পরকীয়া! নামটি শুনলেই কেমন যেন একটা অস্বস্তি হয়, তাই না? চারপাশে কান পাতলেই শোনা যায় নানা গুঞ্জন। কিন্তু আসলে এই পরকীয়া জিনিসটা কী? আসুন, আজ আমরা এই জটিল বিষয়টিকে একটু সহজ করে জানার চেষ্টা করি। কোনো সম্পর্কের বাইরে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, এর পেছনের কারণ, সমাজের চোখে এর প্রভাব – সবকিছু নিয়েই আজ আলোচনা হবে।
পরকীয়া কী? (What is পরকীয়া?)
পরকীয়া শব্দটা শুনলেই মনে হয়, এটা নিশ্চয়ই কোনো জটিল বিষয়। তবে এর সংজ্ঞা কিন্তু বেশ সোজা। যখন কোনো ব্যক্তি বিবাহিত বা কোনো সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে প্রেমের সম্পর্ক বা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তখন তাকে পরকীয়া বলা হয়।
পরকীয়ার সংজ্ঞা আরেকটু গভীরে
পরকীয়ার সংজ্ঞা শুধু শারীরিক সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মানসিক আকর্ষণ, আবেগপূর্ণ কথোপকথন, অথবা ভালোবাসার অনুভূতিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ধরুন, আপনি বিবাহিত, কিন্তু আপনার অফিসের কোনো সহকর্মীর সাথে আপনার গভীর বন্ধুত্ব তৈরি হলো; আপনারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেন, একে অপরের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করেন – এটাও এক ধরনের পরকীয়া।
পরকীয়া কি শুধু বিবাহিতদের মধ্যেই হয়?
সাধারণভাবে, পরকীয়া শব্দটি বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে, যারা লিভ-ইন সম্পর্কে আছেন বা অন্য কোনো কমিটেড সম্পর্কে আছেন, তাদের ক্ষেত্রেও যদি কেউ অন্য সম্পর্কে জড়ায়, তবে সেটাকেও পরকীয়া বলা যেতে পারে। মূল বিষয় হলো, আপনি একটি সম্পর্কে আছেন এবং সেই সম্পর্কের বাইরে অন্য কারো সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছেন।
পরকীয়ার কারণগুলো কী কী? (Reasons Behind পরকীয়া)
পরকীয়া কেন হয়, তার কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণ নেই। মানুষ কেন পরকীয়ায় জড়ায়, তার পেছনে অনেকগুলো বিষয় কাজ করতে পারে। চলুন, কয়েকটি প্রধান কারণ জেনে নেওয়া যাক:
সম্পর্কের অভাব (Lack of Intimacy)
অনেক সময় দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মানসিক বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতা কমে গেলে একজন সঙ্গী পরকীয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। হয়তো তারা একে অপরের সাথে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছেন, একসাথে সময় কাটানো কমিয়ে দিয়েছেন, অথবা তাদের মধ্যে ভালোবাসার সেই আগের অনুভূতিটা আর নেই।
একঘেয়েমি (Monotony)
দীর্ঘদিনের সম্পর্কে অনেক সময় একঘেয়েমি চলে আসে। একই রুটিন, একই ধরনের আলোচনা – সব মিলিয়ে জীবনটা যেন পানসে হয়ে যায়। এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নতুন কিছু খোঁজেন, যা পরকীয়ার দিকে ধাবিত করে।
আকর্ষণ ও উত্তেজনা (Attraction and Excitement)
নতুন কারো প্রতি আকর্ষণ অনুভব করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই আকর্ষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তা পরকীয়ায় রূপ নিতে পারে। নতুন সম্পর্কের উত্তেজনা, রোমাঞ্চ মানুষকে আকৃষ্ট করে এবং তারা পুরনো সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
যোগাযোগের অভাব (Lack of communication)
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি ঠিকমতো যোগাযোগ না থাকে, তাহলে অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে। মনের কথা প্রকাশ করতে না পারা, একে অপরের চাহিদা বুঝতে না পারা – এগুলো ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়াতে থাকে।
যোগাযোগের অভাবে যা যা হতে পারে
- ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে
- মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়
- অসন্তোষ বাড়তে থাকে
প্রতিশোধ (Revenge)
কখনো কখনো প্রতিশোধের স্পৃহা থেকেও মানুষ পরকীয়ায় জড়াতে পারে। হয়তো আপনার সঙ্গী আপনাকে ঠকিয়েছে, আর আপনিও তাকে একই পথে জবাব দিতে চান। তবে, প্রতিশোধ কখনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না, বরং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
ব্যক্তিগত অতৃপ্তি (Personal dissatisfaction)
শারীরিক, মানসিক বা আবেগীয় চাহিদা অপূর্ণ থাকলে মানুষ পরকীয়ার দিকে ঝুঁকতে পারে।
পরকীয়ার প্রকারভেদ (Types of পরকীয়া)
পরকীয়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, এবং সব পরকীয়া দেখতে এক রকম নয়। কিছু পরকীয়া শারীরিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে হয়, আবার কিছু পরকীয়া মানসিক এবং আবেগীয় দিক থেকে বেশি শক্তিশালী হয়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:
শারীরিক পরকীয়া (Physical affair)
শারীরিক পরকীয়া হলো যখন কেউ তার সঙ্গীর সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া সত্ত্বেও অন্য কারো সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। এখানে আবেগ বা ভালোবাসার চেয়ে শারীরিক আকর্ষণটাই মুখ্য থাকে।
মানসিক পরকীয়া (Emotional affair)
মানসিক পরকীয়াতে শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে আবেগ ও অনুভূতির আদান-প্রদান বেশি গুরুত্ব পায়। এক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি তার সঙ্গীর বাইরে অন্য কারো সাথে গভীরভাবে মানসিক সংযোগ স্থাপন করে। তারা একে অপরের সাথে নিজেদের দুর্বলতা, ভয়, এবং স্বপ্নগুলো শেয়ার করে।
মানসিক পরকীয়ার কিছু উদাহরণ
- অফিসের কোনো সহকর্মীর সাথে গভীর বন্ধুত্ব
- পুরনো কোনো বন্ধুর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং আবেগ শেয়ার করা
- অনলাইনে কারো সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাট করা
সাইবার পরকীয়া (Cyber affair)
বর্তমান যুগে সাইবার পরকীয়া বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নতুন সম্পর্ক তৈরি হয়। মানুষ অনলাইনে একে অপরের সাথে চ্যাট করে, ছবি আদান-প্রদান করে এবং ভার্চুয়ালি ঘনিষ্ঠ হয়। যদিও এখানে সরাসরি শারীরিক সম্পর্ক নাও হতে পারে, তবে এর আবেগগত প্রভাব অনেক গভীর হতে পারে।
একরাতের সম্পর্ক (One-night stand)
এটি হলো ক্ষণস্থায়ী শারীরিক সম্পর্ক, যেখানে কোনো আবেগ বা দীর্ঘস্থায়ী সংযোগ থাকে না। সাধারণত, পার্টি বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে অল্প সময়ের পরিচয়ে এই ধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়।
ধারাবাহিক পরকীয়া (Serial affair)
কিছু মানুষ আছেন যারা একের পর এক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারা হয়তো একটি সম্পর্ক শেষ হওয়ার আগেই অন্য একটি সম্পর্ক শুরু করে দেন। এদের কাছে পরকীয়া একটা অভ্যাসে পরিণত হয়।
পরকীয়ার সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব (Social and Psychological effects of পরকীয়া)
পরকীয়া শুধু একটি ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এর সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব অনেক গভীর। এটি একটি পরিবারকে ভেঙে দিতে পারে, সমাজে অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারে এবং মানুষের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।
পারিবারিক ভাঙ্গন (Family Breakdown)
পরকীয়ার কারণে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় পরিবারের। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে, যা বিবাহ বিচ্ছেদের দিকেও যেতে পারে। সন্তানেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ তারা তাদের বাবা-মাকে একসাথে পায় না।
মানসিক আঘাত (Psychological Trauma)
পরকীয়ার কারণে স্বামী বা স্ত্রী উভয়েই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। তারা নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন, বিষণ্ণতায় ভোগেন এবং জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এছাড়া, তারা অপরাধবোধ, লজ্জা এবং অনুশোচনায় ভুগতে পারেন।
সামাজিক কলঙ্ক (Social Stigma)
পরকীয়া সমাজে একটি কলঙ্ক হিসেবে বিবেচিত হয়। মানুষ পরকীয়ার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের খারাপ চোখে দেখে এবং তাদের সমালোচনা করে। এর ফলে, সেই ব্যক্তি সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে যেতে পারে।
আর্থিক সমস্যা (Financial Problems)
বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে অনেক সময় আর্থিক সমস্যা দেখা দেয়। সম্পত্তি ভাগাভাগি, ভরণপোষণ এবং অন্যান্য আইনি জটিলতার কারণে পরিবার আর্থিক কষ্টের মধ্যে পড়তে পারে।
শিশুদের উপর প্রভাব(Effect on children)
সন্তানদের উপর এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। তারা মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারে, স্কুলে খারাপ ফল করতে পারে এবং তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিতে পারে। অনেক সময় তারা বাবা-মার প্রতি ক্ষুব্ধ হতে পারে এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ হয়ে যেতে পারে।
পরকীয়া থেকে বাঁচার উপায় (How to prevent পরকীয়া)
পরকীয়া একটি জটিল সমস্যা, তবে কিছু উপায় অবলম্বন করে এটি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। সম্পর্ককে মজবুত রাখা, একে অপরের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং নিয়মিত আলোচনা করার মাধ্যমে পরকীয়া প্রতিরোধ করা যায়।
যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন (Increase communication)
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হওয়া খুব জরুরি। নিজেদের অনুভূতি, চাহিদা এবং সমস্যাগুলো একে অপরের সাথে শেয়ার করুন। নিয়মিত কথা বলার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস এবং বোঝাপড়া বাড়বে।
সময় দিন (Spend quality time)
কাজের ব্যস্ততার মাঝেও নিজেদের জন্য সময় বের করুন। একসাথে ঘুরতে যান, সিনেমা দেখুন, অথবা কোনো শখের কাজ করুন। এই সময়টুকু আপনাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।
রোমান্স ধরে রাখুন (Keep the romance alive)
সম্পর্কের শুরুতে যেমন রোমান্স ছিল, তা ধরে রাখার চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে ছোটখাটো উপহার দিন, ভালোবাসার কথা বলুন এবং একে অপরের প্রতি আকর্ষণ ধরে রাখুন।
পরামর্শ নিন (Take professional help)
যদি দেখেন যে সমস্যাগুলো নিজেরা সমাধান করতে পারছেন না, তাহলে একজন ভালো সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তারা আপনাদের সমস্যাগুলো বুঝতে এবং সঠিক পথ দেখাতে সাহায্য করতে পারেন।
ক্ষমা করতে শিখুন (Learn to forgive)
জীবনে ভুল হতেই পারে। যদি আপনার সঙ্গী কোনো ভুল করে থাকে, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিন এবং নতুন করে শুরু করুন। ক্ষমা করার মাধ্যমে সম্পর্কের তিক্ততা কমে যায় এবং ভালোবাসা বাড়ে।
পরকীয়া নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (Frequently Asked Questions about পরকীয়া)
পরকীয়া নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
পরকীয়া কি সবসময় খারাপ?
