আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? প্রবাসে থাকা আপনজনদের পাঠানো টাকা দেশে এলে কেমন লাগে, তাই না? এই যে টাকাটা আসে, এর একটা সুন্দর নাম আছে – রেমিট্যান্স। আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা রেমিট্যান্স নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। রেমিট্যান্স আসলে কী, কেন এটা এত গুরুত্বপূর্ণ, আর আমাদের অর্থনীতিতেই বা এর কেমন প্রভাব, সবকিছু সহজভাবে বুঝিয়ে দেব। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
রেমিট্যান্স: দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, আপনার পরিবারের অবলম্বন
বর্তমানে, “রেমিট্যান্স” শব্দটি প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু রেমিট্যান্স আসলে কী? খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে, যখন কোনো ব্যক্তি অন্য দেশে গিয়ে কাজ করে এবং সেখান থেকে তার উপার্জিত অর্থ নিজের দেশে তার পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের কাছে পাঠায়, তখন সেই অর্থকে রেমিট্যান্স বলা হয়। এই রেমিট্যান্স আমাদের দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। তাই, রেমিট্যান্স শুধু একটি শব্দ নয়, এটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি।
রেমিট্যান্স কী?
রেমিট্যান্স হলো সেই অর্থ, যা কোনো ব্যক্তি অন্য দেশে চাকরি বা ব্যবসা করে উপার্জন করে এবং তার পরিবারের কাছে দেশে পাঠায়। এই টাকা বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে আমাদের দেশে আসে এবং আমাদের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেমিট্যান্সকে প্রবাসী আয়ও বলা হয়।
রেমিট্যান্সের সংজ্ঞা
অর্থনীতিবিদদের মতে, “রেমিট্যান্স হলো একটি দেশের নাগরিকদের দ্বারা অন্য দেশে অর্জিত আয়, যা তারা তাদের নিজ দেশে প্রেরণ করে।” এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, রেমিট্যান্স কেবল শ্রমিকদের পাঠানো অর্থই নয়, বরং অন্য দেশে বসবাসকারী যেকোনো নাগরিকের পাঠানো অর্থও এর অন্তর্ভুক্ত।
রেমিট্যান্সের প্রকারভেদ
রেমিট্যান্স প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে:
- শ্রমিক রেমিট্যান্স: এটি হলো সেই অর্থ, যা শ্রমিক বা কর্মীরা বিদেশে কাজ করে তাদের পরিবারকে পাঠায়। আমাদের দেশে আসা রেমিট্যান্সের একটা বড় অংশ এই শ্রমিক রেমিট্যান্স।
- বিনিয়োগ রেমিট্যান্স: এটি হলো সেই অর্থ, যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগ করে আয় করে এবং সেই আয়ের কিছু অংশ দেশে পাঠায়।
রেমিট্যান্স কেন গুরুত্বপূর্ণ?
রেমিট্যান্স আমাদের দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: রেমিট্যান্স আমাদের জিডিপি (Gross Domestic Product) বাড়াতে সাহায্য করে। যখন বেশি রেমিট্যান্স আসে, তখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ে, যা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখে।
- দারিদ্র্য বিমোচন: রেমিট্যান্স অনেক পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করে। গ্রামের অনেক পরিবার, যারা হয়তো দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, তারা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে ভালো জীবন যাপন করতে পারে। আপনি জানেন, অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোর সুযোগ পায় এই রেমিট্যান্সের কারণে।
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ: রেমিট্যান্স আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করে। এই রিজার্ভ দিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেমন – খাদ্য, জ্বালানি ইত্যাদি আমদানি করতে পারি। ধরুন, আমাদের রিজার্ভ ভালো থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ভালো থাকে।
- জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: রেমিট্যান্স গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙা রাখে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, তারা ভালো খাবার খেতে পারে, ভালো পোশাক পরতে পারে এবং উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে।
রেমিট্যান্সের ব্যবহারের ক্ষেত্র
রেমিট্যান্সের টাকা সাধারণত নিম্নলিখিত খাতে ব্যবহৃত হয়:
- দৈনন্দিন খরচ: পরিবারের খাবার, পোশাক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য।
- শিক্ষা: সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য।
- স্বাস্থ্যসেবা: অসুস্থ হলে চিকিৎসা এবং ওষুধের খরচ মেটানোর জন্য।
- ঋণ পরিশোধ: বিভিন্ন ধরনের ঋণ, যেমন – কৃষি ঋণ বা ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধ করার জন্য।
- বিনিয়োগ: জমি কেনা, বাড়ি তৈরি করা অথবা ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা অনেক বড়। এটি আমাদের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে।
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) রেমিট্যান্সের অবদান
বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিট্যান্সের অবদান উল্লেখযোগ্য। প্রতি বছর আমাদের জিডিপির একটা বড় অংশ আসে এই রেমিট্যান্স থেকে। যখন প্রবাসী ভাইয়েরা কষ্ট করে টাকা পাঠান, তখন আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেমিট্যান্সের প্রভাব
রেমিট্যান্স আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে। রিজার্ভ বেশি থাকলে আমরা আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সহজে করতে পারি এবং আন্তর্জাতিক দেনা পরিশোধ করতে সুবিধা হয়। এক কথায়, রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
দারিদ্র্য হ্রাস এবং কর্মসংস্থানে রেমিট্যান্সের ভূমিকা
রেমিট্যান্স দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। অনেক পরিবার তাদের ছেলেমেয়েদের ভালো স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পায়, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে ভালো চাকরি পেতে সাহায্য করে। এছাড়াও, রেমিট্যান্সের মাধ্যমে অনেকে ছোট ব্যবসা শুরু করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম
এখন প্রশ্ন হলো, প্রবাসীরা কীভাবে সহজে এবং নিরাপদে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন? বর্তমানে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনেকগুলো বৈধ উপায় আছে।
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর উপায়
- ব্যাংকিং চ্যানেল: ব্যাংক হলো রেমিট্যান্স পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। বিভিন্ন ব্যাংক যেমন – সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ইত্যাদি তাদের শাখা এবং অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধা দিয়ে থাকে।
- মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস): বিকাশ, রকেট, নগদ-এর মতো মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমেও সহজে টাকা পাঠানো যায়। অনেক ব্যাংক এবং এক্সচেঞ্জ হাউজের সাথে এদের চুক্তি থাকে, যার মাধ্যমে দ্রুত টাকা পাঠানো যায়।
- মানি ট্রান্সফার কোম্পানি: ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রামের মতো অনেক আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার কোম্পানি আছে, যারা দ্রুত এবং নিরাপদে টাকা পাঠানোর সুবিধা দেয়।
রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা
রেমিট্যান্স পাঠানোর সময় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত:
- অবৈধ পথে টাকা পাঠানো থেকে বিরত থাকুন। হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ উপায়ে টাকা পাঠালে আপনি প্রতারিত হতে পারেন এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- সবসময় বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করুন এবং নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার পাঠানো টাকা নিরাপদে আপনার আপনজনের কাছে পৌঁছেছে।
- রেমিট্যান্স পাঠানোর আগে ভালোভাবে যাচাই করে নিন, কোন মাধ্যমে পাঠালে আপনি সবচেয়ে ভালো রেট পাবেন।
রেমিট্যান্স এবং হুন্ডি: পার্থক্য কী?
অনেকেই রেমিট্যান্স এবং হুন্ডিকে এক করে দেখেন, তবে এই দুটির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। রেমিট্যান্স হলো বৈধ পথে টাকা পাঠানো, আর হুন্ডি হলো অবৈধ পথ।
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে সরকার এবং ব্যাংক উভয়েই নজর রাখতে পারে, ফলে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে সরকার কোনো ট্যাক্স পায় না, এবং এই টাকা কোথায় যাচ্ছে তারও কোনো হিসাব থাকে না। তাই, হুন্ডি পরিহার করা উচিত।
নিচের টেবিলে রেমিট্যান্স এবং হুন্ডির মধ্যেকার পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:
বৈশিষ্ট্য | রেমিট্যান্স | হুন্ডি |
---|---|---|
উপায় | বৈধ | অবৈধ |
সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি | স্বীকৃত | অস্বীকৃত |
অর্থনীতির প্রভাব | ইতিবাচক | নেতিবাচক |
নিরাপত্তা | নিরাপদ | ঝুঁকিপূর্ণ |
লেনদেনের নথি | থাকে | থাকে না |
শুল্ক | প্রযোজ্য | প্রযোজ্য নয় |
রেমিট্যান্সের উপর সরকারের প্রণোদনা
সরকার বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো রেমিট্যান্সের উপর প্রণোদনা বা ইনসেনটিভ। বর্তমানে, সরকার রেমিট্যান্সের উপর ২.৫% প্রণোদনা দিচ্ছে।
প্রণোদনা পাওয়ার নিয়ম
প্রণোদনা পেতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। প্রথমত, আপনাকে অবশ্যই বৈধ পথে টাকা পাঠাতে হবে। দ্বিতীয়ত, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকতে হবে।
প্রণোদনার সুবিধা
এই প্রণোদনার ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হন, যা দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে। আপনি যদি একজন প্রবাসী হন, তাহলে এই প্রণোদনার সুবিধা নিতে ভুলবেন না।
রেমিট্যান্স নিয়ে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)
রেমিট্যান্স নিয়ে আপনাদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
-
রেমিট্যান্স কাকে বলে?
উত্তর: যখন কোনো ব্যক্তি বিদেশে কাজ করে তার উপার্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠায়, তখন সেই অর্থকে রেমিট্যান্স বলে।
-
রেমিট্যান্স কি শুধু শ্রমিকদের পাঠানো টাকা?
উত্তর: না, রেমিট্যান্স শুধু শ্রমিকদের পাঠানো টাকা নয়। অন্য দেশে বসবাসকারী যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি তাদের আয়ের কিছু অংশ দেশে পাঠায়, তবে সেটিও রেমিট্যান্স হিসেবে গণ্য হবে।
-
রেমিট্যান্স পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কী?
উত্তর: ব্যাংকিং চ্যানেল এবং মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) হলো রেমিট্যান্স পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।
-
রেমিট্যান্সের উপর সরকার কী কী সুবিধা দেয়?
উত্তর: সরকার রেমিট্যান্সের উপর ২.৫% প্রণোদনা দেয়, যা বৈধ পথে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করে।
-
হুন্ডি কী? এটা কেন পরিহার করা উচিত?
উত্তর: হুন্ডি হলো অবৈধ পথে টাকা পাঠানো। এটা পরিহার করা উচিত, কারণ এটি দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এতে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
-
রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতিতে কিভাবে সাহায্য করে?
উত্তর: রেমিট্যান্স আমাদের জিডিপি বাড়াতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে এবং দারিদ্র্য বিমোচন করতে সাহায্য করে।
-
আমি কিভাবে রেমিট্যান্সের প্রণোদনা পেতে পারি?
উত্তর: বৈধ পথে টাকা পাঠিয়ে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আপনি রেমিট্যান্সের প্রণোদনা পেতে পারেন।
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা
যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিদেশে উপার্জন করছেন এবং দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন, তারা আমাদের অর্থনীতির আসল নায়ক। তাদের কষ্ট এবং ত্যাগ আমাদের দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আপনার পাঠানো প্রতিটি টাকা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
রেমিট্যান্স বাড়াতে আমাদের করণীয়
- বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের উৎসাহিত করা।
- সরকারের উচিত রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও সহজ করা, যাতে প্রবাসীরা সহজে টাকা পাঠাতে পারেন।
- রেমিট্যান্সের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, যাতে এই টাকা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগে।
উপসংহার
রেমিট্যান্স আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধু টাকা নয়, এটা আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনদের ভালোবাসা এবং পরিশ্রমের ফসল। আসুন, আমরা সবাই মিলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করি এবং দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করি। আপনার একটি সঠিক পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতিতে আনতে পারে বিশাল পরিবর্তন। আপনার মতামত কমেন্টে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ!