জিনিসটা কেমন হবে ভাবুন তো, আপনি সাইকেলে চড়ে যাচ্ছেন, আর হঠাৎ করে দেখলেন রাস্তাটা ঢালু হয়ে গেছে! আপনার গতি কিন্তু আপনা-আপনি বেড়ে যাবে, তাই না? অথবা ধরুন, ক্রিকেট ম্যাচে বোলার যখন বল ছোড়ে, তখন বলের স্পিড কিন্তু ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এই যে গতির পরিবর্তন, এটাই হল ত্বরণ।
কিন্তু শুধু গতি বাড়লেই কি ত্বরণ হয়? নাকি কমারও কোনো বিষয় আছে? চলুন, ত্বরণের গভীরে ডুব দিয়ে এর সবকিছু জেনে আসি!
ত্বরণ (Acceleration) কী?
সহজ ভাষায়, সময়ের সাথে কোনো বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হারকেই ত্বরণ বলে। বেগ মানে কিন্তু শুধু গতি নয়, গতির সাথে দিকটাও জড়িত। তাই বেগের পরিবর্তন বলতে গতির পরিবর্তনও বোঝায়, আবার দিকের পরিবর্তনও বোঝায়, অথবা দুটোই একসাথে হওয়াও বোঝায়।
তাহলে, mathematically আমরা বলতে পারি:
ত্বরণ = (শেষ বেগ – আদি বেগ) / সময়
অর্থাৎ, a = (v – u) / t
এখানে,
- a = ত্বরণ (acceleration)
- v = শেষ বেগ (final velocity)
- u = আদি বেগ (initial velocity)
- t = সময় (time)
বোঝার সুবিধার জন্য একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন, একটা গাড়ি স্থির অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করে ৫ সেকেন্ডে ২০ মিটার/সেকেন্ড বেগ পেল। তাহলে গাড়িটির ত্বরণ হবে:
a = (20 m/s – 0 m/s) / 5 s = 4 m/s²
এর মানে হলো, প্রতি সেকেন্ডে গাড়িটির বেগ ৪ মিটার/সেকেন্ড করে বাড়ছে।
ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি
মনে রাখবেন, ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি। এর মানে হলো, ত্বরণের মান এবং দিক দুটোই আছে। যদি ত্বরণ এবং বেগের দিক একই দিকে হয়, তাহলে বস্তুটির গতি বাড়বে। আর যদি ত্বরণ এবং বেগের দিক বিপরীত দিকে হয়, তাহলে বস্তুটির গতি কমবে, যাকে আমরা সাধারণত মন্দন (deceleration) বলি।
ত্বরণের প্রকারভেদ (Types of Acceleration)
ত্বরণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এদের মধ্যে কিছু প্রধান ভাগ নিচে আলোচনা করা হলো:
- সুসম ত্বরণ (Uniform Acceleration): যদি কোনো বস্তুর বেগ সমান হারে বাড়তে থাকে, তাহলে সেই ত্বরণকে সুসম ত্বরণ বলে। যেমন, মুক্তভাবে পড়ন্ত বস্তুর ত্বরণ। এক্ষেত্রে অভিকর্ষজ ত্বরণ কাজ করে এবং প্রতি সেকেন্ডে বেগ একই হারে বাড়তে থাকে।
- অসুসম ত্বরণ (Non-uniform Acceleration): যদি কোনো বস্তুর বেগ অসমান হারে বাড়তে বা কমতে থাকে, তাহলে সেই ত্বরণকে অসম ত্বরণ বলে। শহরের রাস্তায় গাড়ির গতি প্রায়শই অসম ত্বরণের উদাহরণ। কারণ, রাস্তায় সবসময় একই গতিতে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না।
- তাৎক্ষণিক ত্বরণ (Instantaneous Acceleration): কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে কোনো বস্তুর যে ত্বরণ থাকে, তাকে তাৎক্ষণিক ত্বরণ বলে। এটা বের করতে হলে সময়ের ব্যবধান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি ধরতে হয়। ক্যালকুলাসের ভাষায়, a = dv/dt । ধরুন, আপনি একটি বাঁকানো পথে গাড়ি চালাচ্ছেন। মুহূর্তের মধ্যে আপনার গাড়ির গতি এবং দিক দুটোই পরিবর্তিত হতে পারে। সেই মুহূর্তের ত্বরণই হলো তাৎক্ষণিক ত্বরণ।
- গড় ত্বরণ (Average Acceleration): কোনো নির্দিষ্ট সময়কালের মধ্যে বেগের গড় পরিবর্তনের হারকে গড় ত্বরণ বলে। এটা হলো মোট বেগ পরিবর্তনকে মোট সময় দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়।
সূত্রের সাহায্যে ত্বরণের প্রকারভেদ
নিচের টেবিলটিতে বিভিন্ন প্রকার ত্বরণ এবং তাদের সূত্রগুলো একনজরে দেওয়া হলো:
ত্বরণের প্রকার | সংজ্ঞা | সূত্র |
---|---|---|
সুষম ত্বরণ | সময়ের সাথে বেগের পরিবর্তনের হার ধ্রুবক থাকলে। | a = (v – u) / t |
অসম ত্বরণ | সময়ের সাথে বেগের পরিবর্তনের হার ধ্রুবক না থাকলে। | এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ত্বরণ বিবেচনা করা হয়। |
তাৎক্ষণিক | কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বেগের পরিবর্তনের হার। | a = dv/dt (এখানে dv হলো অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে বেগের পরিবর্তন) |
গড় | একটি নির্দিষ্ট সময় বিরতিতে বেগের গড় পরিবর্তনের হার। | a(avg) = (Δv) / (Δt) (এখানে Δv হলো বেগের পরিবর্তন এবং Δt হলো সময়ের পরিবর্তন) |
ত্বরণের একক (Units of Acceleration)
ত্বরণের একক হলো মিটার প্রতি সেকেন্ড স্কয়ার (m/s²)। কারণ, ত্বরণ হলো বেগ পরিবর্তনের হার, আর বেগের একক হলো মিটার প্রতি সেকেন্ড (m/s)।
এছাড়াও, অন্য এককগুলোও ব্যবহার করা হয়, যেমন:
- সেন্টিমিটার প্রতি সেকেন্ড স্কয়ার (cm/s²)
- কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্কয়ার (km/h²)
দৈনন্দিন জীবনে ত্বরণের উদাহরণ (Examples of Acceleration in Daily Life)
আমাদের চারপাশে হরহামেশাই ত্বরণ ঘটছে। কিছু সাধারণ উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
- লিফটে ওঠা বা নামা: যখন একটি লিফট ওপরের দিকে ওঠে বা নিচের দিকে নামে, তখন এর বেগ পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তনের কারণে লিফটের মধ্যে থাকা ব্যক্তি ত্বরণ অনুভব করে।
- গাড়ির গতি কমানো বা বাড়ানো: যখন আপনি গাড়িতে ব্রেক করেন, তখন গাড়ির গতি কমে যায়, অর্থাৎ মন্দন হয়। আবার যখন এক্সিলারেটর চাপেন, তখন গাড়ির গতি বাড়ে, অর্থাৎ ত্বরণ হয়।
- দোলনায় দোল খাওয়া: দোলনায় যখন আপনি দোল খান, তখন আপনার গতি ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়। একবার গতি বাড়ে, আবার কমে। ফলে আপনি ত্বরণ অনুভব করেন।
- ভূমিকম্প: ভূকম্পন বা ভূমিকম্পের সময়, পৃথিবীর পৃষ্ঠের কম্পন একটি ত্বরণ তৈরি করে, যা আমরা অনুভব করি।
ত্বরণ এবং মন্দন (Acceleration and Deceleration)
ত্বরণ এবং মন্দন – এই দুটো বিষয় একই সূত্রে গাঁথা। ত্বরণ মানে হলো বেগ বৃদ্ধি, আর মন্দন মানে হলো বেগ হ্রাস। কিন্তু দুটোই ত্বরণের প্রকারভেদ। যখন আমরা বলি কোনো গাড়ির ত্বরণ ৫ m/s², তার মানে প্রতি সেকেন্ডে গাড়িটির বেগ ৫ মিটার/সেকেন্ড করে বাড়ছে। আবার, যখন আমরা বলি কোনো গাড়ির মন্দন ২ m/s², তার মানে প্রতি সেকেন্ডে গাড়িটির বেগ ২ মিটার/সেকেন্ড করে কমছে।
কখন ত্বরণ ধনাত্মক এবং কখন ঋণাত্মক হয়?