পরকীয়া সাধারণত খারাপ হিসেবেই বিবেচিত হয়, কারণ এটি বিশ্বাস, সম্মান এবং ভালোবাসার লঙ্ঘন করে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে মানুষ মনে করে যে তাদের সম্পর্কের উন্নতি বা ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য এটি প্রয়োজনীয় ছিল। এমন পরিস্থিতিতে, বিষয়টি জটিল হয়ে দাঁড়ায় এবং এর মূল্যায়ন ব্যক্তি ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
মানসিক পরকীয়া কি শারীরিক পরকীয়ার মতো খারাপ?
মানসিক পরকীয়াও শারীরিক পরকীয়ার মতোই ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ এটি আবেগগতভাবে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে, যা মূল সম্পর্কের প্রতি অবহেলা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, মানসিক পরকীয়া শারীরিক পরকীয়ার চেয়েও বেশি বেদনাদায়ক হতে পারে, কারণ এখানে বিশ্বাসের অভাব এবং মানসিক প্রতারণা জড়িত থাকে।
পরকীয়া কি সম্পর্ক মেরামতের সুযোগ দেয়?
কিছু ক্ষেত্রে, পরকীয়া একটি সম্পর্কের দুর্বলতাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এবং সঙ্গীকে সম্পর্ক মেরামতের সুযোগ দেয়। তবে, এর জন্য উভয়পক্ষের সৎ ইচ্ছা, ক্ষমা এবং পরিবর্তনের মানসিকতা থাকতে হয়। যদি দুজনেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায়, তবে পারস্পরিক আলোচনা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শের মাধ্যমে এটি সম্ভব।
কীভাবে বুঝবেন আপনার সঙ্গী পরকীয়ায় জড়িত?
সঙ্গীর কিছু আচরণ এবং অভ্যাসের পরিবর্তন দেখে আপনি সন্দেহ করতে পারেন। যেমন-
- হঠাৎ করে ফোন বা কম্পিউটারের প্রতি বেশি মনোযোগ দেওয়া
- আগে যে বিষয়ে আগ্রহ ছিল, সেগুলোতে আগ্রহ কমে যাওয়া
- শারীরিক বা মানসিক দূরত্ব তৈরি হওয়া
- অতিরিক্ত কাজের চাপের কথা বলা বা দেরিতে বাড়ি ফেরা
পরকীয়া থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
পরকীয়া থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রথমে নিজের ভুল স্বীকার করতে হবে এবং সঙ্গীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে পুরোনো সম্পর্ককে নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে, ধৈর্য এবং সময় দুটোই খুব জরুরি।
পরকীয়ার আইনি দিক (Legal aspects of পরকীয়া)
আমাদের দেশে পরকীয়া একটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি জানেন যে কোনো মহিলা অন্য কারো স্ত্রী, এবং সেই মহিলার স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে সেই ব্যক্তি পরকীয়ার অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। এই অপরাধের জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয়ই হতে পারে। তবে, এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, পরকীয়ার দায়ে শুধুমাত্র পুরুষদের শাস্তি হয়, মহিলাদের নয়।
পরকীয়ার শিকার হলে কী করবেন?
যদি আপনি পরকীয়ার শিকার হন, তাহলে প্রথমে শান্ত থাকুন এবং পরিস্থিতি ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। এরপর, আপনার সঙ্গীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন এবং তার কাছ থেকে এর কারণ জানার চেষ্টা করুন। যদি আপনারা দুজনেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চান, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। আর যদি মনে করেন যে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, তাহলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
পরকীয়া: একটি জটিল সামাজিক সমস্যা ( পরকীয়া: A Complex Social Problem )
পরকীয়া একটি জটিল সামাজিক সমস্যা। এর কারণ, প্রভাব এবং সমাধান সবকিছুই জটিল। তবে, সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। সুখী এবং সুন্দর জীবনযাপন করার জন্য পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং সম্মান খুব জরুরি।
পরকীয়া নিয়ে এত আলোচনার পর, আশা করি আপনি বিষয়টি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। কোনো প্রশ্ন থাকলে, নিঃসঙ্কোচে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।