খেলা
    • বিচূর্ণীভবনের সংজ্ঞা
    • বিচূর্ণীভবনের প্রকারভেদ
      • যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন
      • রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন
    • বিচূর্ণীভবনের কারণসমূহ (Factors Affecting Weathering)
    • বিচূর্ণীভবনের গুরুত্ব (Importance of Weathering)
    • বিচূর্ণীভবন এবং মানুষের প্রভাব (Weathering and Human Impact)
  • বিচূর্ণীভবন নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন (FAQs)
      • বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
      • কোন ধরনের শিলা দ্রুত বিচূর্ণীভূত হয়?
      • বিচূর্ণীভবন কি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?
      • বিচূর্ণীভবন কমাতে আমরা কী করতে পারি?
      • বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী কী?
      • যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?
      • রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?

বিচূর্ণীভবন: প্রকৃতির ভাঙাগড়ার খেলা

বিচূর্ণীভবন (Weathering) হলো সেই প্রক্রিয়া, যেখানে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান, যেমন—তাপমাত্রা, বৃষ্টি, বাতাস এবং জৈবিক কার্যাবলীর মাধ্যমে শিলা (rocks) ধীরে ধীরে ভেঙে ছোট ছোট অংশে পরিণত হয়। এটি ভূমিরূপ পরিবর্তনের একটি প্রাথমিক পর্যায়।

বিচূর্ণীভবনের সংজ্ঞা

সহজ ভাষায়, বিচূর্ণীভবন হলো শিলা এবং খনিজ পদার্থের চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাওয়া। এই প্রক্রিয়াটি মূলত শিলার রাসায়নিক গঠন এবং ভৌত অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। এর ফলে বড় পাথরখণ্ড ছোট ছোট টুকরো, বালি বা মাটিতে পরিণত হয়।

বিচূর্ণীভবন ক্ষয় থেকে আলাদা। ক্ষয় হলো যখন বিচূর্ণীভবনের ফলে সৃষ্ট পদার্থগুলো স্থানান্তরিত হয়, যেমন—নদী বা বাতাসের মাধ্যমে। বিচূর্ণীভবন ঘটে এক জায়গায় স্থির থেকে, যেখানে শিলা প্রথমে চূর্ণ হয়।

বিচূর্ণীভবনের প্রকারভেদ

বিচূর্ণীভবনকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

  • যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন (Mechanical Weathering)
  • রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন (Chemical Weathering)

যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন

যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন হলো সেই প্রক্রিয়া, যেখানে শিলা ভৌতভাবে ভেঙে ছোট হয়ে যায়, কিন্তু এর রাসায়নিক গঠনে কোনো পরিবর্তন হয় না। এটি বিভিন্ন উপায়ে ঘটতে পারে:

  • তাপমাত্রা পরিবর্তন: দিনের বেলায় সূর্যের তাপে শিলা প্রসারিত হয় এবং রাতে ঠান্ডায় সংকুচিত হয়। এই ক্রমাগত প্রসারণ ও সংকোচনের ফলে শিলার মধ্যে ফাটল ধরে এবং তা ভেঙে যায়। মরুভূমিতে এই ধরনের বিচূর্ণীভবন বেশি দেখা যায়, কারণ সেখানে দিনের বেলা এবং রাতের বেলার তাপমাত্রার মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে।

    উদাহরণস্বরূপ, ভাবুন একটি পাথরের উপরে দিনের বেলা প্রচণ্ড রোদ পড়ছে। পাথরটি গরম হয়ে কিছুটা বেড়ে গেল। আবার রাতে যখন তাপমাত্রা কমে গেল, তখন পাথরটি ঠান্ডা হয়ে একটু ছোট হয়ে গেল। এই যে বারবার বড় হওয়া আর ছোট হওয়া, এতে পাথরের ভেতরে একটা চাপ সৃষ্টি হয়। অনেকটা যেন একটা রাবার ব্যান্ডকে বারবার টানলে সেটা যেমন দুর্বল হয়ে যায়, তেমনই। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে এই চাপ সহ্য করতে না পেরে পাথরটা একসময় ফেটে যায় বা ভেঙে যায়।

  • তুষারের কার্যাবলী: পাথরের ফাটলের মধ্যে পানি জমে বরফে পরিণত হলে এর আয়তন প্রায় ৯% বাড়ে। এই কারণে ফাটলের ভেতরের দিকে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়, যা শিলাকে ভেঙে দেয়। পার্বত্য অঞ্চলে এই প্রক্রিয়াটি বিশেষভাবে দেখা যায়।

    কল্পনা করুন, পাহাড়ের উপরে একটা পাথরের মধ্যে ছোট একটা ফাটল আছে। বৃষ্টির সময়ে সেই ফাটলের ভেতরে পানি জমে গেল। রাতের বেলা তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় সেই পানি জমে বরফ হয়ে গেল। এখন বরফের একটা বিশেষত্ব আছে—এটা যখন জমে, তখন এর আকার একটু বাড়ে। অনেকটা যেন ফ্রিজে পানি রেখে বরফ করলে দেখেন যে বরফটা প্রথমে যতটুকু ছিল, তার থেকে একটু বেশি জায়গা নেয়। এই বরফ যখন ফাটলের ভেতরে জমে বেড়ে যায়, তখন এটা পাথরের ভেতরের দেয়ালে ধাক্কা দেয়। এই ধাক্কাটা এত শক্তিশালী হয় যে পাথরটা ফাটল বরাবর ভেঙে যেতে পারে।

  • লবণ কেলাস বৃদ্ধি: উপকূলীয় অঞ্চলে বা শুষ্ক এলাকায়, মাটির নিচে থাকা লবণাক্ত পানি কৈশিক প্রক্রিয়ায় শিলার ফাটলে প্রবেশ করে। এরপর পানি বাষ্পীভূত হয়ে গেলে লবণের কেলাসগুলো বৃদ্ধি পায়। এই কেলাসগুলো শিলার ভেতরের দিকে চাপ দেয় এবং শিলাকে ভেঙে ফেলে।

মনে করুন, আপনি সমুদ্রের ধারে একটা পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন৷ সমুদ্রের ঢেউ এসে পাথরটাকে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। এই ঢেউয়ের পানিতে লবণ আছে। যখন সূর্যের তাপে পাথরটা শুকিয়ে যায়, তখন পানিটা উড়ে যায়, কিন্তু লবণটা পাথরের গায়েই লেগে থাকে। এই লবণগুলো ছোট ছোট দানার মতো, যাদেরকে কেলাস বলে। এই লবণের কেলাসগুলো যখন পাথরের ছোট ছোট ছিদ্রের মধ্যে ঢুকে যায়, তখন তারা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। আর যখন তারা বড় হয়, তখন পাথরের ভেতরের দেয়ালে চাপ দেয়। অনেকটা যেন আপনি একটা ছোট বাক্সের মধ্যে অনেক বেশি জিনিস ঠেসে ঢোকাতে চেষ্টা করছেন, তখন বাক্সটা ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। একইভাবে, লবণের কেলাসগুলোর ক্রমাগত চাপে পাথরটা দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়।
  • উদ্ভিদের শিকড়: গাছের শিকড় শিলার ফাটলের মধ্যে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। শিকড় বড় হওয়ার সাথে সাথে শিলার ওপর চাপ প্রয়োগ করে, যার ফলে শিলা ভেঙে যায়।

    ধরুন, একটা পুরোনো বাড়ির দেয়ালের পাশে একটা বটগাছ জন্মেছে। প্রথমে গাছটা ছোট ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তার ডালপালা আর শিকড়গুলো বাড়তে শুরু করেছে। গাছের শিকড়গুলো মাটির নিচে দেয়ালের ফাটলের মধ্যে ঢুকে যায়। যতই শিকড় বাড়ে, ততই তারা দেয়ালের ওপর চাপ দিতে থাকে। শিকড়ের এই চাপের কারণে দেয়ালের ইটগুলো আলগা হয়ে যায় এবং একসময় দেয়ালটা ভেঙে পড়ে। পাথরের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা একই রকম। গাছের শিকড় পাথরের ফাটলের মধ্যে ঢুকে ধীরে ধীরে সেগুলোকে বড় করে দেয়, যার ফলে পাথর ভেঙে যায়।

  • প্রাণীর কার্যাবলী: কিছু প্রাণী, যেমন—কেঁচো, উইপোকা, এবং ইঁদুর শিলাস্তরে গর্ত করে। এই গর্তগুলো শিলাকে দুর্বল করে এবং বিচূর্ণীভবনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

    ভাবুন, একটা টিলার নিচে অনেকগুলো ইঁদুর একসাথে গর্ত করছে। প্রথমে ছোট ছোট গর্তগুলো ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এবং একসময় পুরো টিলাটাই দুর্বল হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি সেই গর্তগুলোর মধ্যে ঢুকে মাটিকে আরও নরম করে দেয়, ফলে টিলাটা ধসে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। একইভাবে, কেঁচো বা উইপোকা যখন মাটিতে গর্ত করে, তখন তারা মাটির গঠন পরিবর্তন করে এবং শিলাকে দুর্বল করে ফেলে।

Read More:  অভিজ্ঞ কৃষক কাকে বলে? চেনার উপায় ও বৈশিষ্ট্য

রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন

রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন হলো সেই প্রক্রিয়া, যেখানে শিলার রাসায়নিক গঠন পরিবর্তিত হয়ে নতুন পদার্থ তৈরি হয়। এটি নিম্নলিখিত উপায়ে ঘটে:

ADVERTISEMENT
  • জারণ (Oxidation): শিলাখণ্ডের মধ্যে থাকা খনিজ পদার্থের সাথে অক্সিজেনের বিক্রিয়া ঘটলে জারণ প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, লোহার সাথে অক্সিজেন যুক্ত হয়ে মরিচা (iron oxide) তৈরি হয়, যা শিলাকে দুর্বল করে দেয়।

    একটা পুরোনো লোহার গেট বা জানালায় যখন মরিচা ধরে, তখন কী হয়? লোহাটা ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যেতে শুরু করে, তাই না? রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের জারণ প্রক্রিয়াটাও অনেকটা একই রকম। কিছু শিলার মধ্যে লোহা থাকে। যখন এই শিলাগুলোর সাথে বাতাসের অক্সিজেন মেশে, তখন লোহার সাথে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। এই বিক্রিয়ার ফলে শিলার উপরে লালচে বা হলদে রঙের একটা আস্তরণ পড়ে, যাকে আমরা মরিচা বলি। এই মরিচা ধরার কারণে শিলা দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজে ভেঙে যায়।

  • জলযোজন (Hydration): খনিজ পদার্থ পানির সাথে যুক্ত হয়ে নতুন যৌগ গঠন করে, যা শিলার আয়তন বৃদ্ধি করে এবং দুর্বল করে তোলে।

    মনে করুন, আপনি শুকনো চিরে পানি ঢেলেছেন। কিছুক্ষণ পর দেখবেন যে চিঁড়েগুলো ফুলে নরম হয়ে গেছে। জলযোজন প্রক্রিয়াটাও অনেকটা একই রকম। কিছু খনিজ পদার্থ আছে, যারা পানির সংস্পর্শে এলে পানি শোষণ করে নেয়। পানি শোষণের ফলে তাদের আকার বাড়ে এবং তারা নরম হয়ে যায়। এই কারণে শিলার ভেতরের খনিজ পদার্থগুলো যখন জলযোজিত হয়, তখন শিলা দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজে ভেঙে যায়।

  • ** অঙ্গারযোজন (Carbonation):** বৃষ্টির পানি যখন বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইডের সাথে মিশে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে, তখন সেই অ্যাসিড শিলার সাথে বিক্রিয়া করে শিলাকে দ্রবীভূত করে দেয়। চুনাপাথরের (limestone) ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য।

আমরা সবাই জানি, কোমল পানীয়তে ঝাঁঝালো ভাবটা আসে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের কারণে। এই গ্যাস পানির সাথে মিশে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা পানীয়টাকে একটু টক স্বাদ দেয়। অঙ্গারযোজন অনেকটা একই রকম। বৃষ্টির পানি যখন বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইডের সাথে মেশে, তখন কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এই অ্যাসিড যখন চুনাপাথরের ওপর পড়ে, তখন চুনাপাথর ধীরে ধীরে অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে dissolved হয়ে যায়, মানে পানির সাথে মিশে যায়। এ কারণেই দেখবেন, অনেক পুরোনো চুনাপাথরের বিল্ডিংয়ের দেয়াল সময়ের সাথে সাথে ক্ষয়ে যায়।
  • দ্রবণ (Solution): কিছু খনিজ পদার্থ, যেমন—লবণ সরাসরি পানির সাথে মিশে দ্রবণ তৈরি করে এবং শিলাকে দুর্বল করে।

    চিনি বা লবণ মেশানো পানি নিশ্চয়ই দেখেছেন? চিনি বা লবণ খুব সহজেই পানির সাথে মিশে যায়, তাই না? দ্রবণ প্রক্রিয়াটাও অনেকটা একই রকম। কিছু শিলা আছে, যেগুলো সরাসরি পানির সাথে মিশে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, লবণের শিলাখণ্ডের ওপর দিয়ে যখন পানি বয়ে যায়, তখন লবণ পানির সাথে মিশে যায় এবং শিলাটা ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায়।

  • আর্দ্র বিশ্লেষণ (Hydrolysis): খনিজ পদার্থগুলো পানির সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয়, যার ফলে শিলার গঠন পরিবর্তিত হয়ে যায়।

    সাবান তৈরির সময় অ্যাসিড আর ক্ষার মিশিয়ে বিশেষ রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো হয়, তাই না? আর্দ্র বিশ্লেষণ অনেকটা সেই রকমই। এখানে খনিজ পদার্থগুলোর সাথে পানির রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। এই বিক্রিয়ার ফলে শিলার ভেতরের গঠন পরিবর্তন হয়ে যায়, যার কারণে শিলা দুর্বল হয়ে ভেঙে যেতে পারে।

Read More:  তাপহারী বিক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ সহ বুঝুন!

বিচূর্ণীভবনের কারণসমূহ (Factors Affecting Weathering)

বিচূর্ণীভবনের হার এবং ধরণ বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে। নিচে কয়েকটি প্রধান কারণ আলোচনা করা হলো:

  • জলবায়ু (Climate): তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বিচূর্ণীভবনের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন দ্রুত হয়, অন্যদিকে শীতল ও শুষ্ক জলবায়ুতে যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন প্রধান ভূমিকা পালন করে।
  • শিলা গঠন (Rock Composition): শিলার খনিজ গঠন এবং শিলার বৈশিষ্ট্য বিচূর্ণীভবনের হারকে প্রভাবিত করে। নরম শিলা, যেমন—বেলেপাথর (sandstone) সহজেই ভেঙে যায়, যেখানে কঠিন শিলা, যেমন— গ্রানাইট (granite) ধীরে ধীরে ভাঙে।
  • ভূ-পৃষ্ঠের ঢাল (Slope of the Land Surface): খাড়া ঢালে বিচূর্ণীভবনের হার বেশি হয়, কারণ ঢাল বেশি হওয়ার কারণে শিলা দ্রুত স্থানান্তরিত হয় এবং নতুন শিলা উন্মুক্ত হয়।
  • জীবের উপস্থিতি (Presence of Living Organisms): উদ্ভিদ এবং প্রাণী উভয়েই বিচূর্ণীভবনে ভূমিকা রাখে। উদ্ভিদের শিকড় শিলাকে ভেঙে ফেলে, অন্যদিকে প্রাণীরা গর্ত করে শিলাকে দুর্বল করে।
  • সময় (Time): বিচূর্ণীভবন একটি ধীর প্রক্রিয়া। সময়ের সাথে সাথে এর প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

