জীবনে চলার পথে কষ্ট আসবেই। কিন্তু সেই কষ্টের সময়ে হতাশ না হয়ে, আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং ইসলামিক উক্তিগুলো থেকে সান্ত্বনা খুঁজে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কষ্টকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়, সেই বিষয়ে আলোচনা করাই এই ব্লগ পোস্টের উদ্দেশ্য। কষ্টের মুহূর্তে কোন ইসলামিক উক্তিগুলো আমাদের শান্তি এনে দিতে পারে, সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন এখানে।
জীবনে দুঃখ আসবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মুমিনের হৃদয় আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসে পরিপূর্ণ থাকে। তাই কষ্টের সময় হতাশ না হয়ে সবরের পরিচয় দিন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।
মনে রাখবেন, প্রতিটি কষ্টের পরেই আসে আনন্দের দিন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে সুখ আছে।” (সূরা আশ-শারহ: ৬) তাই ধৈর্য ধরুন এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।
যখন কষ্ট আপনাকে ঘিরে ধরে, তখন বুঝবেন আল্লাহ আপনাকে পরীক্ষা করছেন। আর আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, তাকেই পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে আপনার মর্যাদা আরও বাড়বে।
দুনিয়া কষ্টের স্থান। এখানে আরাম-আয়েশের আশা করা বোকামি। মুমিনের আসল ঠিকানা জান্নাত, যেখানে কোনো কষ্ট নেই, কোনো দুঃখ নেই। তাই দুনিয়ার কষ্টকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সহ্য করুন।
হতাশ হবেন না। আল্লাহ সব দেখেন, সব জানেন। আপনার কষ্টের কথা তিনি শোনেন। তাঁর কাছে সাহায্য চান, তিনি অবশ্যই আপনার দোয়া কবুল করবেন।
মনে রাখবেন, কষ্টের পরে সুখ আসে। রাতের পরেই দিন আসে। তাই ধৈর্য ধরুন এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।
জীবন একটি পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস।
কোনো বিপদ এলে বলুন, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” অর্থাৎ, আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করব।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব।” (সূরা আল-বাকারা: ১৫২) তাই কষ্টের সময় আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করুন।
যখন আপনি কষ্টে থাকবেন, তখন বুঝবেন আল্লাহ আপনাকে তাঁর দিকে ডাকছেন। তাই তাঁর দিকে ফিরে আসুন এবং তাঁর কাছে সাহায্য চান।
১০০+কষ্ট নিয়ে ইসলামিক উক্তি
“নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে সুখ আছে।” – সূরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত ৬
“আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তার সামর্থ্যের চেয়ে বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৮৬
“সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫২
“ধৈর্য ধরো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” – সূরা আল-আনফাল, আয়াত ৪৬
“আল্লাহর সাহায্য নিকটেই আছে।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২১৪
“আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।” – সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৩৯
“যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ খুলে দেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না।” – সূরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩
“আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলো, আমি তো কাছেই আছি। আহ্বানকারী যখন আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দেই।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৬
“আর তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো, যখন তোমরা ছিলে শত্রু, অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে ভালোবাসার সঞ্চার করেন, ফলে তোমরা তার অনুগ্রহে ভাই ভাই হয়ে গেলে।” – সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১০৩
“যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে শান্তি লাভ করে। জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই অন্তর শান্তি পায়।” – সূরা আর-রাদ, আয়াত ২৮
“অবশ্যই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।” – সূরা আল-হুজরাত, আয়াত ৯
“আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা নিজেদের পবিত্র রাখে তাদেরকেও ভালোবাসেন।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২২২
“আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু।” – সূরা আল-জাসিয়া, আয়াত ১৯
“আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা সংযমী এবং যারা সৎকর্ম করে।” – সূরা আন-নাহল, আয়াত ১২৮
“তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান।” – সূরা আদ-দুখান, আয়াত ৮
“আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” – সূরা আল-মুজাদালা, আয়াত ১
“কোনো বিপদই আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত আসে না।” – সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত ১১
“আর তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং দুঃখিত হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।” – সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৩৯
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” – সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৩
“আর যখন আমি অসুস্থ হই, তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন।” – সূরা আশ-শুআরা, আয়াত ৮০
“আল্লাহর চেয়ে উত্তম ফয়সালাকারী আর কে হতে পারে?” – সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৫০
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।” – সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৭৫
“তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই প্রকাশ্য, তিনিই গোপন এবং তিনি সব বিষয়ে অবগত।” – সূরা আল-হাদিদ, আয়াত ৩
“আল্লাহর উপর ভরসা করো, আল্লাহই যথেষ্ট।” – সূরা আত-তালাক, আয়াত ৩
“দুশ্চিন্তা করবেন না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।” – সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৪০
“যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহান প্রতিদান।” – সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৯
“আল্লাহ সবচেয়ে বড়।”
“আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
“সব প্রশংসা আল্লাহর।”
“আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।”
“বিশ্বাসীরা অবশ্যই সফল হবে।” – সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত ১
“আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।” – সূরা আয-যুমার, আয়াত ৫৩
“ধৈর্য একটি উৎকৃষ্ট গুণ।”
“আল্লাহর সাহায্য অবশ্যই আসবে।”
“কষ্টের পরে শান্তি আছে।”
“আল্লাহর পথে সবকিছু সহজ হয়ে যায়।”
“আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
“আল্লাহর আদেশ মেনে চলো।”
“আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।”
“আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।”
“আল্লাহর নিকট দোয়া করো।”
“আল্লাহর নাম স্মরণ করো।”
“আল্লাহর ইবাদত করো।”
“আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করো।”
“আল্লাহর পথে জীবন চালাও।”
“মৃত্যুর পরে অনন্ত জীবন আছে।”
“জান্নাত মুমিনদের জন্য অপেক্ষা করছে।”
“জাহান্নাম পাপীদের জন্য প্রস্তুত।”
“আল্লাহর বিচার অবশ্যই হবে।”
“আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে।”
“দুনিয়া একটি ক্ষণস্থায়ী স্থান।”
“আখেরাত অনন্তকালের ঠিকানা।”
“ভালো কাজ করো, খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকো।”
“মানুষের উপকার করো।”
“গরীবদের সাহায্য করো।”
“অসহায়দের পাশে দাঁড়াও।”
“সত্য কথা বলো।”
“মিথ্যা কথা থেকে দূরে থাকো।”
“ওয়াদা রক্ষা করো।”
“আমল ভালো করো।”
“নিয়মিত নামাজ পড়ো।”
“রোজা রাখো।”
“যাকাত দাও।”
“হজ করো।”
“কোরআন তেলাওয়াত করো।”
“ইসলামের পথে চলো।”
“আল্লাহর আইন মেনে চলো।”
“নিজের জীবনকে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করো।”
“আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও, তিনি হতাশ করেন না।”
“কষ্ট মানুষকে পরিশুদ্ধ করে।”
“ধৈর্য ধরলে আল্লাহ প্রতিদান দেন।”
“আল্লাহর রাস্তায় কষ্ট সহ্য করা এবাদত।”
“কষ্টের সময় আল্লাহর উপর বিশ্বাস হারানো উচিত নয়।”
“আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা সবচেয়ে বড় শক্তি।”
“আল্লাহর কাছে সবকিছু সম্ভব।”
“আল্লাহর রহমত সবকিছুর ঊর্ধ্বে।”
“আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করেন।”
“আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তিনি কবুল করেন।”
“আল্লাহর কাছে চাইলে তিনি দেন।”
“আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করো, শান্তি পাবে।”
“দুঃখের পর সুখ আসবেই।”
“অন্ধকারের পর আলো আসবেই।”
“রাতের পর দিন আসবেই।”
“প্রত্যেক কষ্টের পর মুক্তি আছে।”
“আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে কোনো ভয় নেই।”
“আল্লাহই আমাদের একমাত্র ভরসা।”
“আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।”
“আল্লাহর কাছে আমরা সবাই ফিরে যাবো।”
“আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গ করাই সফলতা।”
“আল্লাহর সন্তুষ্টিই আমাদের জীবনের লক্ষ্য।”
“আল্লাহর কাছে চাওয়াটাই ইবাদত।”
“আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করা দুর্বলতা নয়, শক্তি।”
“আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া লজ্জা নয়, গর্ব।”
“আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া ভিক্ষা নয়, অধিকার।”
কষ্টের সময় যে ইসলামিক উক্তিগুলো আপনাকে সাহায্য করতে পারে
কষ্ট মানুষের জীবনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। প্রিয়জন হারানো, আর্থিক ক্ষতি, শারীরিক অসুস্থতা অথবা অন্য যেকোনো কারণে মানুষ কষ্ট পেতে পারে। এই কষ্টের সময়ে হতাশ না হয়ে ইসলামিক কিছু উক্তি আমাদের মনে শান্তি এনে দিতে পারে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে সাহায্য করে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক উক্তি উল্লেখ করা হলো:
১. “নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে।” (সূরা আল-ইনশিরাহ: ৬)
এই আয়াতটি আমাদের মনে আশা জাগায় যে কষ্টের পরেই সুখ আসবে। তাই কষ্টের সময় ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখা উচিত।
২. “আল্লাহ কোনো ব্যক্তির উপর তার সামর্থ্যের চেয়ে বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না।” (সূরা আল-বাকারা: ২৮৬)
এই আয়াতটি আমাদের জানায় যে আল্লাহ আমাদের সহ্য করার ক্ষমতার বাইরে কোনো কষ্ট দেন না। তাই যে কষ্টই আসুক না কেন, তা সহ্য করার শক্তি আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
৩. “সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব।” (সূরা আল-বাকারা: ১৫২)
কষ্টের সময়ে আল্লাহকে স্মরণ করলে মন শান্ত হয় এবং আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। তাই বেশি বেশি করে আল্লাহর জিকির করা উচিত।
৪. “ধৈর্য ধরো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল-আনফাল: ৪৬)
ধৈর্য একটি মহৎ গুণ। কষ্টের সময়ে ধৈর্য ধরলে আল্লাহ আমাদের সাথে থাকেন এবং সাহায্য করেন।
৫. “আল্লাহর সাহায্য নিকটেই আছে।” (সূরা আল-বাকারা: ২১৪)
কষ্টের সময়ে হতাশ না হয়ে আল্লাহর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। আল্লাহ অবশ্যই তাঁর বান্দাদের সাহায্য করেন।
কেন ইসলামিক উক্তিগুলো কষ্টের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ?
ইসলামিক উক্তিগুলো শুধু সান্ত্বনার বাণী নয়, এগুলোতে জীবন সম্পর্কে একটি গভীর দর্শন রয়েছে। এই উক্তিগুলো আমাদের শেখায় যে কষ্ট একটি পরীক্ষা এবং এর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের ঈমানকে যাচাই করেন। এছাড়া, ইসলামিক উক্তিগুলো আমাদের মনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও ভরসা বাড়াতে সাহায্য করে।
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস বৃদ্ধি করে
কষ্টের সময়ে ইসলামিক উক্তিগুলো আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস আরও দৃঢ় করে। যখন আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করছেন এবং তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন, তখন আমাদের মনে সাহস আসে।
২. মানসিক শান্তি এনে দেয়
কষ্টের সময়ে মন যখন ভেঙে যায়, তখন ইসলামিক উক্তিগুলো মানসিক শান্তি এনে দেয়। এই উক্তিগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং আসল জীবন আখেরাতে।
৩. সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে
কষ্টের সময়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে ভুল পথে পা বাড়াতে পারে। ইসলামিক উক্তিগুলো আমাদের সঠিক পথে চলতে এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করতে সাহায্য করে।
বাস্তব জীবনে ইসলামিক উক্তির প্রয়োগ
ইসলামিক উক্তিগুলো শুধু মুখস্ত করার জন্য নয়, এগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করার জন্য। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:
১. প্রিয়জন হারানোর কষ্ট
প্রিয়জন হারানোর কষ্ট অনেক কঠিন। এই সময়ে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” (আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করব) এই উক্তিটি পাঠ করলে মন শান্ত হয় এবং আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ে।
২. আর্থিক ক্ষতি
আর্থিক ক্ষতি হলে হতাশ না হয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত। “আল্লাহ রিজিকদাতা” – এই বিশ্বাস রেখে হালাল পথে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।
৩. শারীরিক অসুস্থতা
শারীরিক অসুস্থতা একটি কঠিন পরীক্ষা। এই সময়ে “আল্লাহ শিফা দানকারী” – এই বিশ্বাস রেখে চিকিৎসা করানো এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণে ধৈর্য (সবর)
ইসলামে সবরের গুরুত্ব অপরিসীম। সবর মানে শুধু চুপ করে কষ্ট সহ্য করা নয়, বরং আল্লাহর উপর ভরসা রেখে কষ্টের মোকাবেলা করা। কুরআনে সবরের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
১. সবরের প্রতিদান
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল-বাকারা: ১৫৩) এই আয়াতে আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন, যা একটি বিরাট প্রতিদান।
২. সবরের গুরুত্ব
সবর ঈমানের অর্ধেক। একজন মুমিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সবরের পরিচয় দেয়। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সব অবস্থায় আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকে।
৩. কিভাবে সবর করা যায়?
- আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা।
- নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করা।
- বেশি বেশি নফল ইবাদত করা।
- দুঃখী ও অভাবীদের সাহায্য করা।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণে শোক
শোক একটি স্বাভাবিক মানবিক অনুভূতি। তবে ইসলামে শোক পালনের কিছু নিয়মকানুন আছে।
১. নিয়ন্ত্রিত শোক
ইসলামে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করা, কাপড় ছেঁড়া অথবা অন্য কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি করা নিষেধ। শোকের সময় ধৈর্য ধারণ করতে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে বলা হয়েছে।
২. ধৈর্যের শিক্ষা
শোকের সময় ধৈর্য ধারণ করা একটি বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে আল্লাহ তায়ালা শোকাহত ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করেন।
৩. করণীয়
- মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
- তাদের ভালো কাজগুলো স্মরণ করা।
- তাদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি দেখানো।
কুরআনের আলোকে কষ্টের উদাহরণ
কুরআনে অনেক নবীর কষ্টের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এই কাহিনীগুলো আমাদের শিক্ষা দেয় যে কষ্ট শুধু আমাদের জীবনেই আসে না, বরং নবীদের জীবনেও এসেছে।
১. হযরত আইয়ুব (আঃ)-এর কষ্ট
হযরত আইয়ুব (আঃ) কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই রোগ ভোগ করেছেন, কিন্তু আল্লাহর প্রতি তাঁর বিশ্বাস হারাননি। অবশেষে আল্লাহ তাঁকে সুস্থ করে দেন এবং তাঁর সম্পদ ফিরিয়ে দেন।
২. হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কষ্ট
হযরত ইউসুফ (আঃ)-কে তাঁর ভাইয়েরা কূপে ফেলে দিয়েছিল। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন। কিন্তু তিনি আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তাঁকে মুক্তি দেন এবং মিশরের শাসনকর্তা বানান।
৩. হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর কষ্ট
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে মক্কার কাফেররা অনেক কষ্ট দিয়েছিল। তাঁকে তাঁর জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করেছিল। কিন্তু তিনি আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তাঁকে বিজয় দান করেন এবং মক্কায় ফিরিয়ে আনেন।
দুয়া: কষ্টের সময় আল্লাহর কাছে চাওয়ার ভাষা
কষ্টের সময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার জন্য কিছু দুয়া নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. দুয়া ইউনুস (আঃ)
“লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জ্বালিমিন।” (অর্থাৎ, আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই; আপনি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।)
২. সাধারণ দুয়া
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দালাইদদাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।” (অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের বোঝা ও মানুষেরdominance থেকে।)
৩. কুরআন থেকে নেয়া দুয়া
“রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াকিনা আজাবান্নার।” (অর্থাৎ, হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন এবং আখিরাতে কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে বাঁচান।)
কষ্টের সময়ে ইসলামিক উক্তিগুলো আমাদের জন্য এক বিশাল অনুপ্রেরণা। এই উক্তিগুলোর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারি, মানসিক শান্তি খুঁজে নিতে পারি, এবং সঠিক পথে চলতে পারি। তাই, যখনই কষ্ট আসবে, ইসলামিক উক্তিগুলো স্মরণ করুন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। নিশ্চয়ই তিনি আমাদের সহায় হবেন।
তাহলে, আপনারা যারা এই মুহূর্তে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য আমার তরফ থেকে একটাই কথা – ভেঙে পড়বেন না। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন, ধৈর্য ধরুন, এবং ইসলামিক উক্তিগুলো থেকে সান্ত্বনা খুঁজে নিন। মনে রাখবেন, কষ্টের পরেই সুখ আসে। আল্লাহ আপনাদের সহায় হোন। আমিন।