রচনাঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু

আজকের পোস্টে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা শেয়ার করব “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু“। এই রচনাটি আশা করি তোমাদের পরীক্ষায় কমন আসবে। আমরা এই রচনাটি যত সম্ভব সহজ রাখার চেষ্টা করেছি – তোমাদের পড়তে সুবিধা হবে। চলো শুরু করা যাক।

 জাতির জনক বঙ্গবন্ধু

ভূমিকা: বিশ্বসম্মোহনীদের নামের তালিকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাগ্রে। তিনি সগৌরবে সম্মোহনিতার সমাসীন। তবে হ্যাঁ, সম্মোহনিতা হচ্ছে অত্যাকর্ষণজনিত মোহিনীশক্তি যা যুগে যুগে কোনো না কোনো ব্যক্তিত্বে প্রকাশ পায়। ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের সর্বোচ্চ গুণাবলির সমন্বিত রূপ। আর এসব ব্যক্তিত্বের আঙুলের ইশারায় পৃথিবীর বুকে মহাবিপ্লব সংঘটিত হয়। ফলে গোটা মানবজাতির মুক্তি আসে।

জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ সাবেক ফরিদপুর আর বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতার নাম সায়েরা খাতুন । দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান ।

শিক্ষাজীবন : ১৯২৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন ৭ বছর তখন তাঁকে স্থানীয় গিমাডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। তারপর ৯ বছর বয়সে অর্থাৎ ১৯২৯ সালে তাঁকে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা করেন। কিন্তু ১৯৩৪ সালে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় ৪ বছরকাল তাঁর পড়ালেখা বন্ধ থাকে। অতঃপর ১৯৩৭ সালে আবারও তিনি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। এ স্কুল থেকেই তিনি ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। এ পরীক্ষা পাস করে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেলে বসবাস শুরু করেন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে তিনি ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন ও নেতৃত্বদানকে কেন্দ্র করে বৈরী অবস্থার সৃষ্টি হলে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই তাঁর ছাত্রজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

প্রাক রাজনৈতিক জীবন : বিশ্ব রাজনীতির অবিসংবাদিত কিংবদন্তি তথা বাংলা ও বাঙালি জাতির অমর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগেই গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ দেখে নিজের মনের ভেতর এক প্রকার কষ্ট অনুভব করতেন। ভুখাদের মুখে তাঁর নিজের খাবার তুলে দিয়েছেন এমন ঘটনা একটি দুটি নয়; বরং অনেক। তাছাড়া শীতকালটা এলেই অনেক অসহায় শীতার্তকে তিনি তাঁর নিজের চাদর দান করে দিয়েছেন। অধিকন্তু তখন থেকেই তিনি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন । অন্যায় কিংবা অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোক না কেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতিবাদ করতে বিন্দুপরিমাণ বিচলিত হতেন না। আর রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেই দেশ ও জাতির অঘোষিত বন্ধুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি। তাঁর চোখে-মুখে একটিই স্বপ্ন— বাঙালি জাতির হৃত অধিকার পুনরুদ্ধার করা যা ১৭৫৭ সালে পলাশি প্রান্তরে হারিয়ে যায়। রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও বিশেষ বিশেষ অবদান : ছাত্রাবস্থা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। আর তাঁর রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে বিশেষ বিশেষ অবদান ।

Read More:  রচনাঃ একটি শীতের সকাল

ভাষা আন্দোলন : ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে’ বলে ঘোষণা দিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে ওই ঘোষণার প্রতিবাদ জানান । ২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে ভাষার প্রশ্নে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবক্রমে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গড়ে ওঠে। ১১ মার্চ হরতাল চলাকালে সচিবালয়ের সামনে থেকে তিনি গ্রেফতার হন। তারপর ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি খাজা নাজিমউদ্দিন আবারও ঘোষণা করে ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু’। এ ঘোষণার প্রতিবাদে বন্দি থাকা অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে রাজবন্দি মুক্তি এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি দিবস হিসেবে পালন করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান। ১৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এ দাবিতে জেলখানায় অনশন শুরু করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের করলে ওই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায় । ফলে সালাম, জব্বার, রফিক, বরকত ও সফিউরসহ অনেকেই শহিদ হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জেলে বসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং ১৩ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন। তারপর ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলখানা থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন । মুক্তিসনদ ৬ দফা দাবি : ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোর সম্মেলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি পেশ করেন। একে ম্যাগনাকার্টাও বলা হয়ে থাকে। তবে এ দাবি পেশকে কেন্দ্র করে ওই বছর তিনি মোট ১২ বার গ্রেফতার হন ।

আগরতলা মামলা : ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৩৫ জন সেনা ও সিএসপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করে । তারপর ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

গণঅভ্যুত্থান : ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এ পরিষদ আগরতলা মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে এ আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিলে ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য আসামিকে বিনাশর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

Read More:  ভাবসম্প্রসারণঃ কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর

বাংলাদেশ নামকরণ : ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’।

নির্বাচনি বিজয় : ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলায় জাতীয় পরিষদের ১৬২টি এলাকাভিত্তিক আসনের মধ্যে ১৬০টিতে জয়লাভ করে। তাছাড়া সংরক্ষিত ৭টি মহিলা আসনসহ আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত সর্বমোট আসনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৬৭। আবার প্রাদেশিক পরিষদের সর্বমোট ৩০০টি এলাকাভিত্তিক আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮৮টিতে জয়লাভ করে । তাছাড়া ১০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ আওয়ামী লীগের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়ায় ২৯৮ । ১৯৭১ : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানামুখী তালবাহানার আশ্রয় নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা হিসেবে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। জনতার মহাসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন— “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।” মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি অসহযোগের ডাকও দেন। এ অসহযোগ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। অপরদিকে তালবাহানা ও আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে জেনারেল ইয়াহিয়া ও জুলফিকার আলী ভুট্টো। তারপর ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তথাকথিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর অতর্কিতে এক আগ্রাসী আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ও রাজারবাগ পুলিশ সদর দফতর । এমতাবস্থায় রাত ১২টা ২০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর রাত ১টা ৩০ মিনিটে নিজ বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ, যা অনতিবিলম্বে মুক্তিসংগ্রামে রূপ নেয় । যুদ্ধ চলে সুদীর্ঘ নয় মাস। ত্রিশ লাখ শহিদ ও দুই লাখ ছিয়াত্তর হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি তথা আমাদের জাতির পিতা। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি । অথচ সুদীর্ঘ প্রায় দশ মাস পাকিস্তান জেলে তাঁকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এমনকি, ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের লায়ালপুর সামরিক আদালতে গোপন বিচারে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় । কিন্তু বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপের মুখে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সাহস পায়নি। বরং ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার তাঁকে বিনাশর্তে মুক্তি প্রদানে বাধ্য হয়। সেদিনই তাঁকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন পাঠানো হয়। ৯ জানুয়ারি লন্ডনে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপর লন্ডন থেকে ঢাকা আসার পথে তিনি দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি. ভি. গিরি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান। ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছালে তাঁকে অবিস্মরণীয় এক সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয় । বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে লাখো জনতার মহাসমাবেশ থেকে অশ্রুসিক্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতি গঠনে হাত দেন । নয়নে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ১২ জানুয়ারি তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ।

Read More:  রচনাঃ শ্রমের মর্যাদা

জাতি গঠনে অন্যতম অবদানসমূহ : সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে ১,৬৫,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের চাল- ডালসহ পূর্ণাঙ্গ রেশন ব্যবস্থা চালু করেন। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই-খাতা ও পোশাক প্রদানের ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা দেন। এমনকি ৪৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ, ১১ হাজার নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও ১৫ হাজার নতুন বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন তিনি। তারপর ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন। হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ‘হকার্স মার্কেট’ গড়ে তোলেন। ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ এবং ১০০ বিঘা জমির সিলিং ধার্য করেন। ক্ষতিগ্রস্ত ২৫০টি ব্রিজ-কালভার্ট, বিধ্বস্ত কলকারখানা, রাস্তাঘাট পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করেন। শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাঁর চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অতি অল্প সময়ে জাতির জন্য পরিপূর্ণ একটি উত্তম সংবিধান উপহার দেওয়া ছাড়াও যা কিছু করেন তা ইতিহাসে বিরল। পবিত্র ইসলাম ধর্মের সেবায় তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করেন । কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থাকরণ; মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন ইত্যাদি। যেমন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ সম্প্রসারণ; ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাকরণ; বিশ্ব ইজতেমার জায়গা দান ইত্যাদি।

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড : ১৫ আগস্টের সেই ভয়াল কালরাত। পবিত্র শুক্রবার। রাতের নিস্তব্ধ নীরবতা ভঙ্গ করে মসজিদে মসজিদে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপথগামী সপরিবারে শহিদ হন তিনি । একটি অংশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বাড়িতে এক কুখ্যাত হামলা চালিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়।

উপসংহার : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার স্মৃতির প্রতি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে–

সোনার বাংলা গড়বো পিতা

কথা দিলাম তোমায়;

চেতনা থেকে বিচ্যুত হবো না

গ্রেনেড তথা বোমায় ।

সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে রচনা যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই রচনা নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।

Fahim Raihan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *