আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন আপনারা? বিজ্ঞান! শব্দটা শুনলেই কেমন যেন একটা রহস্য, একটা জানার আগ্রহ মনের মধ্যে উঁকি দেয়, তাই না? ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে বিজ্ঞান জাদুঘরে গিয়ে সেই যে বিস্ময়ের শুরু, আজও তা একই রকম আছে। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, বিজ্ঞান আসলে কী? শুধু কি ল্যাবরেটরিতে কাঁচের বোতল আর জটিল সমীকরণ? নাকি এর বাইরেও কিছু আছে? চলুন, আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা বিজ্ঞানের অন্দরমহলে ডুব দিই, সহজ ভাষায় খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করি।
বিজ্ঞান: জানার শেষ নেই, শেখার অন্ত নেই
বিজ্ঞানকে যদি এক কথায় প্রকাশ করতে বলা হয়, তাহলে আমি বলব – “জ্ঞান”। তবে সেই জ্ঞান যেনতেন জ্ঞান নয়, একেবারে পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত জ্ঞান। বিজ্ঞান হলো সেই বিশেষ জ্ঞান যা আমরা প্রকৃতি ও জগৎ সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং যুক্তির মাধ্যমে অর্জন করি। এই জ্ঞান শুধু মুখস্থ করার বিষয় নয়, বরং হাতে-কলমে প্রমাণ করার বিষয়।
বিজ্ঞান কী এবং কেন?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বিজ্ঞান হলো আমাদের চারপাশের জগৎকে জানার এবং বোঝার একটি পদ্ধতি। এটা শুধু কিছু তথ্যের সমষ্টি নয়, বরং একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে আমরা প্রশ্ন করি, উত্তর খুঁজি এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করি।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি: জানার পথ
বিজ্ঞান কিভাবে কাজ করে? এর একটা নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, যাকে আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলি। এই পদ্ধতিতে মূলত কিছু ধাপ অনুসরণ করা হয়:
পর্যবেক্ষণ (Observation): প্রথমে আমাদের চারপাশের ঘটনাগুলোকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়। কোনো একটা বিষয় আমাদের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে।
প্রশ্ন (Question): পর্যবেক্ষণের পর সেই বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন তৈরি হয়। যেমন, “কেন আকাশ নীল?”
অনুমান (Hypothesis): প্রশ্নের একটা সম্ভাব্য উত্তর দাঁড় করানো হয়। এটা অনেকটা আন্দাজের মতো, তবে তা যুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
পরীক্ষা (Experiment): অনুমানটি সত্যি কিনা, তা পরীক্ষা করার জন্য নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
বিশ্লেষণ (Analysis): পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা হয় যে অনুমানটি সঠিক ছিল কিনা।
সিদ্ধান্ত (Conclusion): যদি পরীক্ষার ফলাফল অনুমানের সঙ্গে মেলে, তাহলে আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসি। আর যদি না মেলে, তাহলে আবার নতুন করে অনুমান তৈরি করতে হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে। একদিন দেখলাম, আমার টবের গাছগুলো কেমন যেন নেতিয়ে গেছে।
পর্যবেক্ষণ: গাছ নেতিয়ে গেছে।
প্রশ্ন: কেন গাছ নেতিয়ে গেছে?
অনুমান: হয়তো গাছে পানি দেওয়া হয়নি।
পরীক্ষা: আমি গাছে পানি দিলাম।
বিশ্লেষণ: পরের দিন দেখলাম গাছগুলো আবার সতেজ হয়ে উঠেছে।
সিদ্ধান্ত: গাছে পানি না দেওয়ার কারণেই গাছ নেতিয়ে গিয়েছিল।
এই যে পুরো প্রক্রিয়াটা, এটাই কিন্তু বিজ্ঞান!
বিজ্ঞানের প্রকারভেদ
বিজ্ঞানকে প্রধানত দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ভৌত বিজ্ঞান (Physical Science)
ভৌত বিজ্ঞান মূলত জড় পদার্থ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করে। এর মধ্যে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যা, এবং ভূবিদ্যা উল্লেখযোগ্য।
- পদার্থবিদ্যা (Physics): এটা প্রকৃতির মৌলিক নিয়মগুলো নিয়ে কাজ করে। যেমন, আলো, শব্দ, গতি, শক্তি ইত্যাদি।
- রসায়ন (Chemistry): এটা বিভিন্ন পদার্থ, তাদের গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং বিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।
- জ্যোতির্বিদ্যা (Astronomy): এটা মহাবিশ্ব, তারা, গ্রহ, নক্ষত্র এবং অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু নিয়ে গবেষণা করে।
- ভূবিদ্যা (Geology): এটা পৃথিবী, এর গঠন, উপাদান এবং পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে।
জীববিজ্ঞান (Biological Science)
জীববিজ্ঞান জীবন এবং জীবন্ত বস্তু নিয়ে আলোচনা করে। এর মধ্যে উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি এবং জেনেটিক্স উল্লেখযোগ্য।
- উদ্ভিদবিদ্যা (Botany): এটা গাছপালা এবং উদ্ভিদ জগতের সবকিছু নিয়ে আলোচনা করে।
- প্রাণিবিদ্যা (Zoology): এটা জীবজন্তু এবং প্রাণীদের জীবন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।
- মাইক্রোবায়োলজি (Microbiology): এটা অণুজীব, যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে।
- জেনেটিক্স (Genetics): এটা বংশগতি এবং জীবের বৈশিষ্ট্য কীভাবে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে।
বিজ্ঞানের গুরুত্ব
বিজ্ঞান আমাদের জীবনে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? কারণ এটা আমাদের চারপাশের জগৎকে বুঝতে সাহায্য করে, নতুন প্রযুক্তি তৈরি করতে সাহায্য করে, এবং আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করে তোলে।
- প্রযুক্তি: বিজ্ঞান ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি ভাবাই যায় না। কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, সবকিছুই বিজ্ঞানের অবদান।
- চিকিৎসা: রোগের কারণ জানা এবং তার প্রতিকার খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অপরিহার্য। টিকা, অ্যান্টিবায়োটিক, সার্জারি – সবকিছুই বিজ্ঞানের দান।
- যোগাযোগ: আজকাল আমরা মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ করতে পারছি, সেটাও বিজ্ঞানের কল্যাণে।
- কৃষি: উন্নতমানের বীজ, সার, কীটনাশক ব্যবহার করে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারছি।
বিজ্ঞানের শাখা-প্রশাখা
বিজ্ঞান বিশাল এক সাম্রাজ্য। এর শাখা-প্রশাখা অনেক। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
ফলিত বিজ্ঞান (Applied Science)
ফলিত বিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের সেই শাখা, যেখানে তাত্ত্বিক জ্ঞানকে ব্যবহারিক কাজে লাগানো হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা বিজ্ঞান, কৃষি বিজ্ঞান, ইত্যাদি ফলিত বিজ্ঞানের উদাহরণ।
প্রকৌশল (Engineering)
প্রকৌশলীরা বিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করেন, যেমন – ভবন, সেতু, রাস্তা, গাড়ি, ইত্যাদি।
চিকিৎসা বিজ্ঞান (Medical Science)
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা রোগ নির্ণয় এবং তার চিকিৎসার জন্য কাজ করেন। নতুন ওষুধ তৈরি, সার্জারি, ইত্যাদি চিকিৎসা বিজ্ঞানের অংশ।
কৃষি বিজ্ঞান (Agricultural Science)
কৃষি বিজ্ঞানীরা ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করেন।
সামাজিক বিজ্ঞান (Social Science)
সামাজিক বিজ্ঞান মানুষের সমাজ এবং মানুষের আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইত্যাদি সামাজিক বিজ্ঞানের উদাহরণ। যদিও সামাজিক বিজ্ঞান সরাসরি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান নয়, তবুও এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে।
অর্থনীতি (Economics)
অর্থনীতি মানুষের অর্থনৈতিক কাজকর্ম, যেমন – উৎপাদন, বিতরণ, এবং ভোগ নিয়ে আলোচনা করে।
সমাজবিজ্ঞান (Sociology)
সমাজবিজ্ঞান সমাজের গঠন, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান (Political Science)
রাষ্ট্রবিজ্ঞান সরকার, রাজনীতি, এবং রাষ্ট্র নিয়ে আলোচনা করে।
পরিবেশ বিজ্ঞান (Environmental Science)
পরিবেশ বিজ্ঞান পরিবেশ এবং এর উপাদানগুলো নিয়ে আলোচনা করে। পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইত্যাদি পরিবেশ বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব ব্যাপক। সকাল থেকে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত আমরা বিজ্ঞানের নানা অবদান ব্যবহার করি।
- সকাল: ঘুম থেকে উঠেই আমরা অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করি, যা বিজ্ঞানের তৈরি। টুথপেস্ট, ব্রাশ, সাবান, শ্যাম্পু – এগুলো সবই বিজ্ঞান দিয়েছে।
- রান্না: গ্যাস, চুলা, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, রেফ্রিজারেটর – এগুলো ছাড়া এখনকার জীবন ভাবাই যায় না।
- যাতায়াত: বাস, ট্রেন, গাড়ি, প্লেন – সবকিছুই বিজ্ঞানের অবদান।
- বিনোদন: টেলিভিশন, সিনেমা, কম্পিউটার গেমস – এগুলো আমাদের অবসর সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম।
বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
বিজ্ঞানের অভাবের কারণেই কুসংস্কারের জন্ম হয়। কুসংস্কার হলো সেই বিশ্বাস, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বিজ্ঞান আমাদের যুক্তিবাদী হতে শেখায় এবং কুসংস্কার থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।
আগে মানুষ মনে করত, সূর্যগ্রহণ হলো রাহু নামক কোনো দৈত্যের কাজ। কিন্তু বিজ্ঞান আমাদের জানিয়েছে, সূর্যগ্রহণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যেখানে চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে এসে আলো আটকে দেয়।
বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব
বিজ্ঞান শিক্ষা আমাদের যুক্তিবাদী এবং সমস্যা সমাধানকারী হতে সাহায্য করে। এটা আমাদের চারপাশের জগৎকে বুঝতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে উৎসাহিত করে।
- সমস্যা সমাধান: বিজ্ঞান আমাদের যে কোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার দক্ষতা বাড়ায়।
- যুক্তিবাদী হওয়া: বিজ্ঞান আমাদের প্রমাণ ছাড়া কোনো কিছু বিশ্বাস করতে নিষেধ করে।
- নতুন আবিষ্কার: বিজ্ঞান আমাদের নতুন কিছু তৈরি করতে উৎসাহিত করে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞান চর্চা
বাংলাদেশে বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়, তবে বর্তমানে এর প্রসার বাড়ছে। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
- কৃষি: আমাদের বিজ্ঞানীরা ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা খাদ্য উৎপাদনে বিপ্লব এনেছে।
- চিকিৎসা: আমাদের ডাক্তাররা জটিল রোগের চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করছেন।
- প্রযুক্তি: আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা নতুন নতুন সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার তৈরি করছেন।
ভবিষ্যৎ বিজ্ঞান
ভবিষ্যতে বিজ্ঞান আরও অনেক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো ক্ষেত্রগুলো আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করবে।
- ন্যানোটেকনোলজি: এটা এমন এক প্রযুক্তি, যেখানে অতি ক্ষুদ্র জিনিস তৈরি করা যায়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন ওষুধ, সেন্সর, এবং অন্যান্য ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব।
- বায়োটেকনোলজি: এটা জীবন্ত বস্তু ব্যবহার করে নতুন পণ্য এবং প্রযুক্তি তৈরি করে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন ওষুধ, খাদ্য, এবং জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব।
- আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI): এটা কম্পিউটারকে মানুষের মতো বুদ্ধিমান করে তোলে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, রোবট, এবং অন্যান্য বুদ্ধিমান ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব।
বিজ্ঞান নিয়ে কিছু ভুল ধারণা
বিজ্ঞান নিয়ে আমাদের সমাজে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। সেগুলো দূর করা দরকার।
- বিজ্ঞান শুধু কঠিন বিষয়: অনেকেই মনে করেন বিজ্ঞান শুধু কঠিন বিষয়, যা সবার জন্য নয়। কিন্তু আসলে বিজ্ঞান অনেক মজার এবং আগ্রহ উদ্দীপক।
- বিজ্ঞান শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য: বিজ্ঞান শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, এটা সবার জন্য। আমাদের সবারই বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা উচিত।
- বিজ্ঞান সবকিছু জানে: বিজ্ঞান সবকিছু জানে না। এখনও অনেক কিছু অজানা আছে, যা বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
বিজ্ঞান শিক্ষার পদ্ধতি
বিজ্ঞান শিক্ষার পদ্ধতি হওয়া উচিত হাতে-কলমে শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া। শিক্ষার্থীদের সরাসরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ দেওয়া উচিত।
- ল্যাবরেটরি: প্রতিটি স্কুলে ভালোভাবে সজ্জিত ল্যাবরেটরি থাকা উচিত, যেখানে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে পরীক্ষা করতে পারে।
- ফিল্ড ট্রিপ: শিক্ষার্থীদের মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিজ্ঞান জাদুঘর, গবেষণা কেন্দ্র, এবং শিল্প কারখানায় নিয়ে যাওয়া উচিত।
- বিজ্ঞান ক্লাব: স্কুলে বিজ্ঞান ক্লাব থাকা উচিত, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট করতে পারে।
বিজ্ঞান বিষয়ক বই
বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হলে ভালো কিছু বই পড়া দরকার। কিছু জনপ্রিয় বিজ্ঞান বিষয়ক বইয়ের নাম নিচে দেওয়া হলো:
- স্টিভেন হকিং-এর “এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম”: এটা মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে লেখা একটি জনপ্রিয় বই।
- কার্ল সাগানের “কসমস”: এটা মহাবিশ্ব এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে জানার একটি চমৎকার বই।
- রিচার্ড ডকিন্সের “দ্য সেলফিশ জিন”: এটা বিবর্তন এবং জিন সম্পর্কে একটি প্রভাবশালী বই।
বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট
বর্তমানে বিজ্ঞান বিষয়ক অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেখানে বিজ্ঞান সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়। কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের নাম নিচে দেওয়া হলো:
- বিজ্ঞান পত্রিকা (Biggan Potrika): বিজ্ঞান পত্রিকা বাংলায় বিজ্ঞান বিষয়ক একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট।
- বিজ্ঞান চিন্তা (Biggan Chinta): বিজ্ঞান চিন্তা বিজ্ঞান বিষয়ক আরেকটি জনপ্রিয় বাংলা ওয়েবসাইট।
- লাইভ সায়েন্স (Live Science): এটা বিজ্ঞান বিষয়ক একটি ইংরেজি ওয়েবসাইট, যেখানে বিজ্ঞান সম্পর্কে নতুন নতুন খবর পাওয়া যায়।
বিখ্যাত কয়েকজন বিজ্ঞানী
বিজ্ঞানকে যারা সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের কয়েকজনের কথা না বললেই নয়:
- আইনস্টাইন: আপেক্ষিকতার তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত।
- নিউটন: গতির সূত্র এবং মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত।
- মাদাম কুরি: তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত।
- চার্লস ডারউইন: বিবর্তন তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত।
বিজ্ঞান বিষয়ক মজার তথ্য
- মধু একমাত্র খাবার যা কখনো পচে না।
- আলো বাতাসের চেয়েও দ্রুত চলে।
- মানুষের শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী হলো জিহ্বা।
বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহল
বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহল থাকা ভালো। কৌতূহল না থাকলে নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায় না। তাই সবসময় প্রশ্ন করতে থাকুন, জানতে থাকুন।
- কেন আকাশ নীল?
- কেন পাতা সবুজ?
- কেন আমরা স্বপ্ন দেখি?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে থাকুন।
বিজ্ঞান: কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
এখানে বিজ্ঞান নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর দেওয়া হলো:
- প্রশ্ন: বিজ্ঞান কি শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য?
উত্তর: না, বিজ্ঞান সবার জন্য। আমাদের সবারই বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা উচিত। - প্রশ্ন: বিজ্ঞান কিভাবে আমাদের সাহায্য করে?
উত্তর: বিজ্ঞান আমাদের চারপাশের জগৎকে বুঝতে, নতুন প্রযুক্তি তৈরি করতে এবং আমাদের জীবনকে উন্নত করতে সাহায্য করে। - প্রশ্ন: বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব কি?
উত্তর: বিজ্ঞান শিক্ষা আমাদের যুক্তিবাদী এবং সমস্যা সমাধানকারী হতে সাহায্য করে। - প্রশ্ন: বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তর: বিজ্ঞান হলো জ্ঞান, আর প্রযুক্তি হলো সেই জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ। - প্রশ্ন: বিজ্ঞানীরা কিভাবে কাজ করেন?
উত্তর: বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে কাজ করেন, যেখানে পর্যবেক্ষণ, প্রশ্ন, অনুমান, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্তের মতো ধাপ থাকে।
শেষ কথা
বিজ্ঞান শুধু কিছু সূত্র বা তত্ত্বের সমষ্টি নয়, এটা একটা জীবন দর্শন। বিজ্ঞান আমাদের শেখায় কিভাবে প্রশ্ন করতে হয়, কিভাবে উত্তর খুঁজতে হয় এবং কিভাবে যুক্তিবাদী হতে হয়। তাই আসুন, সবাই মিলে বিজ্ঞান চর্চা করি এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি।
আশা করি, আজকের ব্লগ পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। বিজ্ঞান নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর যদি মনে হয় এই পোস্টটি অন্যদের উপকারে আসবে, তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ!