আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই ভালো। ব্যাকরণ নিয়ে ভয় পাচ্ছেন? ভয় পাওয়ার কিছু নেই! আজকে আমরা বাংলা ব্যাকরণের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব – Reflexive Pronoun বা আত্মবাচক সর্বনাম। এটা আসলে কী, কেন দরকার, আর কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, সেই সবকিছু সহজভাবে বুঝিয়ে দেব। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
আজকের বিষয়: Reflexive Pronoun কাকে বলে? (Reflexive Pronoun Kake Bole?)
আচ্ছা, একটা মজার গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। ধরুন, আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছেন। আপনি দেখছেন কাকে? নিজেকেই তো, তাই না? Reflexive Pronoun অনেকটা এইরকমই। যখন কোনো বাক্যে কর্তা (Subject) নিজের দিকেই নির্দেশ করে, তখন সেটা Reflexive Pronoun হয়ে যায়।
আত্মবাচক সর্বনাম (Reflexive Pronoun) কি?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, Reflexive Pronoun হলো সেই সর্বনাম, যা বাক্যের Subject বা কর্তা যখন নিজের সম্পর্কে কিছু বলে বা কাজটা নিজের উপরই করে, তখন ব্যবহৃত হয়। এই সর্বনামগুলো সাধারণত “নিজ”, “নিজেকে”, “স্বয়ং” ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে গঠিত হয়।
আত্মবাচক সর্বনাম কিভাবে গঠিত হয়?
আত্মবাচক সর্বনাম তৈরি করার নিয়ম খুবই সোজা। সাধারণত, ব্যক্তিবাচক সর্বনামের সঙ্গে “নিজ”, “নিজেকে”, “স্বয়ং” ইত্যাদি যুক্ত করে এগুলো তৈরি করা হয়।
যেমন:
- আমি → আমি নিজে/নিজেকে
- তুমি → তুমি নিজে/নিজেকে
- সে → সে নিজে/নিজেকে/স্বয়ং
- আমরা → আমরা নিজেরা/ নিজেদেরকে
- তোমরা → তোমরা নিজেরা/ নিজেদেরকে
- তারা → তারা নিজেরা/ নিজেদেরকে/স্বয়ং
উদাহরণ দিয়ে বুঝুন:
- আমি নিজেকে দেখেছি। (Ami nijeke dekhechi) – এখানে ‘নিজেকে’ Reflexive Pronoun, কারণ ‘আমি’ নিজেকে দেখার কাজটি করছি।
- সে নিজেই কাজটি করেছে। (Se nijei kajti koreche) – এখানে ‘নিজেই’ Reflexive Pronoun, কারণ ‘সে’ কাজটি নিজে করেছে।
- তোমরা নিজেদের ভুল স্বীকার করো। (Tomra nijeder bhul স্বীকার koro) – এখানে ‘নিজেদের’ Reflexive Pronoun, কারণ ‘তোমরা’ নিজেদের ভুল স্বীকার করছো।
Reflexive Pronoun এর ব্যবহার
বাংলা ব্যাকরণে Reflexive Pronoun এর ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এর কয়েকটি ব্যবহার আলোচনা করা হলো:
কর্তা যখন নিজের উপর কাজ করে
যখন বাক্যের কর্তা (Subject) কোনো কাজ করে এবং সেই কাজের ফল তার নিজের উপরেই বর্তায়, তখন Reflexive Pronoun ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
- আমি নিজেকে প্রস্তুত করছি। (Ami nijeke prostut korchi.)
- সে নিজেকে সাজাচ্ছে। (Se nijeke sajaচ্ছে।)
- আমরা নিজেদের রক্ষা করি। (Amra nijeder roksha kori.)
জোর দেওয়া বা বিশেষত্ব বোঝাতে
অনেক সময় কোনো কাজের উপর জোর দেওয়ার জন্য বা বিশেষত্ব বোঝানোর জন্য Reflexive Pronoun ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ:
- আমি নিজেই এই কাজটি করেছি। (Ami nijei ei kajti korechi.)
- তিনি স্বয়ং আমাকে বলেছিলেন। (Tini shoyong amake bolechilen.)
- সে নিজেই সবকিছু সামলাতে পারবে। (Se nijei sobkichu samlate parbe.)
অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার
Reflexive Pronoun আরও কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- “আপনি” দিয়ে সম্মান করে কথা বলার সময়: তিনি নিজেই এসেছিলেন।(Tini nijei esechilen.)
- কোনো ঘটনার আকস্মিকতা বোঝাতে: আমি নিজেকে আটকাতে পারিনি। (Ami nijeke atkate parini.)
- দায়িত্ব বা কর্তব্য বোঝাতে: আমাদের নিজেদের দেশের জন্য কাজ করতে হবে। (Amader nijeder desher jonno kaj korte hobe.)
Reflexive ও Emphatic Pronoun এর মধ্যে পার্থক্য
Reflexive Pronoun এবং Emphatic Pronoun প্রায় একই রকম দেখতে হলেও এদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারাটা জরুরি, যাতে এদের ব্যবহার সঠিকভাবে করা যায়।
গঠন এবং কাজ
-
Reflexive Pronoun: বাক্যে Subject যখন কোনো কাজ করে এবং সেই কাজের ফল Subject-এর উপরেই ফিরে আসে, তখন Reflexive Pronoun ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত verb-এর object হিসেবে কাজ করে। উদাহরণ: আমি নিজেকে দেখেছি। (Ami nijeke dekhechi.) এখানে ‘নিজেকে’ object হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
-
Emphatic Pronoun: Emphatic Pronoun বাক্যের Subject বা অন্য কোনো noun-এর উপর জোর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি বাক্যের অপরিহার্য অংশ নয়; একে বাদ দিলেও বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ থাকে। উদাহরণ: আমি নিজেই কাজটি করেছি। (Ami nijei kajti korechi.) এখানে ‘নিজেই’ ‘আমি’-এর উপর জোর দিচ্ছে।
অবস্থান
-
Reflexive Pronoun: সাধারণত verb-এর পরে বসে এবং object এর ভূমিকা পালন করে।
-
Emphatic Pronoun: সাধারণত noun বা pronoun-এর ঠিক পরেই বসে, যার উপর এটি জোর দেয়।
উদাহরণ দিয়ে পার্থক্য বুঝুন
বৈশিষ্ট্য | Reflexive Pronoun | Emphatic Pronoun |
---|---|---|
কাজ | কর্ম বা object হিসেবে ব্যবহৃত হয়। | জোর দেওয়া বা বিশেষত্ব বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। |
অবস্থান | Verb এর পরে বসে। | Noun বা pronoun এর পরে বসে। |
বাদ দিলে অর্থ | বাদ দিলে বাক্যের অর্থ অসম্পূর্ণ থাকে। | বাদ দিলেও বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ থাকে। |
উদাহরণ | আমি নিজেকে ভালোবাসি। (Ami nijeke bhalobasi.) | আমি নিজেই এটা করেছি। (Ami nijei eta korechi.) |
এই পার্থক্যগুলো মনে রাখলে Reflexive Pronoun এবং Emphatic Pronoun ব্যবহার করা সহজ হবে।
বিভিন্ন প্রকার আত্মবাচক সর্বনাম
বাংলা ব্যাকরণে আত্মবাচক সর্বনামের বিভিন্ন রূপ রয়েছে, যা ব্যক্তি ও বচনভেদে ভিন্ন হয়। নিচে এই রূপগুলো আলোচনা করা হলো:
ব্যক্তিভেদে আত্মবাচক সর্বনাম
বাংলায় তিনটি পুরুষ বা ব্যক্তি রয়েছে: প্রথম পুরুষ (উত্তম পুরুষ), দ্বিতীয় পুরুষ (মধ্যম পুরুষ), এবং তৃতীয় পুরুষ (নাম পুরুষ)। এই তিনটি পুরুষের জন্য আত্মবাচক সর্বনামের রূপ ভিন্ন হয়।
উত্তম পুরুষ (First Person)
উত্তম পুরুষে “আমি” এবং “আমরা” ব্যবহৃত হয়। এর আত্মবাচক রূপগুলো হলো:
- আমি: আমি নিজে, আমাকে নিজে, নিজেকে
- উদাহরণ: আমি নিজেকে চিনি। (Ami nijeke chini.)
- আমরা: আমরা নিজে, আমাদেরকে নিজে, নিজেদেরকে, আমরা নিজেরা
- উদাহরণ: আমরা নিজেদের তৈরি করি। (Amra nijeder toiri kori.)
মধ্যম পুরুষ (Second Person)
মধ্যম পুরুষে “তুমি”, “আপনি” এবং “তোমরা” ব্যবহৃত হয়। এর আত্মবাচক রূপগুলো হলো:
- তুমি: তুমি নিজে, তোমাকে নিজে, নিজেকে
- উদাহরণ: তুমি নিজেকে সামলাও। (Tumi nijeke samlao.)
- আপনি: আপনি নিজে, আপনাকে নিজে, নিজেকে, আপনি স্বয়ং
- উদাহরণ: আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন। (Apni nijeke prashno korun.)
- তোমরা: তোমরা নিজে, তোমাদেরকে নিজে, নিজেদেরকে, তোমরা নিজেরা
- উদাহরণ: তোমরা নিজেদের সংশোধন করো। (Tomra nijeder songshodhon koro.)
নাম পুরুষ (Third Person)
নাম পুরুষে “সে”, “তিনি”, “তারা” এবং অন্যান্য নাম ব্যবহৃত হয়। এর আত্মবাচক রূপগুলো হলো:
- সে: সে নিজে, তাকে নিজে, নিজেকে, সে স্বয়ং
- উদাহরণ: সে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে। (Se nijeke lukiye rekheche.)
- তিনি: তিনি নিজে, তাঁকে নিজে, নিজেকে, তিনি স্বয়ং
- উদাহরণ: তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। (Tini nijeke utsorgo korechen.)
- তারা: তারা নিজে, তাদেরকে নিজে, নিজেদেরকে, তারা নিজেরা, তারা স্বয়ং
- উদাহরণ: তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। (Tara nijeder moddhe alochona korche.)
বচনভেদে আত্মবাচক সর্বনাম
বাংলায় বচন দুইটি: একবচন ও বহুবচন। বচনভেদেও আত্মবাচক সর্বনামের রূপের পরিবর্তন হয়।
একবচন (Singular)
একবচনে ব্যবহৃত আত্মবাচক সর্বনামগুলো হলো:
- আমি নিজে, তুমি নিজে, সে নিজে, আপনি নিজে, নিজেকে, স্বয়ং
- উদাহরণ: সে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। (Se nijeke bachanor chesta korche.)
বহুবচন (Plural)
বহুবচনে ব্যবহৃত আত্মবাচক সর্বনামগুলো হলো:
- আমরা নিজেরা, তোমরা নিজেরা, তারা নিজেরা, নিজেদেরকে
- উদাহরণ: তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। (Tara nijeder bhobishot niye chintito.)
আত্মবাচক সর্বনাম চেনার সহজ উপায়
আত্মবাচক সর্বনাম (Reflexive Pronoun) চেনার জন্য কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করতে পারেন। এতে করে বাক্য দেখে সহজেই বুঝতে পারবেন যে সেটি আত্মবাচক সর্বনাম কিনা। নিচে কয়েকটি টিপস দেওয়া হলো:
“নিজ” অথবা “স্বয়ং” শব্দটির উপস্থিতি
আত্মবাচক সর্বনামগুলোতে সাধারণত “নিজ”, “নিজেকে”, “নিজেদের”, “নিজেদেরকে” অথবা “স্বয়ং” শব্দগুলো থাকে। যদি কোনো বাক্যে এই শব্দগুলো দেখেন, তাহলে সেটি আত্মবাচক সর্বনাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
উদাহরণ:
- সে নিজেই কাজটি করেছে। (Se nijei kajti koreche.)
- আমি নিজেকে দেখেছি। (Ami nijeke dekhechi.)
- তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। (Tara nijeder bhul bujhte pereche.)
কর্তা (Subject)-এর উপর কাজের প্রভাব
আত্মবাচক সর্বনামে কর্তা (Subject) যে কাজটি করে, তার প্রভাব সরাসরি কর্তার উপরেই পরে। অর্থাৎ, কর্তা নিজের উপরেই কাজটি করে।
উদাহরণ:
- আমি নিজেকে আঘাত করেছি। (Ami nijeke আঘাত korechi.) – এখানে আঘাত করার কাজটি আমি করেছি এবং এর প্রভাবও আমার উপরেই পরেছে।
বাক্য থেকে “নিজ” সরিয়ে দিলে
অনেক সময় বাক্য থেকে “নিজ” বা “নিজেকে” সরিয়ে দিলে বাক্যের অর্থ অসম্পূর্ণ হয়ে যায় অথবা বাক্যটি বেমানান লাগে।
উদাহরণ:
- আমি নিজেকে ভালোবাসি। (Ami nijeke bhalobasi.) – এখানে “নিজেকে” সরিয়ে দিলে হয় “আমি ভালোবাসি”, যা একটি অসম্পূর্ণ বাক্য।
Reflexive Pronoun বাক্যের Object হিসেবে কাজ করে
আত্মবাচক সর্বনাম সাধারণত বাক্যের Object হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, এটি Verb এর পরে বসে এবং কর্তার দ্বারা করা কাজের ফল গ্রহণ করে।
উদাহরণ:
- সে নিজেকে তৈরি করছে। (Se nijeke toiri korche.) – এখানে “নিজেকে” Object হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
Reflexive Pronoun এবং Emphatic Pronoun মনে রাখার সহজ উপায়
Reflexive pronoun বাক্যের অংশ এবং Emphatic pronoun জোর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
এবার কিছু সাধারণ ভুল নিয়ে আলোচনা করা যাক, যেগুলো আত্মবাচক সর্বনাম ব্যবহার করার সময় হয়ে থাকে, এবং সেগুলো কিভাবে সংশোধন করা যায়।
সাধারণ ভুল এবং সংশোধন
আত্মবাচক সর্বনাম ব্যবহার করার সময় কিছু সাধারণ ভুল প্রায়ই দেখা যায়। এই ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পারা এবং সেগুলো সংশোধন করতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কয়েকটি সাধারণ ভুল এবং তাদের সংশোধনের উপায় আলোচনা করা হলো:
ভুল ১: Reflexive ও Personal Pronoun এর মধ্যে পার্থক্য করতে না পারা
অনেকেই Reflexive Pronoun এবং Personal Pronoun (ব্যক্তিবাচক সর্বনাম)-এর মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন।
- ভুল উদাহরণ: আমি আমাকে ভালোবাসি। (Ami amake bhalobasi.)
- সঠিক উদাহরণ: আমি নিজেকে ভালোবাসি। (Ami nijeke bhalobasi.)
এখানে “আমাকে” Personal Pronoun, যা ব্যবহার করা ভুল। সঠিক হলো “নিজেকে”, যা Reflexive Pronoun।
ভুল ২: Emphatic Pronoun এর সাথে গুলিয়ে ফেলা
Emphatic Pronoun (জোর দেওয়া সর্বনাম) দেখতে Reflexive Pronoun-এর মতোই, কিন্তু এদের কাজ ভিন্ন। Emphatic Pronoun বাক্যে জোর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে Reflexive Pronoun কর্ম হিসেবে কাজ করে।
- ভুল উদাহরণ: আমি নিজেই কাজটি করেছি, নিজেকে ভালো লাগে। (Ami nijei kajti korechi, nijeke bhalo lage.)
- সঠিক উদাহরণ: আমি নিজেই কাজটি করেছি, তাই নিজেকে ভালো লাগে। (Ami nijei kajti korechi, tai nijeke bhalo lage.)
এখানে প্রথম “নিজেই” Emphatic Pronoun এবং দ্বিতীয় “নিজেকে” Reflexive Pronoun হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
ভুল ৩: বচন অনুযায়ী সর্বনাম ব্যবহার না করা
বচন (Number) অনুযায়ী সর্বনামের রূপ পরিবর্তন হয়। একবচন এবং বহুবচনে Reflexive Pronoun-এর রূপ ভিন্ন হয়, তাই এটি খেয়াল রাখা জরুরি।
- ভুল উদাহরণ: তারা নিজেকে সাহায্য করছে। (Tara nijeke sahajjo korche.)
- সঠিক উদাহরণ: তারা নিজেদেরকে সাহায্য করছে। (Tara nijederke sahajjo korche.)
“তারা” বহুবচন, তাই এখানে “নিজেকে” না হয়ে “নিজেদেরকে” হবে।
ভুল ৪: লিঙ্গ অনুযায়ী সর্বনাম ব্যবহার না করা
পুরুষবাচক ও স্ত্রীবাচক শব্দের ক্ষেত্রে Reflexive Pronoun-এর ব্যবহার ভিন্ন হতে পারে।
- ভুল উদাহরণ: সে নিজেকে কাজটি দিয়েছে। (Se nijeke kajti diyeche.)
- সঠিক উদাহরণ: সে নিজে কাজটি করেছে। (Se nije kajti koreche.)
ভুল ৫: অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার
কখনো কখনো বাক্যে Reflexive Pronoun-এর প্রয়োজন না থাকলেও অনেকে ব্যবহার করে, যা বাক্যটিকে ভুল করে তোলে।
- ভুল উদাহরণ: আমি নিজে গেয়েছি। (Ami nije geyechi.)
- সঠিক উদাহরণ: আমি গেয়েছি। (Ami geyechi.) অথবা আমি নিজেই গেয়েছি। (Ami nijei geyechi.)
যদি জোর দিতে চান তাহলে “নিজেই” ব্যবহার করতে পারেন, অন্যথায় শুধু “আমি গেয়েছি” বলাই যথেষ্ট।
নিচে একটি টেবিলের মাধ্যমে এই ভুলগুলো এবং তাদের সংশোধনগুলো দেখানো হলো:
ভুল | সঠিক | ব্যাখ্যা |
---|---|---|
আমি আমাকে ভালোবাসি। | আমি নিজেকে ভালোবাসি। | Reflexive ও Personal Pronoun এর পার্থক্য। |
আমি নিজেই কাজটি করেছি, নিজেকে ভালো লাগে। | আমি নিজেই কাজটি করেছি, তাই নিজেকে ভালো লাগে। | Emphatic Pronoun এর সাথে পার্থক্য। |
তারা নিজেকে সাহায্য করছে। | তারা নিজেদেরকে সাহায্য করছে। | বচন অনুযায়ী সর্বনাম ব্যবহার। |
সে নিজেকে কাজটি দিয়েছে। | সে নিজে কাজটি করেছে। | লিঙ্গ অনুযায়ী সর্বনাম ব্যবহার। |
আমি নিজে গেয়েছি। | আমি গেয়েছি। অথবা আমি নিজেই গেয়েছি। | অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার পরিহার। |
এই সাধারণ ভুলগুলো চিহ্নিত করে এবং উপরের সংশোধনগুলো অনুসরণ করে আপনি আত্মবাচক সর্বনামের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবেন।
অনুশীলন এবং কুইজ
এতক্ষণ তো অনেক আলোচনা হলো, এবার একটু যাচাই করা যাক আপনি কতোটা বুঝতে পেরেছেন। নিচে একটা ছোট কুইজ দেওয়া হলো। চেষ্টা করুন উত্তর দেওয়ার।
১. নিচের কোন বাক্যে আত্মবাচক সর্বনাম ব্যবহৃত হয়েছে?
ক. আমি ভাত খাই।
খ. সে গান গায়।
গ. আমি নিজেকে চিনি।
ঘ. তারা ফুটবল খেলে।
২. “তোমরা নিজেদের ভুল স্বীকার করো” – এখানে আত্মবাচক সর্বনাম কোনটি?
ক. তোমরা
খ. নিজেদের
গ. ভুল
ঘ. স্বীকার
৩. “সে নিজেই কাজটি করেছে” – এই বাক্যে “নিজেই” কোন ধরনের সর্বনাম?
ক. ব্যক্তিবাচক সর্বনাম
খ. আত্মবাচক সর্বনাম
গ. নির্দেশক সর্বনাম
ঘ. প্রশ্নবোধক সর্বনাম
৪. “আমরা নিজেদের রক্ষা করি” – এই বাক্যে “নিজেদের” কোন বচনে আছে?
ক. একবচন
খ. দ্বিবচন
গ. বহুবচন
ঘ. উভয়
৫. আত্মবাচক সর্বনাম চেনার সহজ উপায় কী?
ক. বাক্যে “আমি” থাকা
খ. বাক্যে “নিজ” অথবা “স্বয়ং” থাকা
গ. বাক্যে প্রশ্ন করা
ঘ. বাক্যে আদেশ করা
উত্তরমালা:
১. গ, ২. খ, ৩. খ, ৪. গ, ৫. খ
যদি সবগুলো উত্তর সঠিক হয়, তাহলে বুঝবেন আপনি আত্মবাচক সর্বনাম ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আর যদি ভুল হয়, তাহলে আরেকবার আর্টিকেলটি পড়ুন।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
- প্রশ্ন: আত্মবাচক সর্বনাম (Reflexive Pronoun) কাকে বলে?
- উত্তর: যখন কোনো বাক্যের কর্তা (Subject) নিজের দিকেই নির্দেশ করে, তখন সেটি আত্মবাচক সর্বনাম। অর্থাৎ, কর্তা যখন কোনো কাজ করে এবং সেই কাজের ফল তার নিজের উপরেই বর্তায়, তখন Reflexive Pronoun ব্যবহৃত হয়।
- প্রশ্ন: আত্মবাচক সর্বনাম কিভাবে গঠিত হয়?
- উত্তর: ব্যক্তিবাচক সর্বনামের সাথে “নিজ”, “নিজেকে”, “স্বয়ং” ইত্যাদি যুক্ত করে আত্মবাচক সর্বনাম গঠিত হয়। যেমন: আমি নিজে, তুমি নিজে, সে নিজে, আমরা নিজেরা ইত্যাদি।
- প্রশ্ন: আত্মবাচক সর্বনাম এবং সাধারণ সর্বনামের মধ্যে পার্থক্য কী?
- উত্তর: আত্মবাচক সর্বনামে কর্তা নিজের উপর কাজ করে, কিন্তু সাধারণ সর্বনামে কর্তা অন্য কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে। উদাহরণ: আমি ভাত খাই (সাধারণ সর্বনাম), আমি নিজেকে চিনি (আত্মবাচক সর্বনাম)।
- প্রশ্ন: Emphatic Pronoun কিভাবে Reflexive Pronoun থেকে আলাদা?
- উত্তর: Emphatic Pronoun বাক্যের Subject বা অন্য কোনো noun-এর উপর জোর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি বাক্যের অপরিহার্য অংশ নয়, বাদ দিলেও অর্থ ঠিক থাকে। অন্যদিকে, Reflexive Pronoun বাক্যের অংশ এবং verb-এর object হিসেবে কাজ করে।
- প্রশ্ন: আত্মবাচক সর্বনামের কিছু উদাহরণ দিন।
- উত্তর: আমি নিজেকে দেখেছি, সে নিজেই কাজটি করেছে, তোমরা নিজেদের ভুল স্বীকার করো, আমরা নিজেদের রক্ষা করি ইত্যাদি।
- প্রশ্ন: “স্বয়ং” কিভাবে আত্মবাচক সর্বনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
- উত্তর: “স্বয়ং” শব্দটি কোনো ব্যক্তি নিজে কাজটি করেছে—এমন জোর বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: তিনি স্বয়ং আমাকে বলেছিলেন।
secondary keywords
- Reflexive Pronoun এর সংজ্ঞা
- Reflexive Pronoun এর প্রকারভেদ
- Reflexive Pronoun এর উদাহরণ
- Reflexive Pronoun কিভাবে চিনতে হয়
- Reflexive Pronoun এর ব্যবহার
- আত্মবাচক সর্বনাম কাকে বলে
- বাংলা ব্যাকরণে আত্মবাচক সর্বনাম
- Reflexive ও Emphatic Pronoun এর পার্থক্য
- বিভিন্ন প্রকার আত্মবাচক সর্বনাম
- আত্মবাচক সর্বনাম চেনার সহজ উপায়
উপসংহার
আজ আমরা Reflexive Pronoun বা আত্মবাচক সর্বনাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করি, এই আলোচনার পর আপনার কাছে বিষয়টি সহজ হয়ে গেছে। ব্যাকরণ ভয়ের কিছু নয়, একটু মনোযোগ দিলেই সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়।
যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর হ্যাঁ, ব্যাকরণের আরও কোনো বিষয় নিয়ে জানতে চান কিনা, সেটাও জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ!