আসসালামু আলাইকুম! কেমন আছেন সবাই?
আজ আমরা কথা বলবো এমন একজন মানুষ নিয়ে, যিনি আমাদের জীবনে অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি হলেন কেয়ার গিভার। “কেয়ার গিভার” শব্দটা শুনলেই কেমন যেন একটা নির্ভরতার ছবি চোখে ভাসে, তাই না? চলুন, আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা জেনে নিই কেয়ার গিভার আসলে কী, তাদের কাজ কী, এবং আমাদের জীবনে তারা কীভাবে সাহায্য করতে পারেন।
কেয়ার গিভার কাকে বলে? (Keare Gibhara Kake Bale?)
সহজ ভাষায়, কেয়ার গিভার হলেন সেই ব্যক্তি যিনি অসুস্থ, বয়স্ক অথবা বিশেষভাবে সক্ষম (physically or mentally challenged) কোনো মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোর খেয়াল রাখেন। তিনি হতে পারেন পরিবারের সদস্য, বন্ধু, কিংবা কোনো পেশাদার সেবাপ্রদানকারী (professional caregiver)। একজন কেয়ার গিভারের মূল লক্ষ্য হলো যত্নের প্রয়োজন এমন ব্যক্তির জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা। ধরুন, আপনার দাদু খুব অসুস্থ, একা চলাফেরা করতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে, একজন কেয়ার গিভার তার দেখাশোনা করতে পারেন, ওষুধ দিতে পারেন, এমনকি তার সাথে গল্প করে তার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করতে পারেন।
কেয়ার গিভারের প্রকারভেদ (Types of Caregivers)
কেয়ার গিভার বিভিন্ন ধরনের হতে পারেন, তাদের দায়িত্ব ও কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী তাদের আলাদা করা যায়। চলুন, কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ জেনে নেই:
পারিবারিক কেয়ার গিভার (Family Caregiver)
পারিবারিক কেয়ার গিভার সাধারণত পরিবারের সদস্য হন – যেমন সন্তান, বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী অথবা অন্য কোনো আত্মীয়। তারা কোনো আর্থিক সুবিধা ছাড়াই পরিবারের আপনজনের যত্ন নেন। অনেক সময় দেখা যায়, একজন নারী তার অসুস্থ স্বামীর দেখাশোনা করছেন, কিংবা একজন সন্তান তার বৃদ্ধ বাবা-মার সেবা করছেন। এটা অনেকটা ভালোবাসার প্রতিদান স্বরূপ। তাদের কাজের কোনও বাঁধাধরা সময় থাকেনা।
পারিবারিক কেয়ার গিভার হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা | অসুবিধা |
---|---|
|
|
পেশাদার কেয়ার গিভার (Professional Caregiver)
পেশাদার কেয়ার গিভার হলেন তারা, যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং বেতনভুক্ত কর্মী। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বা ব্যক্তিগতভাবে সেবা দিয়ে থাকেন। এদের মধ্যে নার্স, হোম হেলথ এইড (home health aide) অথবা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সহকারী (personal health assistant)-রা অন্তর্ভুক্ত।
ধরুন, আপনার মায়ের আলঝেইমার (Alzheimer’s) রোগ আছে, এবং তার সার্বক্ষণিক বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে একজন পেশাদার কেয়ার গিভার আপনার মায়ের দৈনন্দিন কাজকর্মে সাহায্য করতে পারেন, যেমন খাবার দেওয়া, ওষুধ খাওয়ানো এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি (personal hygiene) বজায় রাখতে সহায়তা করা।
পেশাদার কেয়ার গিভার নিয়োগের সুবিধা ও অসুবিধা:
সুবিধা | অসুবিধা |
---|---|
|
|
স্বেচ্ছাসেবী কেয়ার গিভার (Volunteer Caregiver)
স্বেচ্ছাসেবী কেয়ার গিভার কোনো প্রকার আর্থিক লাভের আশা ছাড়াই অন্যদের সেবা প্রদান করেন। তারা সাধারণত বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকেন। তারা বিনামূল্যে অসুস্থ বা বয়স্ক মানুষদের নানান ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকেন – যেমন খাবার বিতরণ, বই পড়ে শোনানো অথবা শুধু তাদের সাথে সময় কাটানো।
লাইভ-ইন কেয়ার গিভার (Live-in Caregiver)
লাইভ-ইন কেয়ার গিভার সার্বক্ষণিকভাবে সেই ব্যক্তির সাথে থাকেন, যার তিনি যত্ন নিচ্ছেন। এর মানে হল, তিনি ওই বাড়িতেই বসবাস করেন এবং সব সময় রোগীকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত থাকেন।
কেয়ার গিভারের দায়িত্ব ও কর্তব্য (Responsibilities and Duties of a Caregiver)
একজন কেয়ার গিভারের দায়িত্ব অনেক বিস্তৃত। তিনি শুধু শারীরিক সেবাই দেন না, মানসিক এবং আবেগিক সাপোর্টও দিয়ে থাকেন। নিচে কিছু সাধারণ দায়িত্ব ও কর্তব্য আলোচনা করা হলো:
শারীরিক যত্ন (Physical Care)
শারীরিক যত্নের মধ্যে খাবার তৈরি ও খাওয়ানো, পোশাক পরানো, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সাহায্য করা, ওষুধ দেওয়া এবং শারীরিক ব্যায়াম করানো ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। একজন প্যারালাইজড (paralyzed) রোগীকে হুইলচেয়ারে বসানো বা হাঁটাতে সাহায্য করাও শারীরিক যত্নের অংশ।
মানসিক ও আবেগিক সমর্থন (Mental and Emotional Support)
মানসিক ও আবেগিক সমর্থন একজন কেয়ার গিভারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা, তাদের অনুভূতি বোঝা, এবং তাদের নিঃসঙ্গতা দূর করতে সহায়তা করা। অনেক সময় রোগীরা একাকীত্বে ভোগেন, তাই তাদের সাথে গল্প করা, বই পড়ে শোনানো, বা গান শোনানো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি।
স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ (Health Monitoring)
কেয়ার গিভারকে রোগীর স্বাস্থ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হয়। যেমন – ব্লাড প্রেশার (blood pressure) মাপা, তাপমাত্রা দেখা, এবং অন্য কোনো শারীরিক পরিবর্তন নজরে রাখা। কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে দ্রুত ডাক্তারকে জানানো উচিত। ডায়াবেটিস (diabetes) রোগীদের ক্ষেত্রে ব্লাড সুগার (blood sugar) নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং ইনসুলিন (insulin) দেওয়ার কাজটিও কেয়ার গিভার করে থাকেন।
দৈনন্দিন কাজকর্ম (Daily Activities)
দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে ঘর গোছানো, কেনাকাটা করা, ডাক্তারের appointment ঠিক করা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ অন্তর্ভুক্ত। অনেক সময় কেয়ার গিভারকে ব্যাংকিং বা বিল পরিশোধের মতো কাজও করতে হয়।
কেয়ার গিভার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা (Skills Needed to Be a Caregiver)
একজন ভালো কেয়ার গিভার হতে গেলে কিছু বিশেষ দক্ষতা থাকা জরুরি। এই দক্ষতাগুলো শুধু কাজটিকে সহজ করে না, বরং রোগীর জীবনযাত্রার মানও উন্নত করে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা উল্লেখ করা হলো:
ধৈর্য (Patience)
ধৈর্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণ। অসুস্থ বা বয়স্ক মানুষেরা অনেক সময় খিটখিটে মেজাজের হতে পারেন, অথবা তাদের আচরণ স্বাভাবিক নাও থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরে তাদের সাথে মানিয়ে চলাটা খুব জরুরি।
যোগাযোগ দক্ষতা (Communication Skills)
রোগীর সাথে পরিষ্কারভাবে কথা বলা, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তাদের প্রয়োজনগুলো বোঝা – এগুলো ভালো communication skills-এর অংশ। অনেক সময় রোগীরা তাদের সমস্যাগুলো সরাসরি বলতে পারেন না, তাই তাদের body language এবং অন্যান্য ইঙ্গিতের মাধ্যমে বুঝতে পারাটা জরুরি।
সহানুভূতি (Empathy)
সহানুভূতি মানে অন্যের কষ্ট অনুভব করতে পারা। একজন কেয়ার গিভারকে রোগীর মানসিক অবস্থা বুঝতে হবে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। তাদের দুঃখ-কষ্টগুলো অনুভব করে সেই অনুযায়ী সাপোর্ট দিতে হবে।
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা (Problem-Solving Skills)
হঠাৎ কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত সমাধান করার দক্ষতা থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বা পড়ে গেলে কী করতে হবে, তা জানতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
শারীরিক সক্ষমতা (Physical Fitness)
শারীরিক সক্ষমতা একজন কেয়ার গিভারের জন্য খুব জরুরি, কারণ তাদের অনেক শারীরিক কাজ করতে হয় – যেমন রোগীকে ধরে বসানো, व्हीलচেয়ারে করে ঘোরানো অথবা বিছানায় শোয়ানো।
কেয়ার গিভারের চাহিদা (Demand of Caregivers)
বর্তমানে বাংলাদেশে কেয়ার গিভারের চাহিদা বাড়ছে। এর প্রধান কারণ হলো:
- বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি: বাংলাদেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, এবং তাদের অনেকেরই সার্বক্ষণিক সেবার প্রয়োজন হয়।
- জীবনযাত্রার পরিবর্তন: আধুনিক জীবনযাত্রায় অনেক পরিবার ছোট হয়ে যাচ্ছে, এবং সন্তানরা কাজের জন্য দূরে থাকেন। ফলে, বাবা-মায়ের দেখাশোনার জন্য কেয়ার গিভারের প্রয়োজন হয়।
- স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন: উন্নত স্বাস্থ্যসেবার কারণে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে, এবং বয়স্ক জীবনে অনেক রোগের কারণে সেবার প্রয়োজনও বাড়ছে।
কেয়ার গিভারের প্রশিক্ষণ (Caregiver Training)
কেয়ার গিভার হিসেবে কাজ করতে হলে যথাযথ প্রশিক্ষণ নেওয়াটা খুবই জরুরি। প্রশিক্ষণ থাকলে আপনি রোগীর সঠিক যত্ন নিতে পারবেন এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কেয়ার গিভারদের জন্য প্রশিক্ষণprogram আয়োজন করে থাকে। এইসব training program থেকে আপনারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, রোগীর সাথে व्यवहार এবং জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করার মতো বিষয়গুলো শিখতে পারবেন।
কোথায় পাবেন এই প্রশিক্ষণ?
- সরকারি নার্সিং কলেজগুলোতে প্রায়শই এই ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
- বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোও এই ধরণের প্রশিক্ষণprogram আয়োজন করে থাকে।
- কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কেয়ারগিভিং-এর ওপর কোর্স পাওয়া যায়।
কেয়ার গিভার এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক (Relationship Between Caregiver and Family Members)
কেয়ার গিভার এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোগীর জন্য একটি সহায়ক এবং স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে। এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো যা এই সম্পর্ককে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে:
যোগাযোগ (Communication):
নিয়মিত যোগাযোগ হল সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। কেয়ার গিভারকে রোগীর অবস্থা, যে কোনও পরিবর্তন বা উদ্বেগের বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে উৎসাহিত করুন। পরিবারের সদস্যদেরও কেয়ার গিভারের কাজের প্রতি সমর্থন এবং কৃতজ্ঞতা দেখানো উচিত।
সম্মান (Respect):
উভয় পক্ষকেই একে অপরের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। পরিবারের সদস্যদের কেয়ার গিভারের অভিজ্ঞতা এবং মতামতকে মূল্য দেওয়া উচিত, এবং কেয়ার গিভারকে পরিবারের রীতিনীতি এবং বিশ্বাস সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
সহযোগিতা (Collaboration):
কেয়ার গিভার এবং পরিবারের সদস্যদের একটি দল হিসেবে কাজ করা উচিত। রোগীর যত্ন নেওয়ার পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষের অংশগ্রহণ জরুরি।
ধৈর্য (Patience:)
সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়া কঠিন হতে পারে, এবং ভুল বোঝাবুঝি বা দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। এই সময়ে শান্ত থাকা এবং একে অপরের দৃষ্টিকোণ বোঝার চেষ্টা করা প্রয়োজনীয়।
সীমানা নির্ধারণ (Setting Boundaries):
সবার জন্য একটি সম্মানজনক কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কেয়ার গিভারের কাজের সময়, দায়িত্ব এবং ব্যক্তিগত সময় সম্পর্কে একটি চুক্তি তৈরি করা উচিত।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ (Expressing Gratitude):
কেয়ার গিভারের কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা তাদের মনোবল বাড়াতে সহায়ক। একটি সাধারণ ধন্যবাদ বা প্রশংসা তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে পারে।
কেয়ার গিভার বিষয়ক কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (Frequently Asked Questions – FAQs)
কেয়ার গিভার নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগতে পারে। নিচে কয়েকটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
কেয়ার গিভারের বেতন কত?
কেয়ার গিভারের বেতন অভিজ্ঞতা, কাজের ধরন এবং location-এর উপর নির্ভর করে। সাধারণত, একজন পেশাদার কেয়ার গিভারের বেতন মাসে ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে, লাইভ-ইন কেয়ার গিভারদের বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
কেয়ার গিভার কোথায় পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা কেয়ার গিভার সরবরাহ করে। এছাড়া, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং সোশ্যাল মিডিয়াতেও কেয়ার গিভারদের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কিছু পরিচিত প্রতিষ্ঠানের নাম হল:
- bdjobs.com
- care.com
- বিভিন্ন নার্সিং এজেন্সি
একজন ভালো কেয়ার গিভার কীভাবে খুঁজে পাবো?
একজন ভালো কেয়ার গিভার খুঁজে বের করার জন্য কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে:
- কেয়ার গিভারের অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা যাচাই করুন।
- তার পূর্ববর্তী কাজের রেফারেন্স (reference) চেক করুন।
- তার সাথে কথা বলে দেখুন, তিনি রোগীর প্রতি সহানুভূতিশীল কিনা।
- কেয়ার গিভারের background check করুন, যাতে তিনি কোনো criminal record-এর সাথে জড়িত না থাকেন।
পারিবারিক কেয়ার গিভারদের জন্য কী কী সুবিধা আছে?
পারিবারিক কেয়ার গিভারদের জন্য তেমন কোনো সরকারি সুবিধা নেই। তবে, কিছু বেসরকারি সংস্থা তাদের সহায়তা করে থাকে। অনেক দেশে পারিবারিক কেয়ার গিভারদের জন্য ট্যাক্স (tax) ছাড় এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা আছে।
কেয়ার গিভার নিয়োগ করার আগে কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত?
কেয়ার গিভার নিয়োগ করার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত:
- রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী কেয়ার গিভারের দক্ষতা আছে কিনা।
- কেয়ার গিভারের ব্যক্তিত্ব রোগীর সাথে মেলে কিনা।
- কেয়ার গিভারের কাজের সময় এবং বেতন আপনার বাজেটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা।
- কেয়ার গিভারের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট (health checkup report) যাচাই করুন।
কেয়ার গিভার কি শুধু বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন?
না, কেয়ার গিভার শুধু বয়স্কদের জন্য নয়, বরং যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য প্রয়োজন হতে পারে – যারা অসুস্থ, প্রতিবন্ধী অথবা যাদের বিশেষ যত্নের দরকার।
কেয়ার গিভারের বিকল্প (Alternatives to Caregivers)
যদি আপনার পরিবারের সদস্যের জন্য সার্বক্ষণিক কেয়ারগিভার নিয়োগ করা সম্ভব না হয়, তাহলে কিছু বিকল্প উপায় বিবেচনা করতে পারেন:
ডে কেয়ার সেন্টার (Day Care Center):
অনেক ডে কেয়ার সেন্টার বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সেবা প্রদান করে। এখানে তারা দিনের বেলা সামাজিক এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে, যা তাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক।
সহায়ক আবাসন (Assisted Living):
সহায়ক আবাসন হল এমন একটি আবাসন ব্যবস্থা যেখানে বয়স্ক ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করতে পারেন এবং প্রয়োজনে খাবার, পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো সহায়তা পেতে পারেন। এটি তাদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে এবং একই সাথে প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে সাহায্য করে।
হোম হেলথ কেয়ার (Home Health Care):
হোম হেলথ কেয়ারের মাধ্যমে নার্স বা থেরাপিস্টের মতো স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা বাড়িতে এসে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এটি उन लोगों के लिए उपयोगी हो सकता है जिन्हें चिकित्सा सहायता की जरूरत है, लेकिन वे घर पर ही रहना पसंद करते हैं।
দূরবর্তী পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি (Remote Monitoring Technology):
বর্তমানে অনেক প্রযুক্তি উপলব্ধ রয়েছে যা দূর থেকে রোগীর স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, স্মার্টওয়াচ এবং অন্যান্য পরিধানযোগ্য ডিভাইস রোগীর হৃদস্পন্দন, ঘুমের ধরণ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ট্র্যাক করতে পারে।
কেয়ার গিভারদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব (Our Responsibility Towards Caregivers)
কেয়ার গিভারদের প্রতি আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের কাজকে সম্মান করা, তাদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার প্রতি খেয়াল রাখা এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা আমাদের কর্তব্য। আসুন, আমরা সবাই মিলে কেয়ার গিভারদের জীবনকে আরও সহজ ও সুন্দর করি।
উপসংহার (Conclusion)
কেয়ার গিভার আমাদের সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ। তারা শুধু অসুস্থ বা বয়স্কদের যত্ন নেন না, বরং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতেও সহায়তা করেন। তাদের অসীম ত্যাগ, ধৈর্য এবং ভালোবাসার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। একজন কেয়ার গিভার হতে গেলে যেমন বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন, তেমনি তাদের প্রতি সমাজের সমর্থন ও সম্মানও জরুরি।
যদি আপনার পরিবারে কারো কেয়ার গিভারের প্রয়োজন হয়, তাহলে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে একজন ভালো কেয়ার গিভার নিয়োগ করুন। আর যদি আপনি নিজেই কেয়ার গিভার হতে চান, তাহলে সঠিক প্রশিক্ষণ নিয়ে এই মহান পেশায় নিজেকে যুক্ত করুন।
কেয়ার গিভার নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার অভিজ্ঞতাও আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ!