দৈনিক পড়ার রুটিন ssc লিখে গুগলে সার্চ করে থাকে সাধারণত নবম দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী বন্ধুরা। তাদের এই প্রয়োজন বোধ অনুভব করে আজকে তাদের জন্য একটা আদর্শ পড়ার রুটিন উপস্থাপন করব।
এই রুটিন শুধু যে এসএসসি পড়া শিক্ষার্থীরা অনুসরণ করলে ভালো ফলাফল লাভ করবে তেমন নয় এটা চাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অনুসরণ করতে পারে। ভালো ফলাফল করার জন্য পরীক্ষায় এই রুটিন অনেক বেশি উপকারী হবে।
আপনি যে ক্লাসে পড়েন না কেন আজকের এই রুটিনটি তৈরি করা হয়েছে আপনার সময়, পরিস্থিতি এবং কাজ কর্মের উপর গুরুত্ব দিয়ে। একটি আদর্শ রুটিন অনুসরণ করতে পারলে আপনি খুব ভালো টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারবেন যা আপনার পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তো চলুন শুরু করা যাক আজকের মূল আর্টিকেলটি দৈনিক পড়ার রুটিন ssc। আজকের এই রুটিনটি যে কোন ক্লাসের যেকোনো বিভাগের শিক্ষার্থীর জন্য উপযোগী একটি রুটিন।
দৈনিক পড়ার রুটিন ssc science
যেকোনো ক্লাসের একটা রুটিন তৈরি করার পূর্বে আপনাকে প্রথমে ২৪ ঘন্টা সময়কে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে নিতে হবে। একজন মানুষ সারাদিন কাজের জন্য ব্যস্ত থাকে না তাকে বিশ্রাম নিতে হয় ও ঘুম নিতে হয়। তাই একজন মানুষের ব্যস্ততার উপর ভিত্তি করে একটা রুটিনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
- সকালবেলা
- দুপুরবেলা
- সন্ধ্যাবেলা ও রাত্রিবেলা
উপরের তিনটি অংশে ভাগ করে আজকের রুটিনটি কার্যকরভাবে তৈরি করা হবে যাতে যে কেউ এটা অনুসরণ করতে পারে এবং খুব সহজে বাস্তবায়ন করতে পারে। তবে যে কেউ চাইলে তার প্রয়োজনে রুটিনটি নিজের চাহিদার উপর ভিত্তি করে সুযোগ ও সময় মোতাবেক নিজের মতো করে তৈরি করতে পারবে।
হুবহু আমাদের মত তৈরি করতে হবে এমন কোন কথা নাই। আমরা শুধু আপনাকে একটা গাইডলাইন দিব যেটা আপনি নিজের প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজ করে নিবেন। আর রুটিনটি এমনভাবে তৈরি করা হবে যাতে সবাই মানতে পারে।
সকাল বেলার পড়ার রুটিন
দিনের প্রথম ভাগ অর্থাৎ ভোরবেলায় আপনাকে ঘুম থেকে উঠতে হবে। আপনি যদি একজন মুসলমান হন অবশ্যই আপনাকে ফজরের সালাত আদায় করে নিতে হবে। খুব ভোররাতে উঠে পড়াশোনা করলে পড়াশোনার জন্য ব্যাপক সময় পাওয়া যায়।
আর এ সময় পড়াশোনায় মনোযোগ সবচেয়ে বেশি বসে যা সারাদিন পড়ার চেয়ে উত্তম। আপনি যদি ভোররাতে উঠে এক ঘন্টা পড়েন যা সারাদিন তিন ঘন্টা পড়ার চেয়ে উত্তম হবে বলে আমি মনে করি।
আপনি যদি নামাজ পড়েন তারপর কিছুটা সময় থাকে তখন আপনি চাইলে একটু হালকা ব্যায়াম করার জন্য হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এজন্য আপনাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় নিতে হবে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে পড়ার টেবিলে বসতে হবে।
এ সময় আপনি মুখস্ত নির্ভর পড়াগুলো পড়তে পারেন যা খুব দ্রুত কম সময়ের মধ্যে মুখস্ত হয়ে যাবে। আপনি সকাল ৮ টা কিংবা ৯ টা পর্যন্ত এভাবে মুখস্থ নির্ভর পড়াগুলো শেষ করতে পারবেন।
এরপর আপনাকে সকালের ব্রেকফাস্ট করতে হবে। তারপর ১০ মিনিট বিরতি নিয়ে একটু হেঁটে তারপর আবার আপনাকে সকালের পড়াগুলো পুনরায় রিভিশন দিতে হবে। এরপর আপনাকে আপনার বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিতে হবে।
আপনার বিদ্যালয় যদি কোন কারণে বন্ধ থাকে তাহলে আপনাকে ধারাবাহিকভাবে দুপুর পর্যন্ত পড়া অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় আপনি চাইলে ইচ্ছামত আপনার পছন্দের যে কোন বিষয়ে পড়তে পারেন। আপনি চাইলে ইংরেজি অথবা বাংলা এ সময় পড়তে পারেন।
তবে একটা জিনিস আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে একটানা দীর্ঘক্ষণ পড়া যাবে না। আপনি চাইলে ৪৫ মিনিট কিংবা এক ঘন্টা পর পর ৫-১০ মিনিটের জন্য বিরতি নিতে পারেন। একটানা বিরতি না দিয়ে পড়লে সে পড়া বেশি কার্যকর হয় না।
এছাড়া আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে পড়ার সময় যেন আশেপাশে মনোযোগ নষ্ট করে এমন কোন ডিভাইস না থাকে। আপনার ব্যবহৃত মোবাইলটি সবসময় দূরে রাখুন পড়ার সময়। এভাবে আপনি সকাল বেলার পড়ার রুটিনটি সাজিয়ে নিতে পারেন।
দুপুর বা বিকাল বেলার পড়ার রুটিন
দিনের মধ্যভাগে আপনি বিদ্যালয় থেকে ফিরে আসবেন এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। এজন্য আপনি আপনার গোসল সম্পন্ন করতে পারেন তারপর নামাজ পড়ে এসে নিজের দুপুরের মধ্যাহ্নের ভোজ সম্পন্ন করবেন। এরপর আপনাকে হালকা ঘুমিয়ে নিতে হবে।
এ সময় আপনার শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত থাকতে পারে কারণ আপনি বিদ্যালয় থেকে হেটে কিংবা রিক্সায় ফিরে এসেছেন। তারপর ঘুম থেকে উঠে আপনি চাইলে বিদ্যালয়ে যে কাজগুলো শিক্ষকরা করতে দিয়েছে সেগুলো করতে পারেন কিংবা আপনি প্র্যাকটিস করতে পারেন। এগুলো না থাকলে আপনি আপনার পছন্দের বিষয়টি নির্বাচন করে পড়া শুরু করতে পারেন।
এরপর যখন আসরের নামাজের আজান দিবে তখন আপনি আসরের নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিবেন। আসরের নামাজ পড়া সম্পূর্ণ হলে আপনি চাইলে মাগরিব নামাজের আগ পর্যন্ত খেলাধুলা কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়া অথবা ঘোরাঘুরি করতে পারেন। এসময় টুকু আপনি সামাজিক কাজকর্ম করে ব্যয় করতে পারেন। তো এই ছিল দুপুর বেলা বা বিকাল বেলা পড়ার রুটিন।
সন্ধ্যা বেলা বা রাতের বেলার পড়ার রুটিন
রাতের বেলা হলো আপনার পড়ার একদম শেষ ভাগ। এ সময়টা মূলত শুরু হবে মাগরিব নামাজ সম্পন্ন করার পর থেকে। এসময় আপনি চাইলে হালকা নাস্তা করতে পারেন। এরপর আপনাকে একটানা এশার নামাজ পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।
এশার নামাজ শেষ হওয়ার পর আপনাকে পুনরায় রাতের খাবার খেয়ে পুনরায় পড়ার টেবিলে মনোনিবেশ করতে হবে। রাতের বেলা আপনি চাইলে কঠিন বিষয়গুলো অধ্যয়ন করতে পারেন। এ সময় আপনি পদার্থবিজ্ঞান কিংবা গণিত অথবা উচ্চতর গণিত এ ধরনের কঠিন বিষয়গুলো প্র্যাকটিস করতে পারেন।
আপনি আপনার যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার পড়া সমাপ্ত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত পড়ার। তবে খুব বেশি রাত করে ঘুমাতে যাওয়া উচিত নয় এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পড়া শেষ হলে আপনি রাতে ঘুমিয়ে যাবেন এবং পরবর্তী দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার প্রস্তুতি নিবেন।
আশা করি আপনি একজন এসএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীর আদর্শ একটা রুটিন সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এই রুটিনটি নমনীয় ইচ্ছা করলে আপনি নিজের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে পারেন। এই রুটিন অনুসরণ করে পড়াশোনা করলে আশা করি অনেক বেশি লাভবান হবেন।
কারণ সাধারণত রুটিনমাফিক পড়াশোনা করলে পড়াশোনার প্রতি তাগিদ একটু বেশি থাকে। এতে সময়ের অপচয় কম হয়। পড়াশুনা কার্যকরীভাবে করা যায়।
উপসংহার
দৈনিক পড়ার রুটিন এসএসসি নিয়ে লেখা আজকের আর্টিকেলটি আশা করি এসএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে। আজকের এই রুটিনটা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যায় যে কোন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা চাইলে নিজের মত সংযোজন বিয়োজন করে সাজিয়ে নিয়ে একটা আদর্শ রুটিন তৈরি করতে পারবে। এই রুটিনটি সকল ধর্মকে বিবেচনা করে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা নিজের মতো কাস্টমাইজ করা যাবে। আশাকরি যারা দৈনিক পড়ার রুটিন ssc খুঁজছিলেন তারা আজকের এই লেখাটি ফলো করে তাদের সময়কে ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ মিম নামের অর্থ কি