আজকের পোস্টে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা শেয়ার করব “ধান“। এই রচনাটি আশা করি তোমাদের পরীক্ষায় কমন আসবে। আমরা এই রচনাটি যত সম্ভব সহজ রাখার চেষ্টা করেছি – তোমাদের পড়তে সুবিধা হবে। চলো শুরু করা যাক।
ধান
ভূমিকা : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে খ্যাত। কৃষিজাত দ্রব্য হিসেবে ধান উল্লেখযোগ্য শস্য। ধান থেকে চাল উৎপন্ন হয়। এ চাল এদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য। তাই বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি জনগণ ধান থেকে উৎপন্ন চালের ওপর নির্ভরশীল।
ধানের উৎপত্তিগত অবস্থান : ধান উষ্ণ দেশের আর্দ্র মাটিতে উৎপন্ন হয়। আর তাই পৃথিবীর অনেক দেশেই ধান উৎপাদন লক্ষ করা ইত্যাদি দেশে ধান উল্লেখযোগ্যভাবে উৎপন্ন হয়ে থাকে। এ দেশগুলো মূলত মৌসুমি জলবায়ুর আওতাধীন । গ্রীষ্মকালে মৌসুমি বায়ুর ইত্যাদি ধান প্রধানত মৌসুমি অঞ্চলের ফসল। তাই এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন, জাপরা এবং কি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এ স্থানগুলোতে ব্যাপকভাবে ধান চাষ। বাংলাদেশের বরিশাল ও পটুয়াখালীর বালাম চারে এবং দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল উৎকৃষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
ধানের প্রকারভেদ : ধানের নানাবিধ প্রকারভেদ রয়েছে। বাংলাদেশে প্রধানত আমন, আউশ ও বোরো ধান চাষ প্রচুর পরিমাণে লক্ষ করা যায়। বর্ষাকালে আমন ধান চাষ হয়। এ ধান শীতকালে কাটা হয়। গরমকালে আউশ ধান চাষ হয়। এ ধান বর্ষাকালে কাটা হয় । আর শীতকালে বোরো ধান চাষ করা হয়। এ ধান গরমকালে কাটা হয় । তবে ইরি ধান সারা বছরই চাষ করা হয় ।
ধানের পরিচয় ও চাষ প্রণালি : ধান গাছ ওষধি জাতীয় উদ্ভিদ। ধান গাছের চারা থেকে অনেক গাছ বের হয়। এর পাতা সবুজ। ডাটার সম্মুখভাগে ধানের শিষ বা ধানের ছড়া বের হয়। ধান পেকে গেলে সোনালি রং ধারণ করে । ধান চাষ করতে গিয়ে কৃষকের প্রথমে জমিতে মই দিয়ে ও সার প্রয়োগ করে তা ধান উৎপন্নের উপযোগী করতে হয়। এর পর ধানের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আবার ছোট জমিতে ধানের বীজতলা করে চারা উৎপন্ন করে তা বড় জমিতে রোপণ করা হয় । এভাবে চারাগুলো কয়েক মাসে বড় হলে ধানের ছড়া বের হতে শুরু হয়। এ ছড়াগুলো পেকে গিয়ে সোনালি রং ধারণ করলে তা গাছশুদ্ধ কেটে আঁটি বেঁধে ঘরে তোলা হয়। এ আঁটিগুলোকে মাড়াই করে ধান বের করা হয়। পরে গরু দিয়েও এ আঁটিগুলো মাড়িয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানকালে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে ধান সংগ্রহের অনেক যন্ত্র তৈরি হয়েছে । ধান থেকে চাল পেতে ধান ভানা হয়। ধান সিদ্ধ করে ভানা হলে সিদ্ধ চাল পাওয়া যায় এবং ধান রোদে শুকিয়ে ভানা হলে আমরা আতপ চাল পেয়ে থাকি ।
ধানের প্রয়োজনীয়তা : ধান থেকে চাল পাওয়া যায়। এ চাল রান্না করেই ভাত হয়। আর এশিয়া মহাদেশের বেশিরভাগ জনগণ এ ভাত খেয়েই জীবনধারণ করে। ফলে জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণে ধানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য । ধান থেকে উৎপন্ন চাল দিয়ে নানাবিধ পিঠা, পায়েস ও ফিরনি রান্না করা হয়। ধানের ছাল বা তুষ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ধানের কুঁড়া হাঁস-মুরগি, গরু- ছাগলের প্রধান খাদ্য। ভাতের মাড়, ধানের খড় গরুর প্রধান খাদ্য। ফলে ধান মানুষ ও প্রাণীর মৌলিক চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে । তাই ধানের প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট পরিমাণে লক্ষ করা যায়।
উপসংহার : ধান থেকে উৎপন্ন চাল বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য। বৃষ্টির পানি ছাড়াও জমি সেচের মাধ্যমে এর চাষ আরও বৃদ্ধি করা যায়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে এর উৎপাদন বাড়বে। দেশ ও জাতির কল্যাণে সরকার ও জনগণের এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ।
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে রচনা যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই রচনা নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।