- যদি কোনো বস্তুর বেগ সময়ের সাথে বাড়ে, তবে ত্বরণকে ধনাত্মক (positive) ধরা হয়।
- যদি কোনো বস্তুর বেগ সময়ের সাথে কমে, তবে ত্বরণকে ঋণাত্মক (negative) ধরা হয়, এবং একে মন্দনও বলা হয়।
নিচের ছকে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বোঝানো হলো:
বৈশিষ্ট্য | ত্বরণ (Acceleration) | মন্দন (Deceleration) |
---|---|---|
সংজ্ঞা | সময়ের সাথে বেগ বৃদ্ধি | সময়ের সাথে বেগ হ্রাস |
চিহ্ন | সাধারণত ধনাত্মক (+) | সাধারণত ঋণাত্মক (-) |
উদাহরণ | গাড়ির এক্সিলারেটরে চাপ দিলে বেগ বাড়ে। | ব্রেক করলে গাড়ির বেগ কমে যায়। |
অভিকর্ষজ ত্বরণ (Acceleration due to Gravity)
আমরা জানি, কোনো বস্তুকে ওপরের দিকে ছুড়লে তা আবার নিচে পড়ে যায়। এর কারণ হলো পৃথিবীর আকর্ষণ। পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে সব বস্তুকে টানে। এই আকর্ষণের ফলে বস্তুর মধ্যে যে ত্বরণ সৃষ্টি হয়, তাকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে। একে সাধারণত g দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
পৃথিবীর পৃষ্ঠে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান প্রায় 9.8 m/s²। এর মানে হলো, কোনো বস্তুকে মুক্তভাবে ছেড়ে দিলে তার বেগ প্রতি সেকেন্ডে 9.8 মিটার/সেকেন্ড করে বাড়বে।
তবে, অভিকর্ষজ ত্বরণের মান স্থানভেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। মেরু অঞ্চলে এর মান সবচেয়ে বেশি, আর বিষুবরেখায় এর মান সবচেয়ে কম।
অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রভাব
অভিকর্ষজ ত্বরণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলে। এর কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
- বৃষ্টি: বৃষ্টির ফোঁটা যখন আকাশ থেকে নিচে পড়ে, তখন অভিকর্ষজ ত্বরণের কারণে তার বেগ বাড়তে থাকে।
- ফল: গাছ থেকে ফল যখন নিচে পড়ে, তখন অভিকর্ষজ ত্বরণের কারণে তার বেগ বাড়তে থাকে।
- ক্রীড়া: ক্রিকেট বা ফুটবলের মতো খেলাগুলোতে অভিকর্ষজ ত্বরণের ভূমিকা অনেক। খেলোয়াড়রা যখন বল ছোড়েন বা কিক করেন, তখন অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রভাবে বলের গতিপথ পরিবর্তিত হয়।
ত্বরণ বিষয়ক কিছু সাধারণ ভুল ধারণা (Common Misconceptions about Acceleration)
ত্বরণ নিয়ে অনেকের মনে কিছু ভুল ধারণা কাজ করে। নিচে কয়েকটি সাধারণ ভুল ধারণা এবং তার সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
- ভুল ধারণা: ত্বরণ সবসময় গতির দিকেই হয়।
- সঠিক ব্যাখ্যা: ত্বরণ বেগের পরিবর্তনের হার। তাই ত্বরণ গতির দিকে হতেও পারে, আবার বিপরীত দিকেও হতে পারে। যদি ত্বরণ গতির বিপরীত দিকে হয়, তাহলে বস্তুর গতি কমবে (মন্দন)।
- ভুল ধারণা: ত্বরণ সবসময় ধ্রুবক থাকে।
- সঠিক ব্যাখ্যা: ত্বরণ ধ্রুবক হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। সুষম ত্বরণের ক্ষেত্রে ত্বরণ ধ্রুবক থাকে, কিন্তু অসম ত্বরণের ক্ষেত্রে ত্বরণ পরিবর্তিত হতে পারে।
- ভুল ধারণা: বেগ শূন্য হলে ত্বরণও শূন্য হবে।
- সঠিক ব্যাখ্যা: বেগ শূন্য হওয়া মানে এই নয় যে ত্বরণও শূন্য হবে। একটি বস্তুকে ওপরের দিকে ছুড়লে সর্বোচ্চ উচ্চতায় তার বেগ শূন্য হয়, কিন্তু সেই মুহূর্তেও অভিকর্ষজ ত্বরণ কাজ করে।
ত্বরণ পরিমাপের যন্ত্র (Instruments for Measuring Acceleration)
ত্বরণ পরিমাপ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য যন্ত্র হলো:
- এক্সেলেরোমিটার (Accelerometer): এটি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র। এক্সেলেরোমিটার মূলত কোনো বস্তুর ত্বরণ পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি মোবাইল ফোন, গাড়ি এবং অন্যান্য অনেক ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়।
- জাইরোস্কোপ (Gyroscope): জাইরোস্কোপ মূলত কৌণিক বেগ এবং কৌণিক ত্বরণ পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত উড়োজাহাজ এবং নেভিগেশন সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়।
- ইন inertial পরিমাপ ইউনিট (IMU): এটি একটি সমন্বিত ডিভাইস যা এক্সেলেরোমিটার এবং জাইরোস্কোপ উভয়কেই একত্রিত করে। IMU সাধারণত রোবোটিক্স, ড্রোন এবং স্বায়ত্তশাসিত ভেহিকেলগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
এই যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এবং প্রকৌশলীরা বিভিন্ন প্রকার গতিশীল বস্তুর ত্বরণ পরিমাপ করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।
ত্বরণ এবং নিউটনের গতিসূত্র (Acceleration and Newton’s Laws of Motion)
ত্বরণের ধারণা নিউটনের গতিসূত্রের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র ত্বরণের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুসারে, কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল (F) তার ভর (m) এবং ত্বরণের (a) গুণফলের সমান। অর্থাৎ, F = ma। এই সূত্র থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে তার ত্বরণ সৃষ্টি হয়।
নিউটনের প্রথম সূত্র অনুযায়ী, কোনো বস্তুর উপর যদি কোনো বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা না হয়, তাহলে বস্তুটি স্থির থাকলে স্থির থাকবে এবং গতিশীল থাকলে সমবেগে চলতে থাকবে। এর মানে হলো, বল প্রয়োগ না করলে ত্বরণ সৃষ্টি হবে না।
নিউটনের তৃতীয় সূত্র বলছে, প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। যখন একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর সমান এবং বিপরীত দিকে বল প্রয়োগ করে। এই বলের কারণে উভয় বস্তুর ত্বরণ হতে পারে।
কিছু গাণিতিক সমস্যা (Some Mathematical Problems)
ত্বরণের ধারণা ভালোভাবে বোঝার জন্য কিছু গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা যাক:
- একটি গাড়ি স্থির অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করে 10 সেকেন্ডে 25 মিটার/সেকেন্ড বেগ প্রাপ্ত হলো। গাড়িটির ত্বরণ নির্ণয় করো।
- সমাধান:
- আদি বেগ (u) = 0 m/s
- শেষ বেগ (v) = 25 m/s
- সময় (t) = 10 s
- ত্বরণ (a) = (v – u) / t = (25 – 0) / 10 = 2.5 m/s²
- সমাধান:
- একটি বুলেট একটি বন্দুক থেকে 700 m/s বেগে বের হলো। ব্যারেলের দৈর্ঘ্য 0.75 মিটার হলে, ত্বরণ কত?
-
সমাধান:
- আদি বেগ (u) = 0 m/s
- শেষ বেগ (v) = 700 m/s
- দূরত্ব (s) = 0.75 m
আমরা জানি, v² = u² + 2as
সুতরাং, a = (v² – u²) / 2s = (700² – 0²) / (2 * 0.75) = 326666.67 m/s² (প্রায়)
-
- একটি বস্তু 5 m/s বেগে চলছে। ব্রেক করার ফলে 2 সেকেন্ড পরে এর বেগ 3 m/s হলো। ত্বরণ কত?
- সমাধান:
- আদি বেগ (u) = 5 m/s
- শেষ বেগ (v) = 3 m/s
- সময় (t) = 2 s
- ত্বরণ (a) = (v – u) / t = (3 – 5) / 2 = -1 m/s²। এখানে ঋণাত্মক চিহ্নটি নির্দেশ করে যে এটি মন্দন।
- সমাধান:
এ ধরনের আরও অনেক সমস্যা সমাধান করে ত্বরণের ধারণা আরও স্পষ্ট করা যেতে পারে।
তরণ নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (Frequently Asked Questions-FAQs)
ত্বরণ নিয়ে আপনাদের মনে আরও কিছু প্রশ্ন জাগতে পারে। নিচে কয়েকটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:
- প্রশ্ন: অভিকর্ষজ ত্বরণ কি সবসময় একই থাকে?
- উত্তর: না, অভিকর্ষজ ত্বরণের মান স্থানভেদে ভিন্ন হয়। পৃথিবীর কেন্দ্রে এর মান সবচেয়ে কম এবং মেরু অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি।
- প্রশ্ন: ত্বরণ কি ভেক্টর রাশি?
- উত্তর: হ্যাঁ, ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি। এর মান এবং দিক দুটোই আছে।
- প্রশ্ন: সুষম ত্বরণ কাকে বলে?
- উত্তর: যদি কোনো বস্তুর বেগ সমান হারে বাড়তে থাকে, তাহলে সেই ত্বরণকে সুষম ত্বরণ বলে।
- প্রশ্ন: তাৎক্ষণিক ত্বরণ কীভাবে নির্ণয় করা হয়?
- উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে কোনো বস্তুর যে ত্বরণ থাকে, তাকে তাৎক্ষণিক ত্বরণ বলে। এটা বের করতে হলে সময়ের ব্যবধান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি ধরতে হয়। ক্যালকুলাসের ভাষায়, a = dv/dt ।
- প্রশ্ন: ত্বরণের একক কী?
- উত্তর: ত্বরণের একক হলো মিটার প্রতি সেকেন্ড স্কয়ার (m/s²)।
শেষ কথা
ত্বরণ হলো গতির পরিবর্তনের সেই জাদু, যা আমাদের চারপাশে সবসময় ঘটছে। লিফটে ওঠা থেকে শুরু করে ক্রিকেট বলের গতি, সবখানেই ত্বরণের খেলা। আশা করি, এই ব্লগপোস্টটি পড়ার পর ত্বরণ নিয়ে আপনার মনে আর কোনো ধোঁয়াশা নেই। পদার্থবিজ্ঞানকে আরও ভালোভাবে জানতে এবং দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাগুলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে ত্বরণের ধারণা অপরিহার্য।
যদি আপনার মনে এখনও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় কমেন্ট সেকশনে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আর যদি এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না!