বিচূর্ণীভবনের গুরুত্ব (Importance of Weathering)

বিচূর্ণীভবন আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • মাটি তৈরি (Soil Formation): বিচূর্ণীভবনের মাধ্যমে শিলা ভেঙে মাটি তৈরি হয়। এই মাটি কৃষিকাজের জন্য অপরিহার্য।

    আমরা সবাই জানি, মাটি আমাদের জীবনের জন্য কতটা জরুরি। মাটিতেই আমরা ফসল ফলাই, যা আমাদের খাদ্য জোগায়। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই মাটি কীভাবে তৈরি হয়? মাটি তৈরি হওয়ার পেছনে বিচূর্ণীভবনের একটা বড় ভূমিকা আছে। বিচূর্ণীভবনের মাধ্যমে বড় বড় পাথর ভেঙে ছোট ছোট কণায় পরিণত হয়। এই কণাগুলো ধীরে ধীরে জৈব পদার্থের সাথে মিশে উর্বর মাটি তৈরি করে। এই মাটি না থাকলে আমরা ফসল ফলাতে পারতাম না, আর আমাদের জীবনধারণ করা কঠিন হয়ে যেত।

  • ভূমিরূপ গঠন (Landform Development): বিচূর্ণীভবন ভূমিরূপ গঠনে সহায়তা করে। পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা ইত্যাদি ভূমিরূপ বিচূর্ণীভবনের ফলস্বরূপ গঠিত হয়।

    পাহাড়, পর্বত, আর উপত্যকাগুলো দেখতে কত সুন্দর, তাই না? কিন্তু এগুলো কীভাবে তৈরি হয়েছে জানেন? বিচূর্ণীভবন ধীরে ধীরে এই ভূমিরূপগুলো তৈরি করেছে। বছরের পর বছর ধরে পাথর ভাঙতে ভাঙতে পাহাড়ের আকার পরিবর্তন হয়, উপত্যকা তৈরি হয়।

  • খনিজ সম্পদ সৃষ্টি (Creation of Mineral Resources): বিচূর্ণীভবনের মাধ্যমে বিভিন্ন খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হয়, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

আমরা যে সোনা, রুপা, তামা বা অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ব্যবহার করি, সেগুলো কোথা থেকে আসে জানেন? অনেক খনিজ পদার্থ শিলার ভেতরে লুকিয়ে থাকে। বিচূর্ণীভবনের কারণে শিলা যখন ভাঙে, তখন সেই খনিজ পদার্থগুলো বেরিয়ে আসে। এই খনিজ সম্পদগুলো আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক সাহায্য করে।
  • পুষ্টি উপাদান সরবরাহ (Nutrient Supply): বিচূর্ণীভবনের মাধ্যমে শিলা থেকে উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান মাটিতে মেশে।

    গাছপালা বেড়ে ওঠার জন্য অনেক পুষ্টি উপাদান দরকার হয়, যেমন—নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম ইত্যাদি। এই পুষ্টি উপাদানগুলো আসে শিলা থেকে। বিচূর্ণীভবনের মাধ্যমে শিলা ভেঙে গেলে সেই পুষ্টি উপাদানগুলো মাটিতে মিশে যায়, যা গাছপালা শোষণ করে নেয়।

Read More:  স্নায়ুযুদ্ধ কাকে বলে? কারণ ও ফলাফল জানুন!

বিচূর্ণীভবন এবং মানুষের প্রভাব (Weathering and Human Impact)

মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপ বিচূর্ণীভবনের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে:

  • দূষণ (Pollution): কলকারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত গ্যাস বৃষ্টির সাথে মিশে অ্যাসিড বৃষ্টি (acid rain) তৈরি করে। এই অ্যাসিড বৃষ্টি শিলার রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন ত্বরান্বিত করে।

    আমরা সবাই জানি, দূষণ আমাদের পরিবেশের জন্য কতোটা ক্ষতিকর। কলকারখানা আর গাড়ি থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তাতে অনেক ক্ষতিকর গ্যাস থাকে। এই গ্যাসগুলো বৃষ্টির পানির সাথে মিশে অ্যাসিড বৃষ্টি তৈরি করে। এই অ্যাসিড বৃষ্টি যখন কোনো পাথরের ওপর পড়ে, তখন পাথরটা খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয় হয়ে যায়।

  • খনন (Mining): খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য খনন কাজ চালানোর ফলে শিলা উন্মুক্ত হয় এবং বিচূর্ণীভবনের হার বাড়ে।

    আমরা যখন মাটি খুঁড়ে কোনো কিছু বের করি, তখন মাটির নিচের পাথরগুলো exposed হয়ে যায়, মানে সরাসরি বাতাসের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে পাথরগুলো দ্রুত ভাঙতে শুরু করে।

  • কৃষি কাজ (Agriculture): অতিরিক্ত চাষাবাদের ফলে মাটির উপরের স্তর আলগা হয়ে যায়, যা যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনকে উৎসাহিত করে।

জমিতে অতিরিক্ত চাষ করলে মাটির উপরের স্তর নরম হয়ে যায়। ফলে মাটি সহজেই erosion বা স্থানান্তরিত হয়ে যেতে পারে।
  • বনভূমি ধ্বংস (Deforestation): গাছপালা কেটে ফেললে মাটির ক্ষয়রোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে বিচূর্ণীভবন দ্রুত হয়।

    গাছপালা মাটি কামড়ে ধরে রাখে, তাই মাটি সহজে সরতে পারে না। কিন্তু যখন আমরা গাছ কেটে ফেলি, তখন মাটি আলগা হয়ে যায় এবং বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যায়।

বিচূর্ণীভবন নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন (FAQs)

এখানে বিচূর্ণীভবন সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:

বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?

বিচূর্ণীভবন হলো শিলার ভাঙন প্রক্রিয়া, যা একই স্থানে স্থির থেকে ঘটে। অন্যদিকে, ক্ষয় হলো বিচূর্ণীভবনের ফলে সৃষ্ট পদার্থের স্থানান্তর, যা বাতাস, পানি বা বরফের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

কোন ধরনের শিলা দ্রুত বিচূর্ণীভূত হয়?

নরম শিলা, যেমন— বেলেপাথর (sandstone) এবং শেল (shale) দ্রুত বিচূর্ণীভূত হয়। কারণ তাদের গঠন গ্রানাইট বা ব্যাসল্টের মতো কঠিন নয়।

বিচূর্ণীভবন কি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?

বিচূর্ণীভবন একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া এবং পরিবেশের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে মানুষের কিছু কার্যকলাপ, যেমন—দূষণ এবং বনভূমি ধ্বংস, এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিচূর্ণীভবন কমাতে আমরা কী করতে পারি?

বিচূর্ণীভবন কমাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বনভূমি সংরক্ষণ এবং সঠিক ভূমি ব্যবহার পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি।

বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী কী?

  • মরুভূমিতে তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে পাথরের ফাটল ধরা।
  • পাহাড়ের ফাটলে জমে থাকা বরফের কারণে পাথরের ভাঙন।
  • বৃষ্টির পানিতে চুনাপাথরের দ্রবীভূত হওয়া।
  • গাছের শিকড়ের কারণে পাথরের ভাঙন।

যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?

যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণগুলো হলো:

  • তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে শিলার ভাঙন
  • তুষারের কার্যাবলী
  • লবণ কেলাস বৃদ্ধি
  • উদ্ভিদের শিকড়ের চাপ
  • প্রাণীর কার্যাবলী

রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?

রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণগুলো হলো:

  • জারণ (Oxidation)
  • জলযোজন (Hydration)
  • অঙ্গারযোজন (Carbonation)
  • দ্রবণ (Solution)
  • আর্দ্র বিশ্লেষণ (Hydrolysis)

বিচূর্ণীভবন প্রকৃতির এক অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া, যা আমাদের পরিবেশ এবং জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা আমাদের পরিবেশ সুরক্ষায় সাহায্য করতে পারে।

আশা করি, বিচূর্ণীভবন নিয়ে আপনার মনে আর কোনো প্রশ্ন নেই। যদি থাকে, তবে নির্দ্বিধায় কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার কৌতূহল মেটাতে আমি সবসময় প্রস্তুত!

Previous Post

তড়িৎচালক বল কাকে বলে? সহজ ভাষায় সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ

Next Post

লব্ধি কাকে বলে? সহজ ভাষায় বুঝুন + উদাহরণ

Mushfiqur Rahman

Mushfiqur Rahman

I am Mushfiqur Rahman Swopnil, owner of Bongo Tuner and an experienced SEO and Digital Marketing professional with a deep understanding of affiliate marketing and link building. Running my own marketing agency, I offer strategic digital solutions to boost brand visibility and drive tangible results. My extensive experience covers all aspects of online marketing, helping businesses achieve their growth objectives through data-driven SEO and effective link-building strategies.

Next Post
লব্ধি কাকে বলে? সহজ ভাষায় বুঝুন + উদাহরণ

লব্ধি কাকে বলে? সহজ ভাষায় বুঝুন + উদাহরণ

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ

পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য: সহজে মনে রাখুন
Education

পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য: সহজে মনে রাখুন

by Mushfiqur Rahman
May 5, 2025
0

পড়া মনে রাখার গোপন রহস্য মনে করুন, পরীক্ষার আগের রাতে আপনি সব পড়ে শেষ করেছেন। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে...

Read more
মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়: জীবন হোক আরও সহজ!

মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়: জীবন হোক আরও সহজ!

May 5, 2025
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার দোয়া ও আমল

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার দোয়া ও আমল

May 5, 2025
মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন: ফিরে পান একাগ্রতা

মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন: ফিরে পান একাগ্রতা

May 5, 2025
মনোযোগ বৃদ্ধিতে কৌশল: শিক্ষার্থীদের জন্য টিপস

মনোযোগ বৃদ্ধিতে কৌশল: শিক্ষার্থীদের জন্য টিপস

May 5, 2025
ADVERTISEMENT
Bongo Tuner

© 2024 Bongo Tuner - Best Educational Website Bongo Tuner.

Navigate Site

  • Home
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Contact Us
  • Disclaimer
  • DMCA Policy

Follow Us

No Result
View All Result
  • About Us
  • Contact Us
  • Disclaimer
  • DMCA Policy
  • Privacy Policy

© 2024 Bongo Tuner - Best Educational Website Bongo Tuner.

Table of Contents

×
  • বিচূর্ণীভবন: প্রকৃতির ভাঙাগড়ার খেলা
    • বিচূর্ণীভবনের সংজ্ঞা
    • বিচূর্ণীভবনের প্রকারভেদ
      • যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন
      • রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন
    • বিচূর্ণীভবনের কারণসমূহ (Factors Affecting Weathering)
    • বিচূর্ণীভবনের গুরুত্ব (Importance of Weathering)
    • বিচূর্ণীভবন এবং মানুষের প্রভাব (Weathering and Human Impact)
  • বিচূর্ণীভবন নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন (FAQs)
      • বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ের মধ্যে পার্থক্য কী?
      • কোন ধরনের শিলা দ্রুত বিচূর্ণীভূত হয়?
      • বিচূর্ণীভবন কি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?
      • বিচূর্ণীভবন কমাতে আমরা কী করতে পারি?
      • বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী কী?
      • যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?
      • রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের উদাহরণ কী?
← সূচিপত্র দেখুন